আম্মার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টানাটানি অনুচিত
বললেন ‘আম্মা’ সুচিত্রা সেনের নাতনি রাইমা সেন। ‘মহানায়ক’ ধারাবাহিকে সুচিত্রা সেন আধারিত সুচরিতা সেনের চরিত্রে অভিনয় করেননি সেই কারণেই। বললেন, আমার আম্মা (সুচিত্রা সেন) ছিলেন ভীষণ প্রাইভেট পার্সন। সেটাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘ক্ষত’, যেখানে প্রসেনজিতের স্ত্রী রাইমা। তার আগে রাইমার মুখোমুখি আজকাল।
সোমনাথ গুপ্ত
• ঋতুপর্ণ ঘোষের তৈরি করা জুটি বা দম্পতি ‘চোখের বালি’র পর আবার ‘ক্ষত’য়। এখানে রাইমার স্বামীর চরিত্রে আবার প্রসেনজিৎ।
•• হ্যাঁ, ঋতুপর্ণ ঘোষই আমাদের স্বামী–স্ত্রী বানিয়েছিলেন। এবং আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে আত্মবিশ্বাসী করেছেন ঋতুদাই। আমাকে তৈরি করেছেন বললেই ঠিক বলা হয়।
• প্রসেনজিৎও বলেন, নায়ক থেকে তাঁকে অভিনেতা করেছেন ঋতুপর্ণ।
•• সত্যি, বুম্বাদা কত অসাধারণ সব চরিত্র করেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবিতে! আজ বুম্বাদা যে অন্যধারার ছবির প্রধান অভিনেতা, সেই যাত্রাটা শুরু করেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষই।
• ‘চোখের বালি’তে রবীন্দ্রনাথের দম্পতি। কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘ক্ষত’য় তো আধুনিক সময়ের দাম্পত্য।
•• হ্যাঁ, একদম আধুনিক সময়ের। বুম্বাদা এখানে আধুনিক লেখক নির্বেদ লাহিড়ী। আমি সৃজিতা, নির্বেদ লাহিড়ীর স্ত্রী। হ্যাঁ, ‘ক্ষত’ খুবই বোল্ড ছবি। এই ছবিতে নির্বেদের সঙ্গে এক বিবাহিত নারীর সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই চরিত্রে অভিনয় করেছে পাওলি (দাম)।
• বলা হচ্ছে, ‘ক্ষত’ নাকি ইরোটিক থ্রিলার। এমন ছবি কি বাংলার দর্শক নেবে?
•• বাংলার দর্শক যথেষ্ট পরিণত বলেই আমি মনে করি। কিন্তু পরিচালকরা এখনও তাদের প্যানপ্যানানি বা হাই মেলোড্রামার ছবি দিয়ে যাচ্ছেন। আমার তো অবাকই লাগে। আজকের সময়, এই সময়ের রিলেশন নিয়ে কেন ছবি হবে না? ‘ক্ষত’ এই সময়ের সম্পর্ক নিয়ে ছবি।
• প্রসেনজিতের সঙ্গে রাইমার কি তথাকথিত ‘বোল্ড’ সিন আছে ‘ক্ষত’য়?
•• (হাসতে হাসতে) একদম নেই। ওই সব ‘বোল্ড’ সিন সবই পাওলির সঙ্গে। আমি এখানে একজন ম্যাচিওরড মহিলা। আমার সন্তানও আছে। তবে ঝগড়া হয়েছে বুম্বাদার সঙ্গে, ‘ম্যাচিওরড’ ঝগড়া।
• কমলেশ্বরের ‘ক্ষত’য় করলেন, কিন্তু কমলেশ্বরের সৃজন–ভাবনায় তৈরি ‘মহানায়ক’ ধারাবাহিকে সুচিত্রা সেনের আদলে তৈরি সুচরিতা সেনের চরিত্রে অভিনয় করলেন না কেন?
•• আমার ‘ডেট’ ছিল না। সময়ের অভাবেই করতে পারিনি।
• এটা কিন্তু ডাহা মিথ্যে কথা।
•• আমি যদি এই চরিত্রটা করতাম, তা হলে দর্শকরা সুচরিতা সেনকে সত্যি সত্যি আমার আম্মা (সুচিত্রা সেন) বলে মেনে নিত। সেটা আমি চাইনি। আমার আম্মা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন ভীষণ প্রাইভেট পার্সন। তাঁকে নিয়ে কিছু করার আগে সবারই সেটা ভাবা উচিত। আম্মার ব্যক্তিগত জীবন কে কতটা জানে? কেন কল্পনার রঙ দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকে টানা হবে? এটা মেনে নেওয়া আমাদের পক্ষে সত্যিই কঠিন।
• পাওলি কেমন করছেন সুচরিতা সেনের ভূমিকায়? অরুণকুমারের ভূমিকায় প্রসেনজিৎকে কেমন লাগছে?
•• আমি একদিনই দেখেছি। আর দেখিনি।
• কেন?
•• (হাসতে হাসতে) সময় পাইনি।
• সুচিত্রা সেনকে নিয়ে একটা ‘বায়োপিক’–এ তো আপনার অভিনয় করার কথা ছিল?
•• হ্যাঁ, সেই ছবিটা হয়নি। কথা ছিল। যদি ঠিক চিত্রনাট্য হয়, পরিচালক ভাল হন, আমি নিশ্চয়ই করব। সেটা বড়পর্দাতেই। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে রঙ চড়ানো যাবে না, এটাই আমার শর্ত।
• সুচিত্রা সেনের চরিত্রে অভিনয় করলে লোকে তো তুলনা করবে, কচুকাটাও করতে পারে।
•• সেটা তো পারেই। কারণ, সুচিত্রা সেন বাংলা ছবিতে একজনই ছিলেন, একজনই থাকবেন। শুধু আম্মাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যেই আমি হয়ত বড়পর্দায় ওই কাজটা করতে পারি।
No comments: