সীতাকুণ্ড পৌরসভার লামারবাজার পশ্চিম আমিরাবাদ এলাকায় বুধবার দুপুরে সাধন চন্দ্র ধরের মালিকানাধীন সাধন কুঠিরের নীচ তলায় অভিযান চালায় পুলিশ।
সেখান থেকে দুই মাসের এক শিশুসহ জসিম এবং তার স্ত্রী আরজিনাকে আটক করে পুলিশ।
পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সীতাকুন্ডের পৌরসভার চৌধুরী পাড়ার প্রেমতলা এলাকার 'ছায়া নীড়' নামে একটি বাড়িতে অভিযান চালাতে যায় পুলিশ।
পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে ওই বাসায় থাকা জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ছোঁড়া গ্রেনেডে সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক আহত হয়।
পরে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এর পর জঙ্গিদের ভয়ে পিছু হটে পুলিশ। এরপর পুলিশ ওই বাড়িটির চারপাশে ঘিরে রাখে। বারবার হ্যান্ড মাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান জানায়। কিন্তু পুলিশের কথায় সাড়া দেয়নি জঙ্গিরা।
পরে বিপুল পরিমাণ পুলিশ, র্যাব ও সিএমপির সোয়াত টিমকে খবর দেয়া হয়। বাড়তি পুলিশ, সিএমপির সোয়াত টিম এবং র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে ওই বাড়িতে অভিযান চালানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সামনে অগ্রসর হয়। তবে ওই বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ আগে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
জঙ্গি আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত 'ছায়া নীড়' নামে ওই ভবনের মালিক নাছির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি।
পুলিশ জানায়, গত ৫ মার্চ জসিম এবং আরজিনা স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে সীতাকুণ্ডের সাধন কুঠিরে বাসা ভাড়া নেন। বাড়ির মালিক তাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি চাইলে তারা দেয়। বাড়ির মালিকের কাছে পরিচয়পত্রটি আসল কিনা সন্দেহ হলে তিনি একটি কম্পিউটার দোকানে গিয়ে সেটি চেক করান। এতে ভুয়া বলে চিহ্নিত হয়। ভাড়াটিয়াদের আচার-আচরণ সন্দেহ হলে তিনি বুধবার সকালে বিষয়টি সীতাকুণ্ড থানা পুলিশকে বিষয়টি বিস্তারিত অবহিত করেন। এরপর বেলা ৩টার দিকে পুলিশ সাধন কুঠিরে অভিযান চালায়। জসিম ও তার স্ত্রীকে আটক করে। ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় কয়েকটি হ্যান্ড গ্রেনেড। সাধন কুঠিরের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি করে পুলিশের সোয়াত টিম। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পৌরসভার প্রেমতলা এলাকার ছাড়া নীড়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করতে যায়।
জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা যুগান্তরকে বলেন, 'ছাড়া নীড়ের ওই বাড়িতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ আছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।'