Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » তুরস্ককে বাঁচাতেই সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের চেষ্টা ?‌





 তুরস্ককে বাঁচাতেই    সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের চেষ্টা ?‌


  ছোট এক পাঁচিলের পিছনে শরীর লুকিয়ে, বন্দুক হাতে পজিশন নিয়েছেন তুরস্কের এক পুলিস। আর সেই পাঁচিলেই দাঁড়িয়ে এক মার্জার, অবাক, কিছুটা জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে সেই পুলিসের দিকে। বিড়ালের দৃষ্টির সামনে যেন কিছুটা বিভ্রান্ত পুলিসটিও। ছবি পাঠিয়েছে সংবাদ মাধ্যম। তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থান নিয়েই আসলে রয়েছে কিছু বিভ্রান্তি। দেশে দেশে ক্যু হয় সাধারণত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের জন্য। তুরস্কে সেই চেনা ছবিটা যেন কিছুটা অন্যরকম। ইতিহাস বলে, এখানে সেনাবাহিনী গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী। রাষ্ট্রের জনক মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক ১৯২৩ সালে যে আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন, সেই আদর্শের অভিভাবক বলে মনে করে নিজেদের। আতাতুর্কের আদর্শ এবং গণতন্ত্রের বিচ্যুতি ঘটছে বলে এর আগে ৪টে সফল ক্যু করেছে সেনা। ব্যর্থ হলে এটাই হবে প্রথম ব্যর্থতা। শুধু তাই নয়, অভ্যুত্থান না ঘটিয়েও বিভিন্ন সময়ে কলকাঠি নেড়ে শাসনক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে অনেক রাজনৈতিক নেতাকে। এবারও সেনাবাহিনী দাবি করেছে, দেশে গণতন্ত্র, শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতেই এই অভ্যুত্থান। প্রেসিডেন্ট এর্ডোয়ান কট্টর ইসলামপন্থী বলে পরিচিত। তুরস্কের গোড়া মুসলিমদের পছন্দের নেতা। এই জনপ্রিয়তার জোরে প্রথম থেকেই তিনি সেনাবাহিনীকে আদর্শগত এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালে সেদেশে মহিলাদের হিজাব পরার নিয়মকে ফিরিয়ে এনেছেন। প্রেসিডেন্টের স্ত্রী সরকারি অনুষ্ঠানে যান হিজাব পরে। সরাসরি প্রশ্ন করলে বলেন, আমি ধর্মনিরপেক্ষ। কিন্তু চাই তুরস্কবাসী তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসগুলি আরও স্বাধীনভাবে জাহির করুক। বাবার হাত ধরে ইস্তানবুলে এসে আরও কিছু অর্থ আয় করার চেষ্টায় যখন এর্ডোয়ান ফেরি করছেন, তখন থেকেই তাঁর শিক্ষা ইসলামি স্কুলে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে কট্টর ইসলামপন্থী অবস্থান নেওয়ার জন্য ৪ মাস জেলও খেটেছেন। ১৯৯৪ সালে ইস্তানবুলের মেয়র হওয়ার পরে প্রথম নজর কাড়েন তিনি। তাঁর ভার্চু পার্টি নিষিদ্ধ হওয়ার পর ২০০১ সালে গড়েন এ কে পার্টি, এবং ২০০২ সালেই নির্বাচনে বিপুল সাড়া ফেলে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ভারতের মতো তুরস্কেও প্রধানমন্ত্রীই দেশের প্রশাসনিক প্রধানের মর্যাদা পেতেন। কিন্তু তিনিই ২০১৪ সালে প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন। প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম থেকেই টক্কর লেগেছিল তাঁর সামরিক বাহিনীর সঙ্গে। সামরিক আদালতের ক্ষমতা কমিয়ে দেন, সামরিক বাহিনীতে নিয়োগেও অসামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে আসেন। সামরিক বাহিনী ২০০৭ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে কট্টরপন্থী আবদুল্লা গুলের নির্বাচনের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে গুলকেই প্রেসিডেন্ট পদে বসান এর্দুয়ান। জনপ্রিয়তার জোরে তখন মনে হয়েছিল, সবটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তিনি। পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয় ২০১১ সালে সিরিয়া যুদ্ধের সময় থেকে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের অপসারণ চাওয়ার পাশাপাশি তিনি আই এস–‌কে সরাসরি সমর্থন করতে থাকেন। কিন্তু সমস্যা ক্রমে জটিল হয়ে উঠল। একদিকে সিরিয়া থেকে একটানা শরণার্থী স্রোত আছড়ে পড়ছে তুরস্কে। অন্যদিকে আই এস বন্দুকের নল ঘুরিয়ে দিয়েছে আশ্রয়দাতা তুরস্কের দিকেই। খেপে গেছে রাশিয়া। দীর্ঘদিনের বন্ধু ইজরায়েলের বিরোধিতা করে এর্দোয়ান পশ্চিম এশিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছেন বটে, কিন্তু দেশের কুর্দরা যখন সীমান্তপাড়ে আই এসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চেয়েছে, তখন তার বিরোধিতা করেছেন। ক্রমশ এর্দোয়ানের একনায়কতন্ত্রী চেহারাও বড় হয়ে উঠেছে। ২০১৩ সালে এ কে পার্টির বিরোধিতা করার জন্য তিনি ১৭ জন বর্ষীয়ান মিলিটারি অফিসারকে যাবজ্জীবন জেলে পাঠিয়েছেন। এছাড়াও কয়েকশো সরকারি অফিসার, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক নেতা তাঁর রোষের শিকার হয়েছেন। গেজি পার্কে সবুজ ধ্বংস করে নির্মাণকাজের বিরোধিতাকে কড়া হাতে দমন করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছেন, শপথ করেছেন টুইটারকে মুছে দেবেন। তাঁর জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বিলাস–‌আয়োজনও। রাজধানী আঙ্কারায় বানিয়েছেন হাজার ঘরের প্রেসিডেন্ট–‌প্রাসাদ। আকারে আয়তনে যা হোয়াইট হাউস বা ক্রেমলিনকেও ছাপিয়ে যায়। দেখেশুনে অনেকে সমর্থক তাঁকে সুলতান নামে ডাকতে শুরু করেছিলেন। ফের তিনি অটোমান সাম্রাজ্যের গৌরব নাকি ফিরিয়ে আনবেন, একথাও শোনা গেছে। ২০১৪ থেকে কমতে থাকে দেশের বৃদ্ধির হার, বাড়তে থাকে বেকারি। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে দুর্নীতি। জড়িয়ে পড়েন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠরা। সঙ্কট বাড়ছে দেখে সম্প্রতি তিনি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমস্যা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন, যেমন চেষ্টা করছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের সঙ্গেও শত্রুতা মিটিয়ে ফেলার। কিন্তু শুক্রবারের রাতের অভ্যুত্থান বলে দিচ্ছে, সে চেষ্টায় পুরোপুরি সফল হননি তিনি।‌‌






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply