ঝুপড়ি ঘরে জন্ম হয়েছিল তরুণ টাইগার ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ বাড়ি!
ক্রিকেটে টিকে থাকতে তিনি যে কষ্ট করেছেন তা কারও অজানা নয়। অভাব অনটনে বড় হয়েছেন। তবে স্বপ্নকে নষ্ট হতে দেননি। তিনি তরুণ টাইগার ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ৭ উইকেট নিয়ে নিজের আগমনের বার্তা দেন। আর দ্বিতীয় টেস্টে রেকর্ড গড়ে ১২ উইকেট নিয়ে টেস্টে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম জয় উপহার দেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও লাভ করেন।
দুই টেস্টে ১৯ উইকেট তুলে নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন মিরাজ। পুরস্কার নেয়ার পর নিজেই তার কষ্টের কথা বলেছিলেন।
গত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেই দারুণ পারফর্ম করে জাতীয় দলে আসার আগাম বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন। তবে সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজে দলে খেলার সুযোগ পেয়ে তা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন মিরাজ।
বল ও ব্যাট হাতে সিদ্ধহস্ত মিরাজ। তবে সিরিজে ব্যাটে তেমন কিছু করতে না পারলেও বল হাতে নিজের জাত চিনিয়েছেন।
সিরিজের পর পুরো বিশ্বে নাম ছড়িয়ে পড়েছে এ বিস্ময় বোলারের। হাজারও মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত মিরাজের জন্মস্থান খুলনায়। খালিশপুরের হাউজিংয়ের নর্থ জোনের বি ব্লকের ৭ নম্বর প্লটের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন। এখানে টিনের চালার ঘরে তাদের বসবাস।
মিরাজের বাবা মো. জালাল হোসেন পেশায় গাড়িচালক। মা মিনারা বেগম গৃহিনী। মিরাজের একমাত্র বোন রুমানা আক্তার মিম্মা।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় জন্ম মিরাজের। উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামের বৈরমখার দীঘি পূর্ব পাড়ের একটি ঝুপড়ি ঘরে জন্ম হয়েছিল তার। আর্থিক অনটনের কারণে প্রায় ১৫ বছর আগে পরিবারসহ খুলনায় পাড়ি জমান মিরাজের বাবা।
খুলনার এই বাড়ির আলো বাতাসেই তার বেড়ে ওঠা। বাবা-মা চেয়েছিলেন লেখাপড়া করে অনেক বড় হবেন মিরাজ। কিন্তু লেখাপড়া মন ছিল না মিরাজের। মন থাকতো খেলায়।
প্রতিবেশীরা মিরাজের বাবাকে বুঝাতেন। মিরাজকে খেলায় দিতে। কিন্তু খেলতে গিয়ে যদি হাত-পা ভেঙে যায় তাহলে চিকিৎসা করাবে কীভাবে। খেলার সরঞ্জাম কেনার টাকা কোথায় পাবেন এই ভেবেই খেলতে দিতে চাইতেন না মিরাজের বাবা।
এলাকায় স্থানীয় কোচ অন্যদের নিয়ে মাঠে অনুশীলন করাতেন। সেখানে বল কুড়াতেন মিরাজ। আর বল কুড়ানো সেই ছেলেটিই আজ বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম আতংক।
ক্রিকেটে মিরাজের এমন আবির্ভাবে সবাই ভীড় জমিয়েছেন মিরাজের বাড়িতে। ভক্তরা মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে এসে মিরাজের বাবা-মা-বোনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
No comments: