স্থা ভোটের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী
খাগড়াপ্রসাদ (কেপি) শর্মা অলি
পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের আগেভাগে পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী খাগড়াপ্রসাদ (কেপি) শর্মা অলি। জোটের দুই শরিক দল সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করায় নিজের ভাবমূর্তি রক্ষার কৌশল হিসেবে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন কমিউনিস্ট পার্টির (সংযুক্ত মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) এই নেতা।
নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, আজ (রোববার) সকালেই রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি) ও মাধেসি জনঅধিকার ফোরাম নেপাল (ডেমোক্রেটিক) ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়। বিকেলে নেপালের ৫৯৫ সদস্যের পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে শরিকদের সমর্থন প্রত্যাহারের ফলে প্রধানমন্ত্রী ওলির দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়।
এ বিষয়ে আরপিপির জ্যেষ্ঠ নেতা কিরণ গিরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের দাম্ভিকতার কারণে আমাদের এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না।’
এদিকে, অনাস্থা ভোট নিয়ে পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শর্মা অলি সংসদে বলেন, নয় মাস আগে দেশের সঙ্কটময় একটি সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। গত বছরের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশটি যখন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তখন আবার সরকারের পরিবর্তনকে তিনি ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন।
পার্লামেন্টে দীর্ঘ বক্তৃতায় অলি জানান, তিনি ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা ভান্ডারির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অনাস্থা প্রস্তাব গণতান্ত্রিক হলেও প্রকৃতরূপে চক্রান্তমূলক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
‘ভালো কাজের জন্য শাস্তি পেতে হচ্ছে’ দাবি করে শর্মা অলি বলেন, তিনি দায়িত্ব নেয়ার সময় নেপালের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক ছিল ন্যূনতম মাত্রায়। সেখান থেকে তিনি ভারত ও চীনের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। তার এই প্রচেষ্টা নেপালকে একটি দেশের ওপর নির্ভরতা থেকে মুক্তি দিয়েছে। এই সময়ে সরকার বদলের খেলাটা রহস্যময়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০১৫ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বেশ কয়েকবার সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা খাগড়াপ্রসাদ অলি। কেপি অলি প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। গত ১০ বছরের মধ্যে নেপালের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত অক্টোবরে ক্ষমতায় আসেন অলি। অলি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার থেকে সরে গিয়ে নেপালের সাবেক মাওবাদীরা অনাস্থা ভোটের ডাক দেয়। গত অক্টোবরে এই মাওবাদীদের সমর্থনেই প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছিলেন অলি। কিন্তু ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে জোট থেকে সরে যায় মাওবাদীরা।#
No comments: