মুজিবনগরে সেই অভিযুক্ত ধর্ষক প্রধান শিক্ষক কারাগারে
দুই মাস আত্মগোপনে থাকার পর অবশেষে আদালতে আত্মসর্ম্পণ করেছেন মেহেরপুর মুজিবনগরের সেই অভিযুক্ত ধর্ষক আ¤্রকানন মাধ্যমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম। শনিবার তিনি কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসর্ম্পণ করলে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। নিজ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে কুষ্টিয়ার একটি হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে তার নাম কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন ভুক্তভোগী পরিবার।
শিক্ষিকা ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই আশরাফুল আলম আত্মসর্ম্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর ভারতে আত্মগোপন করেছিলেন শরিফুল। কয়েকদিন আগে দেশে ফিরলেও তিনি গ্রেফতার এড়াতে লুকিয়ে ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিল। শনিবার তিনি কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আত্মসর্ম্পণ করেন। বিজ্ঞ বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ওইদিনই তাকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।
ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি আত্মসর্ম্পণ করায় এখন চুড়ান্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে এসআই আশরাফুল আলম আরো জানান, দ্রুত মামলাটির চুড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। ভুক্তভোগী যাতে ন্যায় বিচার পায় সে অনুযায়ী মামলা তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে শরিফুল ইসলাম আত্মসর্ম্পণ করায় ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। এখন তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। মামলা দায়েরের পর থেকেই শরিফুল ইসলাম ও তার লোকজন বাদি পক্ষকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। কিছুদিন আগেও ভারতে বসে মোবাইলে মামলা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বাদিকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় শরিফুল। এছাড়াও তার ভাই বগা মোল্লা স্বশরীরে গিয়ে বাদিকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। আসামি পক্ষের হুমকিতে দিশেহারা বাদির পরিবার নিরাপত্তা চেয়ে গত মাসের শেষের দিকে মুজিবনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছিলেন বাদির পরিবার।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে কুষ্টিয়াতে নিবন্ধন পরীক্ষা দিতে গিয়ে কুষ্টিয়ার একটি হোটেলে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামের দ্বারা ধর্ষিত হন মুজিবনগর আ¤্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন খ্রীষ্টান ধর্মীয় এক শিক্ষিকা (২৫)। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য ওই খন্ডকালীন স্কুল শিক্ষিকা পরীক্ষা হলে না গিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন বাড়ি ফিরে তিনি তার অভিভাবকদের সমস্ত কথা খুলে বললে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে ধর্ষিতার পিতা কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
No comments: