পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে
'প্রমাণ ছিল বিশ্বব্যাংকের মনগড়া।
শনিবার নিজের ফেসবুক পেইজে দেওয়া স্ট্যাটাসে সজীব ওয়াজেদ জয় এ কথা বলেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে 'দুর্নীতির ষড়যন্ত্র'-এর অভিযোগ কানাডার আদালতে নাকচ হয়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া এই স্ট্যাটাসে তিনি আরও বলেন, কানাডার কোর্ট পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় প্রকল্পটিতে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি এবং সব অভিযোগ বাতিল করে দিয়েছে। বিচারক বলেছেন 'গাল-গল্প ও গুজব'-এর ওপর ভিত্তি করে সাক্ষ্য তথ্য সাজানো হয়েছে। অন্য কথায় বলতে গেলে, প্রসিকিউশন মামলা সাজিয়েছিল।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'প্রমাণ ছিল বিশ্বব্যাংকের মনগড়া। আমি নিজে এই সাক্ষ্য তথ্যর পুরো উপাখ্যান প্রত্যক্ষ করেছি। এটা পুরোপুরি সাজানো ছিল। কারণ এতে সুনির্দিষ্ট কোনো বিবরণ ছিল না, শুধু একটি অজ্ঞাত সূত্রের কথা বলা হয়েছে যার পরিচয় প্রকাশিত হয়নি, এমনকি কানাডার আদালতেও নয়।'
তিনি বলেন, আসলে, বিশ্বব্যাংক আদালতে লড়েছিল এবং আরও তথ্যপ্রমাণ না দিয়েই সার্বভৌম অনাক্রম্যতা দাবি করে আসছিল। তাই তারা অভিযোগ দায়ের করেছিল ঠিকই, কিন্তু তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিল!
পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযাগ আনার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস 'কলকাঠি নাড়েন' বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদ অধিবেশনেও এই অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও ড. ইউনূস বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, 'বিশ্বব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছিল আমার মায়ের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে, তার সম্মানহানির উদ্দেশ্যে। এরপর তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বিশ্বব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছিল পদ্মা সেতুর ফাণ্ড যেন বাতিল করার মাধ্যমে আমাদের সরকারকে শাস্তি দেওয়া হয়। সে তা করেছিল, কারণ মুহাম্মদ ইউনূস বারবার তাকে বলছিল আমার মায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি নিজে এই উপাখ্যানের সময় বেশ কয়েকবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে হিলারি ক্লিনটনের তরফ থেকে আমাদের সরকারের প্রতি হুমকি পেয়েছি, যেন ইউনূসকে মোকাবেলা না করা হয়। তার কারণে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প বন্ধ করতে চেয়েছে। যা কিনা কোটি কোটি লোকদের উপকারে আসবে এবং আমাদের দক্ষিণ পশ্চিম অংশের মানুষের জীবন বদলে দেবে। ইউনূস ইচ্ছাকৃতভাবে চেষ্টা করেছে বিদেশি শক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ক্ষতি করতে।'
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর সে সময় অনেকেই বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছিলেন। এই সমালোচকদের উদ্দেশ্যে জয় লিখেছেন, এটাও অনেক লজ্জাজনক যে আমাদের সুশীলসমাজের তথাকথিত একটি অংশ সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বব্যাংকের স্বার্থে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এরা কিছু অতি সম্মানিত, যোগ্য এবং কঠোর পরিশ্রমী লোকদের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কাঁদা ছুঁড়েছে। সেই সম্মানিত লোকদের অন্যতম আমার মায়ের উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। বাংলাদেশের বিপক্ষে গিয়ে যারা একটি পক্ষ নিয়েছে, এরা দেশদ্রোহী।
তিনি বলেন, এদের সবার উচিৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার আওয়ামী লীগ সরকার এবং সব সম্মানিত লোক, যাদের তারা আঘাত করেছে- তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের কাছে এদের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ