গ্রীষ্মকালে শীতল হওয়ার ৬টি উপায়
শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে আনুন
ব্যায়াম আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপুর্ন । কিন্তু গ্রীষ্মে এই ব্যায়াম বেশি করলে আমাদের জন্য কষ্টের কারন হতে পারে। এই কারনে গ্রীষ্মের সময় বেশি ব্যায়াম মোটেই ভাল না। এতে শরীর থেকে প্রচুর এন্যারজি বের হয়ে যাই। ফলে দেহে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এতে শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাব থাকে। এই জন্য গ্রীষ্মের দিনে একটু কম ব্যায়াম করতে হবে , সাথে প্রচুর পানি পান করাতে হবে । তাহলেই গ্রীষ্মে ভাল থাকা যাবে। সকালে বায়ু খুলতে পদব্রজে ভ্রমণ করতে পারেন । এতে পেট হালকা হয়।
মিনারেল ওয়াটার পান করুন
অত্যধিক গরমে আমাদের শরীর থেকে ঘাম দিয়ে পানি বের হয়ে যায়, সুতরাং গরমের দিনে আমাদেরকে অতিরিক্ত পানি পান করতে পারেন। এরফলে কোষ সজীব থাকবে, শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা যাবে। সাথে সাথে বিভিন্ন ফলের জুস পান করলেও গরমে দেহের প্রশান্তি মেলে। এই দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
তরল খাদ্যসমূহ গ্রহণ করুন
গরমের দিনে ভারী খাদ্য না খাওয়াই উওম। যেমন- মাংস, ডিম এবং ফ্যাটি বিভিন্ন খাদ্য। এই খাদ্য গুলো গরমে দিনে খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেইকারনে এই ধরনের খাবার না খাওয়া ঠিক। মনকে শীতল করার জন্য তরল খাবার খাওয়া ভাল। ডাব এবং তরমুজ পানি জাতি ফল, যা দেহের জন্য খুবই উপকার। সাথে হালকা খাবার খেতে হবে। এতে গরম কম অনুভব হবে। হালকা খাবারের মধ্য আছে শাক–সবজি, ছোট মাছ, পাতলা ডাল ইত্যাদি।
হালকা রং এর পোষাক পরুন
গরমের দিনে সকলের উচিত হালকা রং এর পোষাক পরিধান করা। কালো রংএর পোশাক একেবারে এড়িয়ে চলা উচিত, কারন উজ্জ্বল রং এর পোশাক রোদে তাপ শোষণ করে নেয় , ফলে গরম অনু্ভব বেশি লাগে। সেই ক্ষেত্রে সাদা রঙের পোশাক গরমের দিনে বেষ্ট। কারন হালকা রং এর পোশাক পরলে তাপ বিকরণ করে ফেলে, এতে গরম লাগে কম । আরও মনে রাখতে হবে আপনাকে অবশ্যই সিন্থেটিক পোষাক এড়িয়ে চলতে হবে। কটন এবং আলগা কাপড় পরতে চেষ্টা করবেন এতে আপনি আরাম অনুভব করতে পারবেন।
সুগন্ধি ব্যবহার করনে সতর্ক
যখন প্রচণ্ড রোদ থাকে, তখন কোন সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। সুগন্ধি আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই এই সময়ে আপনাকে হালকা সুগন্ধি ব্যবহার করা আবশ্যক। আমাদেরকে গরমে সুগন্ধি ব্যবহার করনে সতর্ক থাকাটা গুরুত্বপুর্ন। গরমে যদি করোর দেহে ঘামে তাহলে তার দেহে প্রচুর গন্ধ বের হয়, এই জন্য গা আগে ভাল করে ভিজা কাপড় দিয়ে মুছে হালকা বডি স্পেরে দিতে হবে বা গোসলের পরে দেওয়া ভাল। এতে করে বডি সারাদিন দুর্গন্ধমুক্ত থাকবে।
ধূমপান এড়িয়ে চলুন
ধূমপান সম্পর্কে চিন্তা করারও ঠিক নয়, যখন আবহাওয়া গরম থাকে। বিশেষ করে এই সময় ধূমপানের অভ্যাস এড়িয়ে চলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ধূমপান আমাদের দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে আরও বেশি গরম অনুভব হয়। আর ধূমপান করার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। আমরা সবাই জানি ধূমপান দেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তারপরও আমরা ধূমপান করি। এটা একদম ঠিক নয়।
ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজ বন্ধ রাখুন
লাইট, টিভি, কম্পিউটার সহ যাবতীয় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজ বন্ধ রাখুন (ফ্যান ছাড়া)। কারণ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজ থেকে যে তাপ বিকিরন হয় তা পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে দেয়। ফলে গরম অনুভূতি অনেক বেড়ে যায়।
দেহকে ঠাণ্ডা রাখুন
সবচেয়ে ভালো হয় যদি ঠাণ্ডা বাথটাবে চুপচাপ শুয়ে থাকেন এবং মাঝে মাঝে সেখানে ছুড়তে থাকেন হাত-পা। তা সম্ভব না হলে দিনে দু’তিনবার গোসল করুন। শরীরে তেলজাতীয় কিছু মাখবেন না। সময় একটু বেশি নিয়ে গোসল করুন।
গরমে ডাক্তারি পরামর্শ নিন
বাচ্চা ও বয়স্কদের এই সময় অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাই বাড়ির বাচ্চাদের ও বয়স্কদের নিয়মিত ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে ভুলবেন না। সাথে আপনার বাড়ির পোষ্যটিরও বাড়তি খেয়াল রাখুন ।
সূর্যের আলো কম লাগাবেন
যতক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকবেন তখন খেয়াল রাখবেন যাতে সরাসরি সূর্যালোকে না থেকে বেশি সময় ছায়ার তলায় থাকা যায়।
ত্বকের যত্ন নিন
ত্বকে মেখে চলুন সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন। রোদে বাইরে বেরোলেই সানগ্লাস পরে নেবেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন সানগ্লাসটি যেন চোখের সাথে চমত্কার ফিটিং হয়। বেছে নিন ধূসর অথবা সবুজ রঙের কাচ। বাদামি রঙের কাচ হলে ভালো হয়। এই কাচগুলো সূর্যালোক প্রতিহত করবে।
মেঝের শীতল গ্রহন করুন
ফোমের বিছানা কিংবা জাজিম, তোশক গুটিয়ে রাখুন। ভালো করে ধুয়ে মুছে সটান করে শুয়ে পড়ুন মেঝের ওপর। আপনার কোমরে কিংবা পিঠে ব্যথা থাকলে তো সোনায় সোহাগা। গরম তাড়ানোর পাশাপাশি ব্যথার চিকিত্সাও হয়ে গেল। মেঝের শীতল অনুভূতি শীতল করে তুলবে আপনার শরীরকে। চমত্কার ঘুম হবে আপনার। মাথার ওপর অবিরাম ছেড়ে রাখুন ফ্যান। দেখবেন গরম কোথায় পালায় এমন ভাববে।