বৃষ্টিতে গতকাল মঙ্গলবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারের উমেশ দত্ত রোড ও হোসেনি দালান রোডে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
দেখা যায়, বকশীবাজারের ড. শহীদুল্লাহ কলেজের সামনে থেকে কারা অধিদপ্তরের দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত উমেশ দত্ত রোডে পানি জমে আছে।
কারা অধিদপ্তরের প্রধান ফটকের সামনে কর্তব্যরত একজন কারারক্ষী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলে এই রোডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এই পানি সরতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। আর বেশি বৃষ্টি হলে অধিদপ্তরের ভেতরেও পানি জমে যায়। ফুটপাত দিয়েও পথচারীরা চলাচল করতে পারে না। এ ছাড়া খানাখন্দে ভরা এই সড়কে রিকশা উল্টে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।
২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট উমেশ দত্ত রোড সংস্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কারা অধিদপ্তর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালের বরাবর আবেদন করে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত বছরের ১৯ জুন আবার সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেয় কারা অধিদপ্তর।
তলিয়ে গেছে রাস্তা। এই চিত্র উমেশ দত্ত রোডের
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উত্তর-পূর্ব পাশে নাজিমুদ্দিন রোডের সঙ্গে হোসেনি দালান রোডের পৃথক দুটি লেন আছে। এর মধ্যে হোসেনি দালান দ্বিতীয় লেনে জলাবদ্ধতা বেশি হয়। গতকাল দেখা যায়, এই রোডের বকশীবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সড়কের দুপাশের বাসাবাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ভেতর পানি ঢোকার উপক্রম হয়েছে। একইভাবে হোসেনি দালান প্রথম লেনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কের চারটি বাড়ির ভেতর পানি ঢুকে গেছে।
হোসেনি দালান রোডের বাসিন্দা শামিম আহমেদের অভিযোগ, এক যুগের বেশি সময় ধরে হোসেনি দালান এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলে নাজিমুদ্দিন রোডেও পানি জমে। এই পানি সরতে চার থেকে পাঁচ দিনও সময় লাগে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই উমেশ দত্ত রোড ও হোসেনি দালান রোডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর বেশি বৃষ্টি হলে এই দুটি সড়কে হাঁটুপানি জমে। কিন্তু এই জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসির উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
উমেশ দত্ত রোড, হোসেনি দালান রোড ও নাজিমুদ্দিন রোডের জলাবদ্ধতার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন প্রথম আলোকে বলেন, এই তিনটি রোডের জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে দরপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। কার্যাদেশ প্রায় চূড়ান্ত। শিগগিরই নালা নির্মাণের কাজ শুরু হবে। পরে সড়কগুলো সংস্কার করা হবে। তিনি বলেন, এবার বৃষ্টি বেশি হওয়ায় নগরবাসীকে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নগরের যানজটের বিষয়ে ডিএসসিসির মেয়র বলেন, বৃষ্টি হলে বাসচালক, যাত্রী ও পথচারীরা তাড়াহুড়ো শুরু করেন। ট্রাফিক পুলিশও বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নেন। এতে সড়কে যানজট লেগে যায়। পরে এই যানজট কমাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে।