Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» »Unlabelled » বাণিজ্যিক সিনেমার ‌হিরো হতে চাই





 বাণিজ্যিক সিনেমার ‌হিরো হতে চাই

বললেন যিশু সেনগুপ্ত। সদ্য মুক্তি পেয়েছে তাঁর ‘‌কেলোর কীর্তি’‌। যেখানে দেবও আছেন তাঁর সঙ্গে। অন্য ধারার ছবি থেকে বাণিজ্যিক ছবি— সব নিয়েই অকপট যিশু।


‌অস্কারজয়ী অভিনেত্রী জেন ফন্ডা একটা কথা বলেছিলেন, সাফল্যের কোনও বয়স হয় না। জীবনের যে কোনও সময়েই সাফল্য আসতে পারে। কথাটা যে কত খাঁটি, তা অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তর কেরিয়ারের দিকে নজর দিলেই বোঝা যায়। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি কাজ করে চলেছেন টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে। প্রথমে ছোটপর্দার ধারাবাহিক ‘‌মহাপ্রভূ’‌, পরে বড়পর্দায় বাণিজ্যিক বাংলা ছবি দিয়েই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। কিন্তু প্রথম দিকে সাফল্য ধরা দেয়নি। তার পর ধীরে ধীরে সরে গেলেন অন্য ধারার ছবিতে। একের পর এক ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি। ‘‌দ্য লাস্ট লিয়র’‌, ‘‌আবহমান’‌, ‘‌নৌকাডুবি’‌, ‘‌চিত্রাঙ্গদা: দ্য ক্রাউনিং উইশ’‌। আর এখন কী ছোটপর্দা কী বড়পর্দা— যিশু সেনগুপ্ত টালিগঞ্জের ব্যস্ততম অভিনেতা। প্রায় ৮ বছর পরে আবার ফিরে এলেন বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতেও। আগে ছিলেন জি বাংলার ‘‌সারেগামাপা’‌-‌এর সঞ্চালক। এই মুহূর্তে তিনি ওই চ্যানেলেরই ‘‌ডান্স বাংলা ডান্স’‌-‌এর বিচারকও বটে। এই সাফল্যকে ঠিক কীভাবে দেখছেন যিশু?‌
• প্রথমে হিন্দি ছবি ‘‌পিকু’‌। তার পর একে একে ‘‌নির্বাক’‌, ‘‌ব্যোমকেশ বক্সী’‌, ‘‌রাজকাহিনী’‌, ‘‌আরশিনগর’‌— গত বছর টালিগঞ্জের অন্যতম সফল অভিনেতার নাম যিশু সেনগুপ্ত। কী ভাবছেন?
•• (‌‌হেসে)‌ সত্যি‌ কথা বলতে কী, গত বছরটা আমার জীবনে বেশ স্মরণীয়। একসঙ্গে এত সাফল্য ধরা দিল এই প্রথম। তবে সেটা নিয়ে আমি তেমন কিছু ভাবছি না। কারণ জীবনের প্রত্যেকটা দিনই আমার কাছে সমান। সেইভাবেই এখন দেখতে চাই জীবনটাকে। সেই দিনগুলোতে কখনও আনন্দ থাকতে পারে, কখনও দুঃখও থাকতে পারে। সাফল্য, ব্যর্থতা সবই সমানভাবে নিতে শিখেছি। আর সেই কারণেই গত বছরের সাফল্যের পরেও আমি মানুষটা কিন্তু একই রয়ে গেছি। তবে এই প্রথম কিছু পরিবর্তনও এসেছে আমার মধ্যে। এখন নিয়মিত জিমে যাচ্ছি, নাচটাকে আরও বেশি আয়ত্তে আনছি— এগুলো আমার জীবনের নতুন দিক।
• জি বাংলার ডান্স বাংলা ডান্স-‌এ তাই কি আপনি বিচারকের ভূমিকায়?‌
•• (‌হেসে)‌ না, তার সঙ্গে আমার নাচের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রথম দিকে বেশ কিছু বাংলা ছবি করেছি, কাগজের ভাষায় বাণিজ্যিক বাংলা ছবি। নাচটা তখন থেকেই আয়ত্তে ছিল, এখন একটু বেশি সড়গড় হয়েছি। একটা সময়ে তো স্ট্যাম্প পড়ে গিয়েছিল— যিশু মানেই অন্য ধারার ছবির অভিনেতা। সেই ইমেজটা এখন ভাঙতে চেষ্টা করছি। চেষ্টা করছি বাণিজ্যিক সিনেমারও ‘‌হিরো’ হয়ে উঠতে। তাই এই জিমে যাওয়া বা নাচ প্র‌্যাকটিস করা। তবে সত্যি কথা বলতে কী, আমি কিন্তু অন্য ধারা বা বাণিজ্যিক ছবির তফাত করি না। আমার কাছে বাংলা ছবির দু‌টো ভাগ— ভাল ছবি আর খারাপ ছবি।‌
• কিন্তু বাংলা পপুলার ছবি করতে গেলে কি ‘‌রিমেক’‌ করতেই হবে?‌
•• রিমেকে সবার কেন আপত্তি তা বুঝতে পারি না। একটা অন্য ভাষার জনপ্রিয় ছবির রাইট কিনে যখন তাকে বাংলার পরিবেশের উপযোগী করে নতুন করে তৈরি করা হয়, তখন তো আর তা রিমেক থাকে না। এই যে ‘‌তিন’‌— সেটাও তো আসলে একটা রিমেক। হ্যাঁ এটা ঠিক, একটা সময়ে অন্য ভাষার কোনও ছবিকে একেবারে শট টু শট নকল করা হয়েছে। তাতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে। কিন্তু এই যে ছবিটা (‌কেলোর কীর্তি)‌, সেটা কিন্তু রাজা (‌‌চন্দ)‌‌ অনেক যত্ন নিয়ে বাংলার পরিবেশের উপযোগী করেই তৈরি করেছে।
• দীর্ঘ সময় পরে আবার বাণিজ্যিক ছবিতে ফিরে এলেন কেন?‌
•• মাঝখানে ৮টা বছর কেটে গেছে। এই ৮ বছরের মধ্যে আমার কয়েকটা বাণিজ্যিক ছবি মুক্তি পেয়েছে, তবে সেগুলোরও শুটিং আরও অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। মুক্তিটা আটকে ছিল। সত্যি কথা বলতে কী, ৮ বছর পরে আমার এই নতুন যাত্রাটা স্রেফ কমেডি‌র লোভে। আমি কমেডি করতে খুব ভালবাসি। কিন্তু আমার প্রায় ১৫ বছরের কেরিয়ারে কমেডির তেমন সুযোগ এল কোথায়!‌ কাঞ্চন মল্লিক, রুদ্রনীল ঘোষ, নীল মুখোপাধ্যায় আর আমি মিলে একটা কমেডি ছবির শুটিং করেছিলাম, কিন্তু সেটাও এখনও মুক্তি পায়নি। কাজেই রাজার (‌চন্দ)‌ প্রস্তাবটা যখন এল, স্ক্রিপ্টটাও ভাল লাগল, ভাবলাম দেখাই যাক না। তবে আবার বলছি, বাণিজ্যিক ছবি বা অন্য ধারার ছবি বলতে আমার কাছে আলাদা কিছু নেই। সবরকম ছবির জন্যই আমি নিজেকে তৈরি রেখেছি। আর এটাও ঠিক, আমি যে সময়ে বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করতাম, তার সঙ্গে এই সময়ের বাণিজ্যিক ছবির অনেক ব্যবধান। সেই পার্থক্য তৈরি হয়েছে ছবির স্ক্রিপ্টে, শুটিংয়ের লোকেশনে, ছবির প্রেজেন্টেশনে।
• দীর্ঘ সময় পরে বাণিজ্যিক ছবি। তাও আবার ছবিতে একাধিক তারকার উপস্থিতি। প্রযোজক বা পরিচালকরা কি এখন এক নায়ক-‌নায়িকায় আস্থা রাখতে পারছেন না?‌ এত তারকার ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না?‌
•• আমি তা বলব না। আমি মনে করি, এখন এই একাধিক অভিনেতাকে নিয়ে একই ছবির একটা ট্রেন্ড এসেছে। কারণ সেটা দর্শক পছন্দ করছেন। গত বছর একাধিক নায়ক-‌নায়িকাকে নিয়ে হিট করেছিল ‘‌জামাই ৪২০’‌। সামনে আসছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘‌জুলফিকার’‌। সেটা তো টালিগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাল্টিস্টারার ছবি। এ ক্ষেত্রে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘‌রাজকাহিনী’‌ ছবির প্রসঙ্গও তোলা যায়। প্রথমে অবশ্য আমি ‘‌রাজকাহিনী’‌র কবিরের চরিত্রটা করতে চাইনি। নিজের ওপরেই সন্দেহ ছিল ঠিকঠাক পারব কিনা। তবে ছবিটা রিলিজ করার পর দর্শকের প্রতিক্রিয়া আমাকে নিজের প্রতি আরও আস্থাশীল করেছে। খুব ছোট্ট রোল, কিন্তু সেটাও আলাদা করে দর্শকের চোখে পড়েছে। কাজেই একাধিক তারকা থাকলেই যে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তা নয়। আসলে অভিনয়ের আগে দেখে নিতে হবে সেই চরিত্র যতই ছোট হোক না কেন, তাতে প্রয়োজনীয় গভীরতা এবং ইমপ্যাক্ট আছে কিনা।
• ‘‌আরশিনগর’‌-‌এর পর দেবের সঙ্গে ‘‌কেলোর কীর্তি’‌। দেবের সঙ্গে অভিনয়ে কি কোনও বাড়তি চাপ অনুভব করেন?‌
•• দেব ভাল কো–‌অ্যাক্টর। ফলে দেবের সঙ্গে অভিনয় করতে বেশ ভাল লাগে। কোনও চাপ নেই।
• আগামী দিনে আর কোন কোন ছবি আসছে আপনার?‌
•• এই তো আগস্টেই মুক্তি পাবে অঞ্জন দত্তর পরিচালনায় ‘‌হেমন্ত’‌। পুজোয় দু‌টো ছবি মুক্তি পাচ্ছে আমার— সৃজিতের পরিচালনায় ‘‌জুলফিকার’‌ আর অঞ্জনদার পরিচালনায় ‘‌ব্যোমকেশ বক্সী’‌, তার পর ডিসেম্বরে আসছে অঞ্জনদারই পরিচালনায় ‘‌বংস্‌ এগেন’‌। আর সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে কমলেশ্বরদার (‌মুখোপাধ্যায়)‌ পরিচালনায় একটা নতুন ছবির কাজ। আমার বিপরীতে আছে পায়েল।
• এই আগামী ‘‌ব্যোমকেশ বক্সী’ তো ‘‌চিড়িয়াখানা’‌ অবলম্বনে। এর আগে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় এই ছবিতে ব্যোমকেশের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার। এর মধ্যেই সমালোচকরা তুলনাটা শুরু করে দিয়েছেন। পরে তা আরও বাড়বে। কী ভাবছেন?‌
•• অনেক দিন আগে ‘‌চিড়িয়াখানা’‌ দেখেছি। তার পর থেকে আর দেখা হয়নি। যেদিন শুনলাম অঞ্জনদা এই গল্পটাকেই বেছে নিয়েছেন, সেদিন থেকেই আরও বেশি করে এড়িয়ে গেছি উত্তমকুমার আর ‘‌চিড়িয়াখানা’‌ ছবিটাকে। অঞ্জনদাও বলেছিলেন আর আমিও চেষ্টা করেছি, যাতে আমার ওপর আগের ছবির বা তার অভিনয়ের কোনও প্রভাব না পড়ে। আমি জানি, এর মধ্যেই তুলনাটা শুরু হয়ে গেছে, দিন দিন তা আরও বাড়বে। তবে একটা কথা জানবেন, সমালোচকদের সমালোচনাই যদি একটা ছবিকে খারাপ‌ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখত, তবে আজ পর্যন্ত কোনও ছবিই হিট হত না। গত বছর যখন আমার প্রথম ‘‌ব্যোমকেশ বক্সী’‌ রিলিজ করল, তখনও আমাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। এমনকি নীলাঞ্জনারও (‌যিশুর স্ত্রী)‌ ভোট আমার দিকে ছিল না। কিন্তু তার পর এই ছবি কলকাতায় টানা ১০০ দিন চলেছিল। আর এই ছবিও কিন্তু এক নায়কের, সে ব্যোমকেশ।
• বড়পর্দার পাশাপাশি সমানে ছোটপর্দাতেও হাজির হচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই আপনাকে দেখতে পাচ্ছেন দর্শক। অনেকে বলেন এই অতিরিক্ত এক্সপোজার বড়পর্দার কেরিয়ারে ক্ষতি করে। কী বলবেন?‌
•• এই প্রসঙ্গে ঋতুদার (‌ঋতুপর্ণ ঘোষ)‌ একটা কথা খুব মনে পড়ছে। তখন ‘‌চিত্রাঙ্গদা:‌ দ্য ক্রাউনিং উইশ’‌-‌এর শুটিং চলছে। তখন আমি যাত্রা করছি ফুলটাইম। যাত্রার রিহার্সালের শেষে শুটিংয়ে যোগ দিতাম। ঋতুদা বাধা দেননি। বরং বলেছিলেন, যদি কোনও পরিচালক সত্যিই মনে করেন তাঁর ছবির চরিত্রটার জন্য ঠিক তোকেই দরকার, তা হলে উনি ঠিক তোকেই ডেকে নেবেন। সে তুই যাত্রা, থিয়েটার, ছোটপর্দা— যা–‌ই কর না কেন। ঋতুদার সেই কথার পর আর এই সব এক্সপোজার-‌টেক্সপোজার নিয়ে মাথা ঘামাই না। সোজা কথা, আমি যদি অভিনেতা হিসেবে ১০০ শতাংশ দিতে পারি, দর্শক আমাকে পছন্দ করবেনই। পরিচালকরাও আমাকে ডাকবেন






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply