পানিতে টইটম্বুর নতুন সাত ‘পৃথিবী’!
পৃথিবীর তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল- এ নিয়ে রোমাঞ্চিত কিংবা গর্ব করার দিন বোধহয় শেষ হয়ে এলো পৃথিবীবাসীর! নতুন সাত ‘পৃথিবী’ নাকি পানিতে টইটম্বুর হয়ে আছে! সেই পানি ঢাকা নেই কোনো পুরু বরফের চাদরে। বায়ুমণ্ডলের যে চাপ কিংবা তাপমাত্রায় পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরের পানি তরল অবস্থায় থাকতে পারে, ঠিক সেই অবস্থা আছে বলেই সদ্য আবিষ্কৃত সাত পৃথিবীর পানিও রয়েছে একেবারে তরল অবস্থায়।
সংবাদমাধ্যমে দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান সাত ‘পৃথিবী’র মূল আবিষ্কর্তা বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী মিশেল গিলন।
২২ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে নাসার সদর দফতরে বসে যে ৫ বিজ্ঞানী সগর্বে ঘোষণা করেন, নতুন সাত ‘পৃথিবী’র আবিষ্কারের খবর, বেলজিয়ামের লিগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান, ভূপদার্থবিদ্যা ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের এফএনআরএস রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মিশেল গিলন তাদের অন্যতম।
বেলজিয়াম থেকে আনন্দবাজারকে দেয়া এক্সক্লুসিভ ই-মেইল সাক্ষাৎকারে মিশেল গিলন লিখেছেন, প্রায় ৪৬০ কোটি বছর আগে যেভাবে জন্ম হয় আমাদের এ বাসযোগ্য গ্রহটির, হয়তো ঠিক সেভাবেই গড়ে ওঠেনি নক্ষত্রমণ্ডল ‘ট্রাপিস্ট-১’-এর সদ্য আবিষ্কৃত সাতটি ভিনগ্রহের। আমরা এখন পর্যন্ত যতটা পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছি, তাতে মনে হয়েছে- ‘ট্রাপিস্ট-১’ নক্ষত্র থেকে অনেক দূরেই (সূর্য থেকে যতটা দূরত্বে রয়েছে বৃহস্পতি, শনি, নেপচুনের মতো গ্রহগুলো) জন্ম হয় এ নতুন সাত ‘পৃথিবী’র। নক্ষত্রমণ্ডলের যে এলাকাটাকে বলে ‘প্রাইমোর্ডিয়াল প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক’। যা ভরা ছিল ঘন গ্যাস আর জমাট বরফে। প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক প্রকৃতপক্ষে ঘন গ্যাসের এমন একটা খুব পুরু চাকতি, যেখান থেকে গ্রহ-উপগ্রহের জন্ম হয়। আমাদের মনে হয়েছে, এ বহু দূরের প্রোটোপ্ল্যানেটারি ডিস্ক থেকে বেরিয়ে এসে পৃথিবীর আকারের সাতটি গ্রহ তাদের নক্ষত্রের (ট্রাপিস্ট-১) খুব কাছে এসে যায়। সেই দূরত্ব, যাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে, ‘গোল্ডিলক্স জোন’ বা ‘হ্যাবিটেবল জোন’। অর্থাৎ নক্ষত্র থেকে কোনো গ্রহ যে দূরত্বে থাকলে সেখানে প্রাণের জন্ম হতে পারে বা প্রাণ সহায়ক পরিবেশ পেতে পারে বিকাশের জন্য।