ঘুরছে ২০টি ‘আরডিএক্স’ স্যাটেলাইট, মহাকাশেও যুদ্ধের আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের
সীমান্তের এপারে-ওপারে লড়াই সেই আদি অনন্তকাল থেকেই আমরা দেখে আসছি। বহু দশক আগেই সেই লড়াই পৌঁছেছে আকাশেও। তবে এবার আর শুধু মাটি বা আকাশে নয়, ‘যুদ্ধ’ বাধতে চলেছে মহাকাশেও। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা বিজ্ঞানীদের সেই আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মাটিতে যেরকম দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলা-গুলির লড়াই হয়, মহাকাশে বিষয়টি সেরকম নয়। মহাকাশে বহু ‘ঘাতক’ উপগ্রহ ঘুরে বেড়াচ্ছে চুপিসারে। সেগুলি সাধারণত ‘নিষ্ক্রিয়’ উপগ্রহ বলেই পরিচিত বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা নিরাপত্তা সংস্থার কাছে। কিন্তু সেই সমস্ত উপগ্রহগুলি মাঝে-মধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠছে। দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর কোনও জায়গা থেকে সেই উপগ্রহগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। অথচ, সেগুলি আচমকাই নির্দিষ্ট কোনও কক্ষপথে ঢুকে পড়ছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই উপগ্রহগুলির সঙ্গে যদি কোনওভাবে কোনও দেশের সক্রিয় উপগ্রহের ধাক্কা লাগে তাহলে দু’টি উপগ্রহই সম্পূর্ণ ভেঙে যাবে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের কী সম্পর্ক? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, একটা দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের যখন যুদ্ধ বাধে, তখন সেই যুদ্ধে মহাকাশে পাঠানো কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বা সেনাবাহিনীর স্যাটেলাইটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ‘ঘাতক’ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রেরক দেশের প্রধান লক্ষ্যই থাকে যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের উপগ্রহকে আগে থেকেই ধ্বংস করা।
সম্প্রতি একটি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার গোপন রিপোর্টে বলা হয়েছে, মহাকাশে বিভিন্ন দেশের এরকম ২০টি ‘ঘাতক’ উপগ্রহ রয়েছে। যেগুলি যে কোনও সময় যে কোনও দেশের, সক্রিয় ‘উপগ্রহ’র উপর আক্রমণ করতেই পারে। ওই গোপন রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই ‘ঘাতক’ উপগ্রহগুলিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে যখন মহাকাশে পাঠানো হবে, তখন থেকেই এগুলিকে দেখে ‘নিষ্ক্রিয়’ উপগ্রহ বলে মনে করবে বিভিন্ন দেশ। মহাকাশে বহু নিষ্ক্রিয় উপগ্রহ ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেহেতু প্রত্যেকটি সক্রিয় এবং নিষ্ক্রিয় উপগ্রহ মহাকাশে সম্পূর্ণ নিজস্ব কক্ষপথে ঘুরছে, তাই সেগুলির মধ্যে সংঘর্ষের বিশেষ কোনও আশঙ্কা দেখেন না বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সাম্প্রতিকালে (২০১২-১৫) মহাকাশে বেশ কয়েকটি দেশের উপগ্রহের পাশ দিয়ে এরকম কয়েকটি ‘ঘাতক’ উপগ্রহ আচমকাই উড়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, এগুলি আসলে বিস্ফোরক সমৃদ্ধ এক একটি উপগ্রহ। এগুলি যে কোনও সময় বড় বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে পাশে থাকা কোনও দেশের সক্রিয় উপগ্রহটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ‘ঘাতক’ উপগ্রহগুলিকে (যেগুলি নিষ্ক্রিয় থেকে আচমকাই সষ্ক্রিয় হয়ে উঠেছে) এখন কাজ করানোর জন্য পৃথিবী থেকে কোনও কমান্ড পাঠানো হচ্ছে না। ফলে এই উপগ্রহগুলি কোন দেশ থেকে পাঠানো হয়েছে ও এখন কোথা থেকে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।