তুরস্কে অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ, পরিস্থিতি এরদোয়ানের নিয়ন্ত্রণে।।ুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা ও রাজপথে জনতা
তুরস্কে অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ, পরিস্থিতি এরদোয়ানের নিয়ন্ত্রণে
দুহাত তুলে আত্মসমর্পণ করছে সেনারা
তুরস্কের ভারপ্রাপ্ত সেনা প্রধান রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে জানিয়েছেন, সেখানে গত রাতের অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
জেনারেল উমিট ডানডার জানান, এই অভ্যুত্থানে চেষ্টায় জড়িত একশো চারজন নিহত হয়েছেন।
সারা রাত ধরে আংকারা এবং ইস্তাম্বুল থেকে গুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত দেড় হাজার দের বেশি সেনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তুরস্কের ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ওমের সেলিক জানান, পরিস্থিতি এখন নব্বুই শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে এখনো কয়েকজন সেনা অধিনায়ক অভ্যুত্থানের পক্ষের সেনাদের হাতে জিম্মি হয়ে আছেন।
বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে আটক একদল বিদ্রোহী সেনা
তুরস্কে এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা শুরু হয় গত রাতে।
ইস্তাম্বুল ও আংকারা শহুরে হঠাৎ করেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থান নেয় সেনারা, গড়াতে থাকে ট্যাংক, খুব নিচ দিয়ে উড়ে যেতে থাকে সামরিক বিমান।
বোমা হামলা ও বন্দুক যুদ্ধের কবলে পড়ে ৯০ জন নিহত হয়েছেন ও কয়েকশো আহত হয়েছেন।
তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
সাধারণ জনগণের অনেককেই রাস্তায় সেনাদের ধাওয়া করতে দেখা গেছে।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার সমর্থক বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছে।
মিস্টার এরদোয়ান হাজার হাজার সমর্থকের বিক্ষোভের মুখে সেনা বাহিনীর বিদ্রোহী অংশ ইস্তানবুল বিমান বন্দর থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়।
রাস্তায় পড়ে আছে পরিত্যক্ত ট্যাংক, অস্ত্রশস্ত্র এবং সেনাদের পোশাক
অভ্যুত্থানের চেষ্টার পর বহু সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন।
বসফরাস ব্রিজের ওপরে তাদের দেখা যায় ট্যাংক থেকে বেরিয়ে মাথার ওপরে হাত তুলে হেটে যাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান টেলিভিশনে এক ভাষণে কড়া ভাষায় হুশিয়ারি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন তার সরকারকে হটিয়ে দেয়ার জন্য যে অভ্যুত্থান হয়েছে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা।
তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনীতে আগাছা উৎপাটনের সময় এসেছে।
তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা ও রাজপথে জনতা
বিদ্রোহী সেনাদের ট্যাংকের সামনে এক প্রতিবাদী
তুরস্কের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি দাবি করেছে, শুক্রবার রাতে সামরিক বাহিনীর একটি অভ্যুত্থান চেষ্টাকে ‘প্রতিহত’ করার পর বর্তমানে দেশটির পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ রয়েছে। তুর্কি টেলিভিশন এনটিভি আজ (শনিবার) সকালে এমআইটি’র মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে।
তুরস্কের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে সামরিক বাহিনীর একটি অভ্যুত্থান চেষ্টাকে প্রতিহত করার পর বর্তমানে দেশটির পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তুর্কি টেলিভিশন এনটিভি আজ (শনিবার) সকালে এমআইটি’র মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে।
টেলিভিশনটি বলছে, রাজধানী আঙ্কারায় অভ্যুত্থান চেষ্টার পক্ষে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করেছে সরকারি ফাইটার বিমান। সরকারি বাহিনী অভ্যুত্থানকারীদের হাত থেকে আঙ্কারার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা টিআরটি’র নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। তুর্কি সরকারি সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৭৫৪ জন সেনাকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই সেনা সদস্য।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান আজ (শনিবার) বলেছেন, সামরিক অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের চড়া মূল্য দিতে হবে। ইস্তাম্বুল থেকে দেয়া সরাসরি ভাষণে এ কথা বলেছেন তিনি।
দেশের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন, পরিস্থিতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং রাজধানী আঙ্কারার আকাশে বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তুরস্কে অভ্যুত্থান চেষ্টাকালে ১৭ পুলিশসহ ৫৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। অভ্যুত্থানকারীরা হেলিকপ্টারের সহায়তায় রাজধানী আঙ্কারায় পুলিশের বিশেষ বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালালে ১৭ পুলিশ নিহত হন। এ ছাড়া, বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৪২ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। তুর্কি সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে, রাষ্ট্রীয় একটি টেলিভিশন থেকে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশ দাবি করে যে, তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে’ সশস্ত্র বাহিনী তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেছে বলে খবরে বলা হয়।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, এখন থেকে একটি 'পিস কাউন্সিল' দেশ পরিচালনা করবে। দেশে কারফিউ এবং মার্শাল ল' জারি করা হয়েছে।#
No comments: