Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সরকারি সফরে নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন।





  প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইট স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে নয়াদিল্লীতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পালাম স্টেশনে অবতরণ করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা।

এর আগে নয়াদিল্লীর উদ্দেশে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করে।

এ সময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ এ এস এম ফিরোজ, তিনবাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক কোরের ডিন এবং বেসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

শনিবার হায়দ্রাবাদ হাউসে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে ভারতের সঙ্গে ৩৩টি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।

বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার সফরের মধ্য দিয়ে বন্ধুপ্রতিম দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার

সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে। অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সমাধানেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভের মধ্য দিয়ে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ হাসিনা এই প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত গেলেন। ২০১৫ সালের জুনে ঢাকা সফরে আসেন নরেন্দ্র মোদি। ওই সময় শেখ হাসিনাকে তিনি আনুষ্ঠানিক ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা থাকলেও নানা কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশ্য অক্টোবরে শেখ হাসিনা ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের গোয়ায় যান। সেখানে নরেদ্র মোদির সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়; তবে সেটি দ্বিপক্ষীয় সফর ছিল না। 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারত সফরে গেলেন পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, বিভিন্ন দপ্তরের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও ছয়জন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ৪০ জনের সরকারি প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া ২৩৯ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হচ্ছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল হক মাহমুদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সংবাদ সম্পাদক আলতামাস কবীর, জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় ও ইত্তেফাকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আশীষ সৈকত।

দিল্লির সূত্র জানায়, শেখ হাসিনাকে সেদেশে স্বাগত জানাতে দিল্লি প্রস্তুত। ভারতের রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি শোভা পাচ্ছে। পাশাপাশি উড়ছে ভারত ও বাংলাদেশের পতাকা। রাষ্ট্রপতির অতিথি ভবনে বিশেষ মর্যাদায় অবস্থানের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি পৃথকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ভারত সফরকালে শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির অতিথি ভবনে থাকবেন।

চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক: নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ৩৩টি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে। জানা যায়, এর বেশিরভাগই সীমান্তহাট স্থাপন, তথ্য ও সম্প্রচার, বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট ও মহাকাশ গবেষণা, ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা, ভারতের দেওয়া তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিট, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত। এ ছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দু'দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন_ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, আন্তঃসংযোগ তথা কানেকটিভিটি, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা, জনযোগাযোগ, গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত সুরক্ষা, নিরাপত্তা সহযোগিতা, মাদক-চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ প্রভৃতি বিষয় গুরুত্ব পাবে।

সূত্র জানায়, বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা বিষয়ক ৪টি চুক্তি এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক থাকছে ১২টি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও বাণিজ্য সহায়তা নিয়ে ১৪টি ও স্যাটেলাইট ব্যবহার নিয়ে রয়েছে আরও তিনটি চুক্তি। তবে শেষ মুহূর্তে এ সংখ্যায় সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে।

সফরসূচি : শেখ হাসিনার বহনকারী বিমানের ফ্লাইটটি দিল্লির পানাম বায়ুসেনা বিমানবন্দরে অবতরণ করবে শুক্রবার দুপুর ১২টায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এরপর শেখ হাসিনা রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে যাবেন। তিনি অতিথি ভবনের ঐতিহ্যবাহী 'দ্বারকা সুইটে' থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা থাকবেন দিল্লির পাঁচতারা হোটেল তাজ মান সিংয়ে।

দিল্লিতে পৌঁছার পরই রাষ্ট্রপতির অতিথি ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সন্ধ্যায় দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে শেখ হাসিনাকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেখানে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। রাতে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম আলীর বাসভবনে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে দেওয়া নৈশভোজে তিনি অংশ নেবেন।

পরের দিন সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও নরেদ্র মোদির উপস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হবে। এরপর রাজঘাটে ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ১১টায় ভারতের হায়দ্রাবাদ হাউসে নরেদ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। সেখানে চুক্তি ও এমওইউ সই শেষে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরল-রাধিকাপুর রুটে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল এবং খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী বাস ও রেল চলাচল এবং ত্রিপুরার পালটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীর হিন্দি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এরপর ব্যাঙ্কোয়েট হলে তার সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। একই দিন বিকেলে 'মানকেশ' ভবনে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৭ ভারতীয় সেনা সদস্যকে বিশেষ সম্মাননা দেবেন শেখ হাসিনা। এ অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদিও উপস্থিত থাকবেন। সন্ধ্যায় মওলানা আজাদ এভিনিউয়ে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ হামিদ আনসারির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী বিমানে করে আজমির শরিফে যাবেন। সেখানে খাজা মঈনউদ্দিন চিশতির (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে ফেরার পর বিকেলে অতিথি ভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পরে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন।

একটি সূত্র জানায়, এদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও শেখ হাসিনার সৌজন্য সাক্ষাৎ হতে পারে।

সফরের শেষ দিন সোমবার সকালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের শীর্ষ শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন। বিকেলে তিনি ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করবেন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post