বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশাবাদী মোদী-হাসিনা দু পক্ষই। তবে নিজের অবস্থানে অনড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলাদেশ জল পাক আন্তরিক ভাবে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করে চুক্তিতে রাজি নন তিনি। সেই জন্য শেখ হাসিনাকে দুটি বিকল্প নদীর প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীর।
এজেন্ডায় থাক বা না থাক শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরে যে তিস্তার প্রসঙ্গ উঠবে তা জানাই ছিল। এবং সে প্রসঙ্গ উঠলও।
তিস্তা নিয়ে যখন বাংলাদেশকে আশ্বাস দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তখন মাত্র কয়েক হাত দূরে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলেরই নজর তাঁর দিকে। কোন খাতে বইবে তিস্তার জল? তিস্তা নিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। মনমোহন সরকারের সময়ও চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত চুক্তি হয়নি। এবার মোদীর পাশাপাশি শেখ হাসিনাও সমস্যা সমাধানে আশাবাদী।
দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়েনে প্রথম থেকেই নিজের অবস্থানে অনড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, সিকিমে একের পর এক বাঁধ দেওয়ায় তিস্তার জলের পরিমাণ প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। শুখা মরশুমে প্রায় জল আসেই না। সেই ভগ্ন স্বাস্থ্যের তিস্তার উপরই নির্ভর করে থাকে উত্তর বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা। এ অবস্থায় রাজ্যকে বঞ্চিত করে জল বণ্টনে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আন্তরিক ভাবে তিনি চান বাংলাদেশেরও জল সমস্যা মিটুক।
শনিবার মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্তে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। সন্ধেয় তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনে আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা। একান্ত আলোচনায় শেখ হাসিনাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পাহাড় থেকে স্বাভাবিক গতিতে জল নামলে চুক্তিতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্য নদী থেকে জল নিতে পারে। ২টি নদীর নামও তিনি শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব করেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আন্তরিকতার গভীরতা বুঝেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও। রাজ্যের মানুষের স্বার্থই যে তাঁর কাছে সবার আগে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই আবেগটা একজন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সম্মানও করেন তিনি । তবে তিনিও নিরুপায়। সামনেই বাংলাদেশে ভোট। তার আগে তিস্তার জল তাঁরও চাই।