Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » নারীদের সৌন্দর্যের উৎস নিয়ে ২০ টি টিপস জেনে নিন









 নারীদের সৌন্দর্যের উৎস নিয়ে ২০ টি টিপস  জেনে নিন




 1   শীতকালেও তরতাজা সজীব ঠোঁট  ,2 বডি পিয়ার্সিং যখন সৌন্দর্যের উৎস 3 এবার হাসুন প্রাণ ভরে , 4 আঁচিল হলে কি করতে হবে , 5 চোখের ভাষা , 6 আর্দ্রতা চাই ত্বকের ,7 তেলে তাজা  ,8 চোখ ও ঠোঁটের যত্ন, 9 সা জ গো জ : ত্বকের যত্ন , 10 রোদে পোড়া ভাব দূর করতে , 11 গরমে ত্বকের যত্ন, 12 স্নিগ্ধতায় সারা দিন , 13 ভেষজ উপায়ে রূপচর্চা , 14 সৌন্দর্যসেবা : নারীদের সফল পেশা , 15 ত্বকের প্রয়োজনে ময়েশ্চারাইজার , 16 নখে আঁকাআঁকি , 17 তবুও সুন্দর , 18 রিবন্ডিং চুলের যত্ন , 19 নখের যত্ন ও সাজ , 20 ঝকঝকে সাদা দাঁতের জন্,


গরমে ত্বকের যত্ন


ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অস্থির। শরীর- মনের সঙ্গে ত্বকের অবস্থাও নাজুক। তবে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না, প্রয়োজন বাড়তি যত্ন।

সারা বছরই ত্বকের যত্ন নিতে হয়। তবে গরমকালে এটি বাধ্যতামূলক। কারণ এ সময় ঘাম বেশি হয়। বাতাসে ধুলা ময়লাও বেশি থাকে। ফলে এই সময়টায় ত্বক ঠিক রাখতে একটু সচেতন আপনাকে হতেই হবে। অনেকেই অলসতা করে ত্বকের বিষয়ে উদাসীন থাকেন। তার ফলাফল কিন্তু খুব ভালো হয় না। ত্বকে ব্রন ও র‌্যাশ দেখা দেয়।

সব সময় পার্লারে গিয়ে ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। তাই ঘরে বসে কেমন করে ত্বক সজিব, প্রাণবন্ত থাকবে তার কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:

সর্ব প্রথম ত্বক পরিস্কার রাখতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বাইরে থেকে ফিরে নিয়মিত ত্বক পরিস্কার করতে হবে।

বেড় হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন।

সপ্তাহে অত্যন্ত দুই দিন ঘরে তৈরি প্যাক লাগাতে হবে। এতে করে ত্বকের ভেতরের ময়লা দূর হয়ে ত্বকের উজ্বলতা ফিরে আসবে।

২ চামচ ময়দা, ১ চামচ মধু এবং পাকা কলার মাক্স লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

এসময় প্রচুর মৌসুমী ফল পাওয়া যায়। খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকেও লাগাতে পারেন তরমুজের রস এবং অন্যান্য ফল।

ভালো মানের ফেস ওয়াস ব্যবহার করুন।

সপ্তাহে ২ থেকে তিন দিন স্ক্রাব লাগান। চালের গুড়া ভালো প্রাকৃতিক স্ক্রাবের কাজ করে





বডি পিয়ার্সিং যখন সৌন্দর্যের উৎস


বডি পিয়ার্সিং অথাৎ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্রকরণ। আর এই ছিদ্রকরণের উদ্দেশ্য হল নান্দনিক সব অলংকার পরিধান করা সেইসাথে চেহারার সৌন্দর্য্য বর্ধন। সৌন্দর্য্য চর্চার অন্যতম একটা অংশ হিসাবে সারাবিশ্বের সর্বসাধারণের কাছে স্বীকৃত এবং নন্দিত এই ছিদ্রকরণ প্রথা। যুগে যুগে এই প্রথা চলে এসেছে আমাদের বাঙ্গালি সংস্কৃতির অংশ হিসাবে। আমাদের সংস্কৃতিতে নাক এবং কান ছিদ্রকরণ ব্যাপকভাবে সমাদৃত। এক্ষেত্রে নাক কানের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ছিদ্র করার চিত্রও চোখে পড়ে। ফ্যাশন সচেতন মেয়েরা তাদের লাইফস্টাইলে আনতে চায় নিত্যনতুন উপাদান এজন্য তাদের ফ্যাশন ভাবনা প্রতিনিয়ত চেঞ্জ হয়। ফ্যাশন নিয়ে তাদের বৈচিত্রময় ভাবনা মাথায় রাখলে কিংবা হালের ফ্যাশন ট্রেন্ড একটু খেয়াল করলে আমরা আরো ব্যাপকভাবে শরীর ছিদ্রকরণের নমুনা দেখতে পাব। নাক কান ছাড়াও ভ্রু, ঠোঁট, জিহবা, থুতনি,নিপল, নাভিতে ছিদ্র করার প্রথা নজর এড়িয়ে যায় না। অদ্ভুত সব জায়গায় ছিদ্র করার ফ্যাশনটা যদিও অন্য সংস্কৃতি থেকে ধার করা। তবে আমাদের দেশের বসবাসকারী আদিবাসীদের মধ্যেও শরীরের অসংখ্য স্থানে ছিদ্র এবং অলংকার পরিধান করার রেওয়াজ দেখা যায়। ছিদ্রকরণ এই বিষয়টা এখন শুধু মেয়েদের মাঝেই সীমাবদ্ধ নাই। রাস্তাঘাটে হরহামেশাই আমাদের চোখ আটকে যায় বাঙ্গালি ছেলেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে অলংকারে সজ্জিত দেখলে। ধাতস্থ হতে যদিও সময় লাগে তারপরেও ফ্যাশন সবার জন্যেই। ফ্যাশন সচেতন নারী কিংবা পুরুষমাত্রেই চায় বৈচিত্রময়ভাবে ও অনন্যরুপে প্রিয়জনের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে।

গ্রামে গঞ্জে নাক কান ফুটাতে এখনো সুঁই সুতাই প্রধান যন্ত্র। এক্ষেত্রে তারা কেউই কোনপ্রকার স্বাস্থ্য সেবা নিতে কোথাও যান না। কোন ইনফেকশন হলে রসুন আর সরিষার তেল একসাথে ফুটিয়ে গরম গরম সেই স্থানে লাগান। ক্ষতস্থানে সেই তেল কতটুকু উপকারী কিংবা স্বাস্থসম্মত সেটা রীতিমত বিতর্কিত বিষয়। গ্রামের মানুষজন নিজেদের টোটকা চিকিৎসা ব্যবস্থাই এক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকেন। যেন বিষয়টি হাত পা কেটে যাওয়ার মত একটা ব্যাপার। তেল লাগাক আর নাই লাগাক ক্ষতস্থান নিয়ে কিছুদিন ভোগান্তির পর হয়ত সেটা আপনাআপনিই আয়ত্ত্বে চলে আসে। তবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন যারা শহরে বাস করেন। শহরে বসে যারা শরীরে ছিদ্র করার বাসনা লালন করছেন তারা চাইলেই যেতে পারেন নিকটস্থ কোন পার্লারে কিংবা ডাক্তারের ক্লিনিকে। পার্লার এবং ক্লিনিকে এই কাজে অভিজ্ঞজনেরা ছিদ্র করার স্থানটি এনেসথেসিয়া করে বডি পিয়াসিং গান এবং পিয়ার্সিং কিটস্‌ এর মাধ্যমে ছিদ্র করে থাকেন। পাশাপাশি ক্ষতস্থানে ইনফেকশন যাতে না হয় সেজন্য তারা প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। স্যেন্দর্য্য চর্চা একেবারে মানসিক প্রশান্তির একটা জায়গা। মানুষ অন্যের জন্য না নিজের প্রফুল্লতার জন্যেই সৌন্দর্য্য চর্চা করে থাকে। সৌন্দর্য্য সম্পৃক্ত কোন কিছুই যেন স্বাস্থ্যহানীর কারণ না হয় এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।


এবার হাসুন প্রাণ ভরে


আহা! হাসিতে যেন মুক্তা ঝরে। যুগে যুগে কবি সাহিত্যিকরা কত মনোরম হাসিরই না বর্ণনা দিয়েছেন। সেই হাসির কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে দুপাটি সুগঠিত দন্তরাশি। ভুবন ভোলানো হাসি সত্যিকার অর্থেই মোহনীয় সৌন্দর্য্য। মুখের সৌন্দর্যের একটা বড় অংশ  দাঁত।

কিন্তু এই দাঁতের জন্যেই কত জন প্রাণ খুলে হাসতে পারেন না। বিশেষ করে সামনের পাটির ওপর ও নিচের দুটি দাঁতের ফাঁকা, অসমান এবড়ো থেবড়ো দাঁত মানুষকে হীনমন্যতায় ভুগিয়ে থাকে। হাসার সময় আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। অনেক কারণে দাঁতের মধ্যবর্তী স্থান ফাঁক হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

দন্তক্ষয় রোগে আক্রান্ত দাঁতে প্রদাহ জনিত কারণে,নিয়মিত ঔষধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাড়ি ফুলে গিয়ে থাকলে, কখনও দাঁতে আঘাত লাগলে ধীরে ধীরে দাঁতের গোড়ায় পুঁজ জমে, ডায়াবেটিস এর কারণে মাড়িতে ঘন ঘন প্রদাহ এসব নানা কারণে দাঁত মাড়ি থেকে সরে গিয়ে ফাঁকা হয়ে যেতে পারে। আরও একটি গুরুত্বর্পূণ কারণ আছে তা হল অনেকের উপরের পাটির দুটি দাঁতের মাঝে ফ্রেনাম নামক টিস্যু বাড়তি অবস্থায় থাকে সেটি একসময় দুই দাঁতকে সরিয়ে মাঝে ঢুকে পড়ে ফলে দাঁত ফাঁকা হয়ে যায়। মুখের সৌন্দর্য্যরে জন্য হানিকর এই বিষয় নিয়ে কথা হয় বারডেম হাসপাতালের ডেন্টিস্ট অধ্যাপক ডঃ অরুপ রতন চৌধুরীর সাথে। তিনি আধুনিক চিকিৎসায় এটিকে সৌন্দর্য্যমন্ডিত করার কিছু পদক্ষেপের কথা জানালেন।

দন্ত রোগ বিশেষজ্ঞ অরুপ রতন চৌধুরী বলেন দাঁতের ফাঁক জনিত চিকিৎসা তিন ভাবে করা যায়।

১.বন্ডিং- এই পদ্ধতিতে প্রথমে এক্সরের মাধ্যমে দাঁতের অবস্থান নির্ণয় করা হয়। যদি দাঁতের গোড়ায় কোন প্রদাহ বা পুঁজ না থাকে এবং ফাঁকা ৩/৪ মি.মি এ বেশি না হয় তবে ডেন্টাল ফিলিং এর মাধ্যমে দাঁতের  রঙের এর সাথে মিলিয়ে ফিলিং করে দেয়া হয়। এতে করে ফাঁকা দাঁতের উপস্থিতি বোঝা যায় না।

২.পরসেলিন ক্রাউনঃ- পরসেলিন ক্রাউন এক ধরনের ক্যাপ। অনেক সময় দুই দাঁতের মধ্যবর্তী ফাঁকা ৪/৫ মি.মি এর বেশি হয় তখন পরসেলিন ক্রাউন বা মুকুট পরে নিলে ফাঁকা অংশটুকু ভরাট হয়ে যায়।

৩.অর্থডনটিক চিকিৎসাঃ- একটি বা দুটি দাঁত যদি তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে উঁচুতে নিচুতে বা দুরে থাকে তখন অর্থডনটিক চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁতকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।


আঁচিল হলে কি করতে হবে
রবিবার, 18 ডিসেম্বর 2011 06:14
লিখেছেন সংগ্রহ
ইমেইল প্রিন্ট পিডিএফ

সাধারণ আঁচিল ছোট, শক্ত ও রুক্ষ্ম গোটার মতো ত্বকের উপর ওঠে - বিশেষত হাতে এবং আঙ্গুলে। প্লান্টার ওয়ার্ট বা প্লান্টার আঁচিল সাধারণ আঁচিলের মতোই শক্ত ধরনের গোটা, কিন্তু সেটা জন্ম নেয় পায়ের পাতায়, এবং মাঝে মধ্যে হাঁটা চলাকে কষ্টকর করে তোলে।

যৌনাঙ্গের আঁচিল পাতলা, ছোট গোটা, গোলাকৃতি কিংবা চেপ্টাকৃতি, কখনও কখনও একসাথে অনেকগুলো - যেগুলো যৌনাঙ্গের উপর কিংবা আশে পাশে জন্মে। চেপ্টাকৃতি আঁচিল প্রায় কয়েকশ ক্ষুদ্রাকৃতি, চেপ্টা গোটা যেগুলো একসাথে মুখে, গলায়, বুকে, হাটুতে, হাতে, কোমরে কিংবা বাহুতে জন্মে। ফিলিফর্ম ওয়ার্ট বা ফিলিফর্ম আঁচিল পাতলা, সূতোর মতো গোটার জন্ম যেটা সাধারণত মুখ কিংবা গলা থেকে উৎপত্তি হয়।

কী করা উচিত

১. যদি আঁচিল নিয়ে আপনার মনে কোন অস্বস্তি না থাকে সেক্ষেত্রে এগুলো নিয়ে তেমন চিন্তার কিছু নেই; এগুলো ক্ষতিকর নয়। যদি আঁচিল নিয়ে আপনি অস্বস্তি বোধ করেন, সেক্ষেত্রে আপনি ঘরে বসে সেগুলোকে অপসারণের চেষ্টা করলে ভালো ফলই পাবেন। তবে আপনার বয়স যদি ৪৫-এর বেশি হয় এবং আপনার শরীরে যদি নতুন আঁচিল জন্ম নেয় সেক্ষেত্রে ঘরোয়া চিকিৎসার আগে ডাক্তারি পরামর্শ নিন।

২. মুখের বা যৌনাঙ্গের আঁচিল দূর করার স্বীকৃত পদ্ধতি হলো ফার্মেসিতে পাওয়া যায় এরকম ওয়ার্ট রিমুভার (সালিসাইলিক এসিড) -এর ব্যবহার। এটা মৃদুভাবে আঁচিলের শক্ত আবরণটাকে অপসারণ করে যদি না ইতিমধ্যেই শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেতরের ভাইরাসটাকে নিজ থেকেই অপসারণ করতে না পারছে।

৩. প্লান্টার ওয়ার্ট ত্বকের নিচে প্রায়ই বিস্তার ঘটায়; তাই এই আঁচিল অপসারণের জন্যে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হতে পারে আপনাকে। তবে সাময়ীক অসুবিধা দূর করার লক্ষ্যে জুতোর ভেতরে প্যাডযুক্ত সোল পড়া যেতে পারে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

১. যদি আপনার আঁচিলগুলো ঘরোয়া চিকিৎসার পরও সেরে না ওঠে, বরং রক্তপাত হয় এবং ওগুলোর রঙ পরিবর্তিত হয়।

২. যদি আপনার বা আপনার জীবনসঙ্গির যৌনাঙ্গে আঁচিল থাকে সেক্ষেত্রে এটা সংক্রামক আকার ধারণ করতে পারে এবং এটা নারীদের সারভিকল (গর্ভাশয়ের অংশ) ক্যান্সারের কারণও হয়ে উঠতে পারে।

৩. যদি আপনার বয়স ৪৫-এর বেশি হয় এবং আপনার দেহে নতুন আঁচিল জন্ম নেয়। সেক্ষেত্রে আপনার স্কিন ক্যান্সার হয়েছে কিনা সেটা জানার নিমিত্তে ডাক্তার হয়তো আপনার ত্বক পরীক্ষার ব্যবþহা করতে পারে।

৪. যদি আপনি আপনার মুখের আঁচিলগুলো অপসারণ করতে চান, কিন্তু মুখে কোন দাগ বা ক্ষতের সৃষ্টি হোক এরকম ঝুঁকির মধ্যে যেতে না চান।

কীভাবে প্রতিরোধ করবেন

১. যদি আপনার শরীরে আঁচিল থাকে তবে সেগুলোতে খোঁচাখুচি করবেন না, কেননা সেক্ষেত্রে এগুলো সংক্রামিত হতে পারে।

২. অন্য মানুষের আঁচিল স্পর্শ করবেন না।

৩. শেভ করার সময় বা দাড়ি কামাবার সময় ইলেক্ট্রিক রেজার ব্যবহার করতে পারেন যাতে আঁচিলের মাথাটা কাটা না পরে, কেননা সেক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রামণের সুযোগ ঘটে যায়।

৪. পাবলিক টয়লেট, কিংবা হোটেল, রেস্টুরেন্টের ওয়াশরুমে অবশ্যই পায়ে স্যান্ডেল কিংবা জুতো পড়ে থাকবেন।



চোখের ভাষা
সোমবার, 03 অক্টোবর 2011 19:30
লিখেছেন writer
ইমেইল প্রিন্ট পিডিএফ

চোখের নীরব ভাষা নাকি হাজারো শব্দের তুলনায় জোরালো। ওই চোখ নিয়ে কবির যত কাব্য���পাখির নীড়ের মতো চোখের বনলতা সেনকে নিয়ে আজও মানুষের কল্পনার অন্ত নেই। মনের কথা বলতে পারা সে চোখের ভাষা সহজ করে তুলতে পারাটাও কম কৃতিত্বের নয়। চোখের সৌন্দর্যের নানা দিক নিয়ে বলেছেন রূপ বিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান।

মুখের সঙ্গে মানানসই ভ্রু
চোখের সৌন্দর্যের অনেকটাই নির্ভর করে চোখের ওপর বসে থাকা ভ্রু জোড়ার ওপর। তাই ভ্রু জোড়া হতে হবে মুখের সঙ্গে মানানসই। আপনার মুখের ও চোখের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভ্রু তুলুন। যাঁদের মুখের আকৃতি গোলগাল, তাঁরা ইউ-আকৃতির ভ্রু রাখতে পারেন। যাঁদের মুখের আকৃতি ডিম্বাকৃতি বা লম্বাটে, তাঁদের ভি-আকৃতিতে ভালো দেখাবে। যাঁদের জোড়া ভ্রু মানিয়ে যায়, তাঁরা জোড়া ভ্রুও রাখতে পারেন। ভ্রু যাঁদের পাতলা, তারা চেষ্টা করুন একটু দেরি করে ভ্রু তুলতে।

কাজল কালো চোখ
বর্তমানে চোখের ফ্যাশনে নতুন যোগ হয়েছে ষাটের দশকের মোটা করে কাজল দেওয়ার বিষয়টি। কাজল ছাড়াও গাঢ় নীল, সবুজ, হালকা নীল, গ্লসি বিভিন্ন রঙের কাজল পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পরার ফ্যাশন লক্ষ করা যাচ্ছে। পাশাপাশি আইলাইনার, মাশকারা আর আইশ্যাডোর ব্যবহার তো আছেই।

চোখের সাজ
চোখের সাজের সময় ফ্যাশনের পাশাপাশি গুরুত্ব দিতে হবে চোখের আকৃতি ও রঙের ওপর। একেক চোখের সাজ হয় একেক রকম।
ছোট চোখ যাঁদের, তাঁরা মেকআপের ক্ষেত্রে হালকা রং বেছে নিন। চোখের পুরোটা এলাকায় হালকা গোলাপি রঙের শ্যাডো লাগিয়ে চোখের পাতার ওপর পর্যন্ত বাদামি রং মিশিয়ে নিন। এরপর চোখের পাতা ও বাইরের দিকে গাঢ় গোলাপি রং লাগিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। আপনি যদি গাঢ় রঙের আইলাইনার লাগান, সে ক্ষেত্রে চোখের নিচের পাতার কোলে লাগাবেন না। চোখের নিচের পাতার কোলে সাদা, সোনালি, রুপালি প্রভৃতি রঙের পেনসিলের টান দিতে পারেন। এতে চোখ উজ্জ্বল, বড় ও প্রশস্ত দেখাবে। চোখে লাগাতে পারেন ঘন করে মাশকারা।
বড় চোখে আইশ্যাডো লাগানোর সময় চোখের পাতার ওপরে হালকা রঙের শেড লাগিয়ে বাইরের কোণে গাঢ় শেড লাগাবেন। আইলাইনার দিয়ে খুব চিকন করে লাইন আঁকুন। একেবারে পাপড়ির ধার ঘেঁষে এবং চোখের নিচের অংশের কোলে কাজল পরে কিছুটা বাইরে টেনে দিন। এরপর ভ্রু ও চোখের মাঝখানে সাদা অথবা ঘিয়া কালারের শ্যাডো আলতোভাবে ছুঁয়ে দিন। চোখের নিচের ও ওপরের পাতায় গাঢ় আইলাইনার লাগাতে পারেন।
যাঁদের চোখ ফোলা ধরনের, তাঁরা চোখের পাতা এবং চোখের চারপাশে হলদে টোনের লুজ পাউডার আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন। চোখের পাতায় ভাঁজের নিচ পর্যন্ত মিডিয়াম রঙে শ্যাডো লাগান। আই ভ্রু কোণে হাইলাইট করুন। এরপর বাইরের কোনা থেকে ভেতরের দিকে গাঢ় রং লাগান। এ ধরনের চোখে কখনোই ঘিয়া আইশ্যাডো লাগাবেন না। ওপরের পাতায় একেবারে পাপড়ির কোল ঘেঁষে বাইরে দিকের তিন ভাগে আইলাইনার লাগান। গোল চোখকে দীর্ঘ দেখানোর জন্য আইশ্যাডো ও লাইনারের টান বাইরের দিকে বাড়িয়ে দিন। কোনাগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে যেন কোমল ও নরম দেখায়। এই চোখকে সম্প্রসারিত রূপে নিতে চোখের ভাঁজ পড়া অংশ পর্যন্ত মিডিয়াম শেডের আইশ্যাডো লাগান। শেডটি টেনে চোখের কোনার বাইরে নিচের চোখের নিচের পাতার বাইরের কোনা থেকে ভেতরের দিকে যেতে থাকুন। কালো আইলাইনার দিয়ে চোখের নিচের ও ওপরের পাতায় লাইন আঁকুন। চোখের ওপরের পাতায় মাশকারা লাগাবেন। বাইরের দিকের অর্ধেকটায় বেশি ঘন করে লাগাবেন।
যাঁদের চোখ একটু ভেতরের দিকে চাপা, তাঁরা মেকআপের ক্ষেত্রে লক্ষ রাখুন চোখকে বেশি ফুটিয়ে তোলার দিকে। চোখের ভাঁজ পড়া অংশে গাঢ় রঙের আইশ্যাডো লাগাতে পারেন। চোখের পাতায় পেনসিল আইলাইনার ও মাশকারা লাগাবেন। আঙুল দিয়ে লাইনারগুলো ছড়িয়ে দিন।
দুই চোখের মাঝখানে দূরত্ব বেশি থাকলে চেষ্টা করুন মেকআপের মাধ্যমে দূরত্ব কমিয়ে আনতে। চোখের ভেতরের কোনার দিকে গাঢ় রঙের শ্যাডো দিতে পারেন। আবার যাঁদের দুই চোখের মাঝখানে দূরত্ব কম, তাঁরা মেকআপের সময় চোখের বাইরের কোনার দিকে গুরুত্ব বেশি দিন।
চোখের সাজের ক্ষেত্রে ভিন্নতা আনতে দুই রঙের আইশ্যাডো দিন। পেনসিল লাইনার চোখের ওপর-নিচ দুই পাতায় লাগানো গেলেও লিকুইড লাইনার শুধু চোখের ওপরের পাতায় লাগান। আইলাইনার মোটা করে লাগাবেন না। এতে চোখকে ভারী ও ক্লান্ত দেখায়। আপনি যদি লেন্স ব্যবহার করেন, মেকআপের শুরুর আগেই তা পরে নিন।

চোখের যত্ন
চোখের সাজের পাশাপাশি নজর দিতে হবে চোখের যত্নের দিকেও। চোখে প্রচুর পানির ঝাপটা দিন। বাইরে থেকে ফিরে ভালোভাবে চোখের মেকআপ তুলুন। যাঁদের চোখের নিচে কালি পড়ার সমস্যা আছে, তাঁরা শসা চাক করে চোখের পাতায় ২০-২৫ মিনিট রাখুন। গোল আলুর রসও ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন আইকেয়ার জেল পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করতে পারেন। মাঝেমধ্যে ঘড়ির কাঁটার দিকে অথবা বিপরীতে খুব হালকাভাবে চোখ ম্যাসেজ করতে পারেন। চোখকে বিশ্রাম দিন। দৈনিক অন্তত ছয় ঘণ্টা ঘুমান এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন �এ� সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফলমূল খান।


আর্দ্রতা চাই ত্বকের


শীতকালে ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজার অপরিহার্য। প্রাথমিক পর্যায়ে ময়েশ্চারাইজারের কাজ হলো ত্বকের বাইরের পরতে পানি বা আর্দ্রতা ধরে রাখা। এ ছাড়া সংবেদনশীল ত্বককে নিরাপত্তা দেওয়া, ত্বকের মান উন্নত করা এবং ত্বককে আরও মসৃণ করে তোলাও ময়েশ্চারাইজারের কাজ। নিজের বয়স, ত্বকের ধরন এবং ত্বকে কোনো ধরনের সমস্যা আছে কি না, সেসব বিষয় লক্ষ রেখে সঠিক ময়েশ্চারাইজারটি বেছে নিতে পারলে শীতকালেও আপনি পেতে পারেন নরম ত্বক।
এ প্রসঙ্গে বিউটি সেলুন �রেড�-এর রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা কামাল বলেন, ত্বকের ধরন বুঝে উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ময়েশ্চারাইজারের নিয়মিত ও সঠিক ব্যবহারে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়াকেও বিলম্বিত করা সম্ভব। ময়েশ্চারাইজার সাধারণত লোশন ও ক্রিম হিসেবে পাওয়া যায়। বাজারে বিভিন্ন উপাদানসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার রয়েছে; যেমন�ভিটামিন ই, অ্যালোভেরাযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ইত্যাদি। তিনি জানান, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ফল ও ভেষজ নির্যাসসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য বাদামসমৃদ্ধ, যেমন�আমন্ড বাদামযুক্ত ময়েশ্চারাইজার উপকারী। মিশ্র ত্বকের অধিকারী ব্যক্তিরা যেকোনেটি, অথবা স্বাভাবিক ত্বকের জন্য যে লোশন পাওয়া যায় তা ব্যবহার করতে পারেন। শীতকালে গোসলের পর অনেকের শরীর চুলকায়। অনেকের ত্বকে আ্য্যলার্জির সমস্যাও থাকে। সে ক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজার বিশেষভাবে পরীক্ষিত কি না, তা লেবেল দেখে কিনুন। তৈলাক্ত ত্বকে আর্দ্রতা রক্ষায় পেট্রোলিয়াম জেলিও ভালো। শীতে অলিভ অয়েলও ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে অলিভ অয়েল মেখে রোদে বের হলে রোদে পোড়া বা ট্যান হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বডি মিল্ক হিসেবেও কিছু ময়েশ্চারাইজার বাজারে পাওয়া যায়। লোশনের চেয়ে ঘন হয়ে থাকে বডি মিল্ক। অনেক সময় আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এবং বেশি পুষ্টিদায়ক বলে বডি মিল্ক ত্বককে আরও কোমল করে তোলে। ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করতে গ্লিসারিনও বেশ কাজ দেয়। তবে গ্লিসারিন অবশ্যই পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এ ক্ষেত্রে মিশ্রণে গ্লিসারিন ও পানির অনুপাত হবে ২: ১।
শীতে ভ্যানিশিং ক্রিমের বদলে কোল্ড ক্রিম বেছে নিন। রাতের জন্য নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন। তবে শীতকাল আর গরমকালের নাইট ক্রিম ভিন্ন হবে। মুখ ধুয়ে রাতে নাইট ক্রিম মেখে ঘুমালে সারা রাত ত্বক আর্দ্রতা পাবে, নরম থাকবে। তবে সকালে উঠে বাইরে যাওয়ার আগে মুখ থেকে নাইট ক্রিম অবশ্যই ধুয়ে ফেলতে হবে। অনেকের ত্বকের বিভিন্ন অংশ হালকা ও গাঢ় রঙের হয়ে থাকে। এমন ত্বকে সমান উজ্জ্বলতা আনতে জোজোবা-সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার খুব উপকারী। ত্রিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা শীতে অ্যান্টি-এজিং ও অ্যান্টি-রিংকল ক্রিম ব্যবহার করুন।
�হারমনি স্পা�র রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানান, শুষ্ক ত্বকে অবশ্যই তেলযুক্ত এবং তৈলাক্ত ত্বকে তেলহীন বা পানিযুক্ত লোশন ব্যবহার করতে হবে। গরমে লাইট এবং শীতে ডিপ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে। মুখে রোদ প্রতিরোধক ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। কারণ, শীতের রোদ বেশ কড়া হয়ে থাকে। ঘরে বসেও কিছু প্যাক তৈরি করে নিজেই ময়েশ্চারাইজ করতে পারেন ত্বককে।
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে দুধ ও মধু সমপরিমাণ মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এর সঙ্গে সমপরিমাণ মসুর ডাল বেটে মেশালে সেটা ডিপ ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে। তারপর চাইলে মুখে ক্রিম লাগানো যেতে পারে।
দুই টেবিল চামচ কালিজিরার তেলের সঙ্গে দু-তিন ফোঁটা মধু মিশিয়ে মুখে লাগালে সেটা বেশ আর্দ্রতা দেবে। ১৫-২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
পুরো শরীরের জন্য অ্যামন্ড তেল বা ময়েশ্চারাইজার দারুণ উপকারী। চাইলে তার সঙ্গে গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে পারেন।
মনে রাখতে হবে মুখ, হাত ও শরীরের জন্য আলাদা করে বিশেষভাবে যে লোশনগুলো তৈরি হয়, তা ওই নির্দিষ্ট অংশেই ব্যবহার করা উচিত। যেমন�বডি লোশন কখনোই মুখে ব্যবহার করা উচিত নয়। সব সময় ভালো ব্র্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। নিরাপদ থাকুন।



তেলে তাজা


জলে চুন তাজা, তেলে চুল তাজা�এ প্রবাদ তো সবারই জানা। এবার এর সঙ্গে যোগ করুন আপনার ত্বকও। শুধু চুল আর ত্বকই নয়, তেলে কিন্তু মনও থাকে তাজা। তেলের হরেক রকম ব্যবহার আর গুণাগুণ নিয়ে বলেছেন হারমনি স্পার রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
সুপ্রাচীনকাল থেকে এর বহুল ব্যবহার ছিল। সচেতন মানুষের শরীরের সুস্থতাও। প্রচলিত নারকেল তেল, সয়াবিন তেল, জলপাই তেল, সরিষার তেলের পাশাপাশি এখন যোগ হয়েছে সূর্যমুখীর তেল, তিলের তেল, নিম তেল, তিসির তেল, ভুট্টার তেল। এসব তেলের সঙ্গে আবার ফুল, লতাপাতার মূলের নির্যাস যোগ করে সুগন্ধিযুক্ত উপকারী তেলের ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে।

নারকেল তেল
সৌন্দর্যচর্চায় বিশেষ করে চুলের যত্নে যুগে যুগে সেরা হিসেবে খ্যাত নারকেল তেল। চুল পড়া বন্ধ করে, চুলের গোড়া শক্ত করে এই তেল। এ ছাড়া ত্বকে মালিশ করলেও উপকার পাওয়া যায়।

সরিষা তেল
সরিষার তেল ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে পারে। শীতে ফাটা ত্বকে এর মালিশ খুব উপকারী। শিশুর ত্বকেও খাঁটি সরিষার তেলের ম্যাসাজ অন্য রাসায়নিকযুক্ত তেলের তুলনায় নিরাপদ। ঠান্ডার সময় উষ্ণতাও দেয় এই তেল। ঠান্ডা, কফ, মাথাব্যথা�এসব কমাতে সরিষার তেলের ম্যাসাজ উপকারী।

তিলের তেল
ছোট ছোট সাদা ফুল থেকে হয় কালচে তিলের দানা। এ দানার গুণাগুণের শেষ নেই। এ থেকে হয় তিলের তেল। তিলের তেলের ব্যবহারে ত্বক হয় সজীব। যাঁদের ত্বকে রোদে পোড়া ভাব রয়েছে, তাঁদের ওই পোড়া দাগ দূর করতে পারেন এ তেল ম্যাসাজের মাধ্যমে। এই তেল ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হয়। মাথাও ঠান্ডা থাকে। শীতের সময় রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য কর্পূর তিলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করলে উষ্ণতা পাওয়া যায়। তিলের তেল চুলের খুশকিও দূর করে। এ জন্য সপ্তাহে একবার নারকেলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে ম্যাসাজ করতে পারেন।

তিসির তেল
ত্বকের কোমলতা ফিরিয়ে আনতে ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন তিসির তেল। এতে ত্বকের ভাঁজগুলো ধীরে ধীরে কমে যায়। তিসির তেল খেতেও পারেন। এতে মেধা বাড়ে। চোখের দৃষ্টির জন্যও ভালো।

জলপাই তেল
যাঁদের কোলস্টেরলের মাত্রাটা বেশি, তাঁদের জন্য জলপাই তেলের কোনো বিকল্প নেই। এ তেলের রান্না যেমন ভালো, ত্বকে এর ব্যবহারও উপকারী। যাঁদের ত্বকে চুলকানির সমস্যা রয়েছে, তাঁরা নির্দ্বিধায় এ তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। শিশুর ত্বকেও নিরাপদ। জলপাই তেল মাথার ত্বকের খুশকি দূর করার জন্যও উপকারী।

বাদাম তেল
পুষ্টি আর শক্তি�এ দুটো একসঙ্গে পেতে বেছে নিতে পারেন আমন্ড বাদাম তেল। চেহারায় লাবণ্য ছড়ায় এ তেল। মাথায় ব্যবহার করতে পারেন। শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে। চিনাবাদামের তেল খেতেও পারেন বিস্কিট বা কেকের সঙ্গে বেক করে।

সূর্যমুখী তেল
এই তেলের সুবিধা হলো, ত্বকে ব্যবহার করলে কোনো অস্বস্তিকর তেলতেলে অনুভূতি হয় না। বরং বেশ ভালো বোধ হয়। ত্বক সজীব ও লাবণ্যময় করতে সূর্যমুখীর তেল ম্যাসাজ করতে পারেন।

নিম তেল
যাঁদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা আছে, তাঁরা নিম তেল ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে দুই দিন। দু-এক ফোঁটা নিম তেল খেতেও পারেন প্রতিদিন।

এসেনশিয়াল অয়েল
তেলের ব্যবহার শুধু খাওয়া আর রূপচর্চায় সীমাবদ্ধ নেই। এখন মনকে প্রফুল্ল করতেও তেলের ব্যবহার দেখা যায়। রাহিমা সুলতানা বলেন, তেলের সঙ্গে বিভিন্ন গাছের ফুল, লতাপাতা, মূলের নির্যাস মিশিয়ে এখন তৈরি করা হচ্ছে এসেনশিয়াল অয়েল। সুগন্ধির পাশাপাশি বেশ উপকারীও এটি। আমরা তেলের সঙ্গে বিভিন্ন ভেষজ উপাদান ও সুগন্ধি যোগ করে পেতে পারি সজীবতা ও সতেজতা। যেমন:
 লবঙ্গ, রোজমেরি, লেবু একসঙ্গে তেলে মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করলে সতেজ হওয়া যায়।
 জায়ফল, কমলা, ভ্যানিলা একসঙ্গে তেলে মিশিয়ে ম্যাসাজ করে আপনার স্নায়ুবিক চাপ কমিয়ে ফেলতে পারেন।
 ক্যামোমাইল, ল্যাভেন্ডার, গোলাপের নির্যাস তেলে মিশিয়ে শরীরের আবর্জনা দূর করুন।
 ত্বকের উজ্জ্বলতা আনতে তেলে লেবুর নির্যাস ও জেসমিন যোগ করে ম্যাসাজ করতে পারেন।
নানারকম এসেনশিয়াল অয়েল পাবেন যেকোনো সুগন্ধির দোকানেই। এছাড়া নানা বিউটি পার্লারেও এসব তেল কিনতে পাওয়া যায়।



চোখ ও ঠোঁটের যত্ন


মুখমন্ডলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি অংশ হচ্ছে চোখ ও ঠোঁট। মেকআপের সময় এ দুটি অংশের দিকেই বেশি দৃষ্টি দিতে হয়। তাই নিয়ে এই আয়োজন।

চোখের জন্য যা করবেন

চোখ ছোট হলে-

* চোখের পাতার কোনার দিকে মিডিয়াম টোনের আইশ্যাডো ব্যবহার করুন।

* চোখের পাতার দিকে হালকা রঙের শ্যাডো লাগান।

চোখ ভিতরে ঢুকে গেলে-

* ব্রাউন বা কালো কাজল ব্যবহার করুন।

* চোখের ওপরে আই লাইনার না লাগানোই ভাল। লাগালেও খুব সরু করে লাগান।

* চোখের পাতার উপরে মিডিয়াম টোনের আইশ্যাডো লাগিয়ে উপরের দিকে ব্লেন্ড করে দিন।

* মাসকারা লাগালে চোখের উপরের পাতায় লাগান। নীচের পাতায় লাগাবেন না।

চোখ যদি ঠিকরে আসে

* চোখের উপরের পাতায় সরু করে কাজল পরুন।

* গাঢ় রঙের আই শ্যাডো ব্যবহার করুন।

* চোখের উপরে এবং নিচে মাসকারা ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

আই মেক আপের সময় খেয়াল রাখুন...

* আই শ্যাডোর ব্রাশ ব্যবহারের আগে দু-তিন ফোটা পানি নিয়ে ব্রাশ ভিজিয়ে নিন।

* শ্যাডো লাগানোর সময় ফ্ল্যাট ব্রাশ ব্যবহার করুন।

০০ প্রথমে হালকা রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করুন, ধীরে ধীরে গাঢ় রঙের দিকে যান।

০০ আই ব্রো এলোমেলো যাতে না হয়, সে জন্য সামান্য মাসকারা বা হেয়ার স্প্রে লাগাতে পারেন।

ঠোটের যত্ন

ঠোঁট মোটা হলে-

* যতটা সম্ভব ঠোঁটের ভিতর দিয়ে লিপ লাইনারের রেখা টানুন যাতে ঠোঁট পাতলা দেখায়।

* ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করলে ঠোঁটের মোটা ভাব কমবে।

* পাতলা ঠোঁটের রেখার ভিতর সাবধানে লিপস্টিক লাগান

* অবশ্যই লিপ গ্লস লাগাবেন।

* অধিকাংশ সময় উপরের ঠোঁট নিচের ঠোঁটের তুলনায় পাতলা হয়। সে জন্য উপরের ঠোঁটের লিপলাইনার একটু বাইরে টেনে নিন।

লিপস্টিকের ব্যবহার

* লিপস্টিক সরাসরি ঠোঁটে না লাগিয়ে ছোট লিপব্রাশ দিয়ে লাগান।

* মুখ অল্প খোলা রেখে প্রথমে ঠোঁটের মাঝখান থেকে লিপস্টিক লাগান।

* লিপস্টিক লাগানো হয়ে গেলে টিস্যু পেপার আলতো করে দুই ঠোঁটের মাঝে চেপে ধরুন।

লিপগ্লস

* ঠোঁটে গ্লসি লুক চাইলে লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন।

* লিপগ্লস ঠোঁটের মাঝখানে লাগিয়ে দুটি ঠোঁট চেপে ধরুন।

* ঠোঁটের রং খুব গাঢ় হলে লিপস্টিকের উপর লিপ গ্লস না লাগালেই ভাল।

মনে রাখবেন

* ছোট চোখ হলে উপরে ও নিচে লাইনার দিন। ভিতরে কাজল পরবেন না। হালকা রঙের আইশ্যাডো বেছে নিন।

* ভাসা চোখের শুধু উপরের পাতার কোলে ঘেঁষে লাইনার লাগান। মাঝারি থেকে গাঢ় শেডের আই শ্যাডো নিন।

* লিপলাইনারের সহায্যে ঠোঁটের একটু বাইরে থেকে রেখা টানুন। এতে করে ঠোঁট ভরাট দেখাবে।

* ফাউন্ডেশন ও কনসিলার দিয়ে ঠোঁটের কোনা গুলো মুখের ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক লাগান।

সা জ গো জ : ত্বকের যত্ন


ষত্বককে চকচকে ও ফর্সা রাখতে সপ্তাহে ২/৩ বার মধুর সঙ্গে গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন; ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ষযষ্ঠিমধু ভেজানো পানি, মধু ও লেবুর রস একসঙ্গে মিলিয়ে সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
ষএক টেবিল চামচ দুধের সর, লেবুর রস, শশার রস, আধা টেবিল চামচ চিনি এবং পাঁচ টেবিল চামচ দুধ একসঙ্গে মিলিয়ে ঘাড়ে ও গলায় লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। প্রতিদিন লাগাবেন।
ষদু�টো আমন্ড বাদাম সারারাত গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে এ দুটো পিষে এর সঙ্গে এক চামচ করে দুধ ও চন্দন পাউডার মিলিয়ে ব্যবহার করে শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার তৈলাক্ত ত্বকে লাগাবেন।
ষফ্রিজে একটু দুধ রেখে দেবেন, প্রতিদিন বাইরে থেকে বাসায় ফিরে তুলার সাহায্যে এই বরফ শীতল দুধ লাগালে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বক হয়ে উঠবে ফর্সা ও উজ্জ্বল।
ষএক টেবিল চামচ লেবুর রস ও এক কাপ দই মেশান, প্যাকটি মুখে, গলায়, ঘাড়ে, হাতে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন, প্যাকটি আপনার ত্বকের রং উজ্জ্বল করবে এবং সতেজ করবে। সপ্তাহে একবার লাগাতে পারেন।
ষত্বককে নরম এবং চকচকে করতে, ৫০ মিঃ গ্রাঃ টমেটো রসের সঙ্গে এক টেবিল চামচ লেবুর রস মিলিয়ে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগান একদিন পর পর লাগাতে পারেন।
ষনরম, কোমল বডি প্যাক তৈরি করার জন্য কিছুটা পুদিনা পাতা ও আমন্ড বাদাম একসঙ্গে বেটে পেষ্ট করে নিন। এটি উষ্ণ গরম পানিতে মিলিয়ে সারা শরীরে ব্যবহার করুন। মিশ্রণটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, এরপর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে দু� বার ব্যবহার করুন।
ষসপ্তাহে দু�বার মুখ বাদে শরীরের অন্যান্য অংশের মরা চামড়ার কোষ ঝরিয়ে ফেলা অর্থাত্ এক্সফোলিয়েশন করা দরকার; নতুবা এ মৃত কোষের কারণে ত্বককে প্রাণহীন দেখায় ও ত্বক শক্ত হয়ে যায়। সারা শরীর এক্সফোলিয়েশন করার জন্য কিছুটা চাল ভিজিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এর সঙ্গে ৪টা টমেটো ভালো করে চটকে ব্যবহার করুন। শুকিয়ে এলে হালকা হাতে সার্কুলার মুভমেন্টে তুলে ফেলুন। সপ্তাহে দু�বার করুন।
ষঝশরহ ঈষবধহংরহম করার জন্য আঙ্গুর, লেবু ও ডিমের সাদা অংশ মিলিয়ে প্যাক ব্যবহার করুন, ব্যবহারের ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ষমধু ও দুধ একসঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
ষটমেটোর রসে মধু মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
ষত্বকের রং ফর্সা করার জন্য কাঁচা হলুদ দুধের ক্রিম মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
ষযাদের ঘাড় ও বাহুমূল কালো, তারা শশা ও লেবুর রসে ১ চিমটি হলুদ মিলিয়ে প্রতিদিন ব্যবহার করুন, ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ষকালো ছোপ ছোপ পড়ে যাওয়া ঘাড় ফর্সা করতে একদিন পর একদিন গোসলের আগে সমপরিমাণে লেবুর রস, মধু ও চিনি একসঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ষগোসলের পানিতে আধা কাপ মধু মিলিয়ে নিতে পারেন, এতে আপনার ত্বক হবে নরম ও মসৃণ।


রোদে পোড়া ভাব দূর করতে

বৈশাখের রোদে পিচঢালা পথও তেতে ওঠে। বাতাসটাও গরম।কেবল কি তাই! সুন্দর আর কোমল ত্বক তো রোদের তাপে পুড়ে যাচ্ছে। ত্বকে পড়ছে কালো ছোপ ছোপ কিংবা লালচে দাগ। এর সমাধান কী?

যাদের শরীরে মেলানিন কম থাকে, তাদের ত্বক সহজেই রোদে পুড়ে যায়। মানুষের ত্বক মূলত পাঁচ ধরনের হয়ে থাকে। এই উপমহাদেশের মানুষের ত্বক প্রধানত দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ের। খুব বেশি কালো ত্বকের অধিকারী যারা, তাদের রোদের তাপে বেশি ক্ষতি হয় না। কেননা, কালো ত্বকে সূর্যের রশ্মির ক্ষতির পরিমাণ কম হয়। আবার বেশি ফরসা ত্বক লাল হয়ে যায়। যাদের সংবেদনশীল ত্বক, তাদের ত্বকে ফোসকা পড়ে যেতে পারে। তবে রোদে ত্বকের যেমনই ক্ষতি হোক না কেন, প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। আর ফোসকা পড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

হেয়ারোবিক্স ব্রাইডালের স্বত্বাধিকারী ও রূপবিষয়ক পরামর্শদাতা তানজিমা শারমিন বলেন, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি কেবল ত্বককে পুড়িয়েই ফেলে না, সঙ্গে সঙ্গে ত্বক টান টান করে রাখার ইলাস্ট্রিট ফাইবারের ক্ষতি করে। এতে ত্বক কুঁচকে যায়। তাই যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলা ভালো। এ ছাড়া রোদে বের হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে সানবার্ন ক্রিম ও লোশন ব্যবহার করার কথা বলেন তিনি। মাসে দুবার করে করা যেতে পারে রোদে পোড়া দূর করার বিশেষ ফেসিয়াল। সঙ্গে ঘরে তৈরি কিছু প্যাক ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।

সতর্ক থাকা
সানস্ক্রিন বা সানবার্ন লোশন ব্যবহার করার সময় ভালো ব্র্যান্ড দেখে কেনা উচিত। ত্বক তৈলাক্ত হলে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করে ওপরে হালকা করে পাউডার লাগাতে হবে। সানস্ক্রিন লোশন কেনার সময় অবশ্যই এসপিএফ (রোদ প্রতিরোধক) ২০, ৩০, ৪০ পর্যন্ত দেখে কেনা ভালো।
বাইরে বের হওয়ার আগে সঙ্গে নিয়ে বের হতে হবে ছাতা ও সানগ্লাস এবং সম্ভব হলে টুপি কিংবা স্কার্ফ।

রোদে পোড়া ভাব দূর করতে ভালো ঘুম জরুরি। খেতে হবে প্রচুর পানি আর ফল। সারা দিন শেষে ঘরে ফিরে গোসল শেষে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করতে হবে।

কিছু পরামর্শ

 পাকা কলা, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
 চন্দনবাটা, নিমপাতার বাটা ও কাঁচা হলুদবাটা দিয়ে প্যাক তৈরি করে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে।
 কাঁচা দুধে লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর সারা ত্বকে ম্যাসাজ করে ১০ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
 টকদই, চালের গুঁড়া, আর দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগালে স্ক্রাবের কাজও হয়। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে।
 ভিটামিন-ই ক্যাপসুল আর কাস্টার অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে রোদে পোড়া ত্বকে লাগালে কাজ দেয়।
 ত্বক তৈলাক্ত হলে ডাবের পানি, তরমুজের রস ও লেবুর রস মিশিয়ে লাগালে কাজ দেয়



স্নিগ্ধতায় সারা দিন

পয়লা বৈশাখে সারা দিন চেহারায় সতেজ ভাব ধরে রাখতে দেখুন খুঁটিনাটি কিছু টিপস�
আগের দিন রাতেই সব গোছগাছ করে রাখা যেতে পারে। এতে সকালে কিছুটা সময় হাতে থাকবে। সকালে চাইলে গোসল করে নিতে পারেন। গরমে আরাম পাবেন। এরপর মুখে ও সারা গায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এরপর স্নো বা ক্রিম লাগালে ভালো হয়। রোদে পোড়া থেকে ত্বক বাঁচাতে পারবেন।
হারমনি স্পার স্বত্বাধিকারী রাহিমা সুলতানা জানান, খুব বেশি মেকআপ করে না বেরোনোই ভালো। হালকা মেকআপেই ভালো দেখাবে সারা দিন। যাঁদের ত্বক ভালো, তাঁদের জন্য ফাউন্ডেশনই যথেষ্ট। মুখের কোনো দাগ ঢাকতে প্যান স্টিক অথবা কনসিলার ব্যবহার করতে পারেন। তবে এত গরমের মধ্যে প্যান কেক ব্যবহার না করাই ভালো বলে জানান রাহিমা সুলতানা।
ফাউন্ডেশন দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখার ছোট্ট একটি টিপস আছে। ফাউন্ডেশন লাগানোর পর স্পঞ্জ পানিতে চুবিয়ে নিন। ভালোভাবে চিপে পানি বের করে নিন। এরপর মুখের ওপর হালকাভাবে চেপে চেপে ফাউন্ডেশন বসিয়ে দিন।
চোখের সাজের ক্ষেত্রে কিছুটা বৈচিত্র্য আনতে পারেন। আইলাইনার বা মাশকারা ব্যবহার না করলেই ভালো হবে। গরমে ঘামে অনেক সময় তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কাজলই সবচেয়ে আরামদায়ক। চুল খোলা রেখে বেশিক্ষণ শান্তি পাওয়া যায় না তীব্র রোদের কারণে। খোঁপা, বেণি, ঝুঁটি�নানা স্টাইলে চুল বেঁধে নিতে পারেন।
সারা দিন নিজেকে সতেজ রাখার আরেকটি মন্ত্র হলো সঙ্গে ওয়েট টিস্যু রাখা। চেহারায় ক্লান্তি এসে ভর করলে সঙ্গে সঙ্গে ধুলোবালি, ঘাম মুছে নিন। এরপর আবার হালকা করে ফাউন্ডেশন পাউডার লাগিয়ে নিন। মুহূর্তেই চেহারায় ফিরে আসবে সতেজতা।


ভেষজ উপায়ে রূপচর্চা


সব ধরনের ত্বকের জন্যই আছে ভেষজ পদ্ধতিতে রূপচর্চা। মডেল: নাবিলা সুস্থ আর সুন্দর ত্বক কে না চায়। আর সুন্দর ত্বকের জন্য দরকার হয় আলাদা যত্নের। প্রত্যেক মানুষের ত্বকের ধরন আলাদা আর ত্বকের ভিন্নতার কারণে যত্নও নিতে হয় একটু ভিন্ন উপায়ে। যাঁদের ত্বক কিছুটা সংবেদনশীল, তাঁদের জন্য রাসায়নিক দ্রব্যাদি দিয়ে তৈরি প্রসাধনসামগ্রী ত্বক সহ্য করতে পারছে না। তাঁদের জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক গুণসমৃদ্ধ ও ভেষজ উপায়ে তৈরি রূপচর্চার নানা উপকরণ। চাইলে ঘরে বসে কিংবা পার্লারে গিয়েও আপনি ভেষজ উপায়ে রূপচর্চা করতে পারেন। ভেষজ উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্পর্কে বলছিলেন হারমনি স্পার পরিচালক ও রূপবিশেষজ্ঞ রহিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ত্বক সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে�তৈলাক্ত, শুষ্ক ও সাধারণ। এই তিন ধরনের ত্বকের জন্য চাই তিন ধরনের রূপচর্চা।
ত্বক যখন তৈলাক্ত
যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের বারবার মুখ ধুতে হবে। কেননা, পানি ত্বকের জন্য উপকারী। মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে শসার রস, মেথির গুঁড়া ও চালের গুঁড়া দিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগানো যায়। নিয়ম করে সকালে আর বিকেলে প্যাক ব্যবহার করলে মুখের তৈলাক্ত ভাব কেটে যাবে। এতে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
শুষ্ক ত্বকের জন্য
যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের জন্য রয়েছে রূপচর্চার অন্য উপায়। কাঠবাদাম, সয়াবিন পাউডার ও দুধ দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে দিনে অন্তত একবার মাখলে ত্বক অনেক মসৃণ হয়ে যায়। এতে শুষ্ক ভাবটা কমে যায়।
স্বাভাবিক ত্বকের বিশেষ যত্ন
অনেকে মনে করেন, যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক, তাঁদের হয়তো রূপচর্চার দরকার নেই। বিষয়টি কিন্তু একদমই তেমন নয়। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য রয়েছে বিশেষ যত্ন। আমলকী, সয়াবিনের গুঁড়া ও সামান্য একটু কাঁচা হলুদ আর মধু মিশিয়ে ঘরে প্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন।
ত্বক থাকুক তরুণ
ত্বকে বয়সের ছাপ যেন না পড়ে, সে জন্য তিল, পুদিনাপাতা, সয়াবিন পাউডার, কাঁচা হলুদ আর মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে নিয়ম করে সকালে মাখুন। এসব প্যাক ঘরে তৈরি করে ফ্রিজে রেখে অনায়াশেই কয়েক দিন ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের যত্ন
নিয়ম করে চুলে তেল দেওয়ার পরামর্শও দেন রহিমা সুলতানা। তবে শুধু নারকেলের তেল নয়, নারকেলের সঙ্গে তিলের তেল মিশিয়ে নিলে চুল ভালো থাকে। আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, ভৃঙ্গরাজ আর মেথি একসঙ্গে মিশিয়ে পিষে পেস্ট করে চুলে মেখে রাখুন। এরপর কলাপাতায় চুল পেঁচিয়ে কিছু সময় রেখে শ্যাম্পু করলে চুল হবে ঝরঝরে। আলাদা করে কন্ডিশনার ব্যবহার না করে আমলকী সেদ্ধ করে পানি ছেঁকে ওই পানি দিয়েও কন্ডিশনারের কাজ করা যায়। এই ভেষজ উপকরণগুলো বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
শুধু প্যাক তৈরি করে ত্বকে আর চুলে মাখলেই হবে না; খাবারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ত্বক সুন্দর রাখতে ভেতর থেকে ভালো থাকা প্রয়োজন। এ জন্য প্রচুর পানি আর ফল খেতে হবে। সকালে খালি পেটে থানকুনিপাতার রস কিংবা কাঁচা হলুদের রস খেলে পেট পরিষ্কার হয়, ত্বক ভালো থাকে।
নগরের বিভিন্ন পার্লার আজকাল ভেষজ বা হারবাল রূপচর্চার সেবা দিয়ে থাকে। ভেষজ রূপচর্চায় ফল একটু ধীরে পাওয়া যায়। তবে এটি সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত পদ্ধতি




সৌন্দর্যসেবা : নারীদের সফল পেশা


ছোট্ট টেবিলটিতে মন দিয়ে পড়ছিল এক কিশোরী। সামনে তার স্কুলের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। হঠাৎ পার্লারের দরজা ঠেলে কেউ ঢুকলেই সে পুরোদস্তুর পেশাদারদের মতো আন্তরিক হাসি নিয়ে বলে, �কী করাবেন আপু?�

রিনা এখন মূর্ছনা হারবাল বিউটি পার্লারের একনিষ্ঠ কর্মী। উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান এএসডি বিনামূল্যে তার থাকা-খাওয়া ও পড়ালেখার খরচের পাশাপাশি স্বনির্ভরতার জন্য দিয়েছে সৌন্দর্যসেবার প্রশিণ। তাই ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ১৪ বছরের রিনা নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে গ্রামে থাকা তার পরিবারকে সাহায্য করতে পারছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও জনপদে গড়ে ওঠা এমন বহু সৌন্দর্যসেবা কেন্দ্রে রিনার মতো হাজার হাজার নারী আত্মনির্ভরশীলতার ভিত্তি রচনা করছে।

১৯৭৭ সালে করাচি থেকে প্রশিণপ্রাপ্ত বিউটিশিয়ান জেরিনা আজগর দেশের প্রথম নারী হিসেবে বিউটি পার্লার প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হয় এ দেশের নারীদের উদ্যোক্তা ও কর্মী হিসেবে আত্মনিয়োগের এক নতুন পথ। যেখানে বছর চল্লিশেক আগেও রূপচর্চা করতে মেয়েদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার কথা চিন্তাই করা করা যেত না, সেখানে আজকের নারীর ব্যস্ত জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে বিউটি পার্লার। লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন �ক্যানভাস�-এর সাংবাদিক আহসান পাভেলের মতে, মূলত নব্বইয়ের দশকে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর বিস্তারের পর থেকেই এই ব্যবসার বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।

আইব্রোর প্লাক বা চুল কাটার মতো নিয়মিত সেবার পাশাপাশি ত্বক ও চুলের যত�, সৌন্দর্যবর্ধন ও রূপসজ্জার নানারকম সুযোগ থাকে পার্লারগুলোতে। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী বা গৃহিণী- সব ধরনের রূপসচেতন নারীর কাছেই ভালো পার্লারের চাহিদা অনেক। তাই এখন আর গুটিকয়েক নামী-দামী পার্লারের মধ্যে এ ব্যবসা সীমাবদ্ধ নেই। পাড়ার গলি থেকে মফস্বল শহরে ছড়িয়ে পড়েছে পার্লারগুলো। ঈদ, বিভিন্ন উৎসব, বিয়ে ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের সময় পার্লারগুলোতে ভিড় থাকে সবচে বেশি। তাছাড়া সারা বছর ধরেই এই ব্যবসা থেকে মুনাফা লাভের সম্ভাবনা থাকে।

রাজধানীতে পুরুষদের জন্য কিছু সৌন্দর্য সেবাকেন্দ্র চালু হলেও এখন পর্যন্ত এই ব্যবসার প্রধান উদ্যোক্তা, কর্মী ও গ্রাহক নারীরাই। বিনিয়োগের ত্রে হিসেবে বিউটি পার্লারকে বেছে নেওয়ার পেছনে এর সুবিধার কথাই জানান সলিমুল্লাহ রোডের রং-রূপ হেয়ার অ্যান্ড বিউটি পার্লারের স্বত্বাধিকারী সৈয়দা উর্মি চৌধুরী। দু বছর আগে ব্যাংকের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি এ ব্যবসায় আসেন। এখন তার পার্লারে তিনজন কর্মী কাজ করছেন। পরিচিতি বাড়ার সাথে সাথে লাভের মুখ দেখায় পার্লারটিকে আরও উন্নত করতে চান তিনি।

নারীর কর্মসংস্থানের জন্য সৌন্দর্যসেবা একটি ইতিবাচক ত্রে। এ পেশায় আসতে উচ্চশিা জরুরি নয়। এসএসসি পাস করার পর থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি খণ্ডকালীন পেশা হিসেবে এ কাজ বেছে নেওয়া যায়।

দেশের শীর্ষস্থানীয় সৌন্দর্যসেবা প্রতিষ্ঠান �পারসোনা�র কর্ণধার কানিজ আলমাস খান বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে আড়াই হাজার কর্মীর মধ্যে নব্বই শতাংশই নারী। দতা অনুসারে তাদের বেতন ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সেবা প্রদানের পাশপাশি আন্তর্জাতিক প্রশিণের জন্য আছে পার্সোনা ইন্সটিটিউট অব বিউটি অ্যান্ড লাইফস্টাইল। এখান থেকে প্রশিণ নিয়ে অনেক নারী এখন দেশের বাইরেও কাজ করছেন।

বাংলাদেশের অগ্রণী এই নারী উদ্যোক্তার মতে, পেশাগত দতা ও গ্রাহকদের প্রতি আন্তরিক ব্যবহারই এই পেশায় সাফল্যের পূর্বশর্ত।

বড় পার্লারগুলোর পাশাপাশি যে কোনো ছোট বা মাঝারি পার্লারেও প্রশিণ নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানভেদে ৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার বা তারও বেশি ফি প্রদান করতে হয়। তবে যারা এই অর্থ ব্যয় করতে সম নন তাদের জন্য নানা রকম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্থসাহায্য বা বিনামূল্যে প্রশিণের ব্যবস্থা করে থাকে। যেমন� এসএমই ফাউন্ডেশন ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সত্যিকারের আগ্রহী নারীদের বিনামূল্যে প্রশিণের সুযোগ দেয়। তারা গত বছর অক্টোবর মাসে বগুড়া, নীলফামারী, রাঙামাটি, জয়পুরহাট ও ঢাকার ২৭ জন নারীকে পার্সোনার সহযোগিতায় বিনামূল্যে প্রশিণ প্রদান করে। এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফারজানা জানান, প্রকল্প শেষে তাদের সবাই এখন ভালো কাজ করছেন।

অভিজ্ঞ উদ্যোক্তাদের মতে, যারা উদ্যোক্তা হিসাবে এই ব্যবসায় আসতে চান তাদের জন্য অর্থের পাশাপাশি বিউটিফিকেশন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। যেহেতু শহরগুলোতে এখন অনেক পার্লার আছে, তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সেবার মান নিয়ন্ত্রণ জরুরি। কেননা ভালো সেবা ও ভালো পণ্যের অভাব থাকলে কোন গ্রাহকই সেই পার্লারে যাবার ঝুঁকি নেবেন না।

ঘরোয়াভাবে বিভিন্ন সেবা দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স বা স্থানভেদে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এছাড়া কর প্রদানের জন্য প্রয়োজন হয় ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বরের। এরপর আসে পার্লারের অবস্থানের কথা। বিশেষ করে ঢাকায় বাড়িভাড়ার চুক্তি অনেক ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন স্থানে ছোট বা মাঝারি পার্লারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেককেই ন্যূনতম ১ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়েছে। মাসিক ভাড়া স্থান ও আকারভেদে বারো থেকে আঠারো হাজার টাকা। এর সাথে ডেকোরেশন, উপকরণ ও প্রসাধনীসামগ্রীসহ ন্যূনতম দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো বড় শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের অধিকাংশ পার্লারে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আদিবাসী নারী কাজ করেন। এদের মধ্যে গারো বা মান্দীদের সংখ্যা সবচে বেশি। মোহাম্মদপুরে শাহী�স বিউটি পার্লারের ১০ জন কর্মীই মান্দী নারী। টিক্কাপাড়ার স্বপ্নচূড়া বিউটি পার্লারের বিউটিশিয়ান মালার বাড়ি সিলেটে। ৫ বছর ধরে তিনি ঢাকায় বিভিন্ন পার্লারে কাজ করছেন। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপার্জিত অর্থ জমিয়ে সিলেটে ফিরে গিয়ে একটি পার্লার খোলার। তিনি জানান, ঢাকার তুলনায় অনেক কম খরচে তিনি নিজ এলাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

দেশজুড়ে এই লাভজনক ব্যবসাটি বিস্তৃত হলেও এখন পর্যন্ত বিউটি পার্লারগুলোর কোনো সমন্বিত সংগঠন নেই। ফলে এর উদ্যোক্তা ও কর্মীরা তাদের নিজস্ব সমস্যা বা প্রয়োজনগুলোর কথা তুলে ধরতে পারছেন না। এছাড়া পার্লারগুলোর মান নিয়ন্ত্রণের জন্যও কোনো কর্তৃপ নেই। অথচ নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ব্যবহার ও উপকরণের ভুল ব্যবহারের ফলে ত্বক ও স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।

এ বিষয়ে কানিজ আলমাস খান পার্লারগুলোর জন্য একটি কেন্দ্রীয় সংগঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এমনকি দেশের সর্বমোট পার্লার ও সংশ্লিষ্ট জনবলের সঠিক সংখ্যাও কারো জানা নেই। নারীকেন্দ্রিক এ খাতটির দিকে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর যথাযথ মনোযোগের মাধ্যমে একে আরও লাভজনক করা যায়। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে মফস্বল অঞ্চলগুলোতে এ খাতের বিস্তৃতির মাধ্যমে অনেক নারী অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করতে পারেন বলে মনে করেন এ পেশায় জড়িতরা।

বকের প্রয়োজনে ময়েশ্চারাইজার


ময়েশ্চারাইজার বা আর্দ্রতা ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে সতেজ রাখে। ত্বকের কোলাজেনগুলোকে সতেজ রাখে ময়েশ্চারাইজার। শীতের সময় ত্বকের স্বাভাবিক তেল নিঃসরণ কমে যায়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার জরুরি। কারণ অতিরিক্ত রোদ, ঠান্ডা, ধুলোবালি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ফলে ত্বক থাকে সজীব ও টানটান।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার
আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। শীতকালে শুষ্ক ত্বকের তেল নিঃসরণ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তাই শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিন এমন ময়েশ্চারাইজার, যাতে পানি, গ্লিসারিন ও তেলের পরিমাণ বেশি। শুষ্ক ত্বকে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম দিতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তেলমুক্ত ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করুন। যাদের ব্রণের সমস্যা আছে, তারাও তেলমুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য অল্প পরিমাণ তেল আছে, এমন ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করতে পারেন।

ভেষজ উপাদানে ময়েশ্চারাইজিং
বাজারের ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে আপনি ঘরে বসেও ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন।
- ঘৃতকুমারীর রস, গাজরের অঙ্কুর ও মৌমাছির মোম ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
- স্বাভাবিক ত্বকে মধু একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার।
- তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে মধুর সঙ্গে একটু লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
- শুষ্ক ত্বকে নারকেলের দুধ খুবই উপকারী।
- গোলাপজল ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে পারেন হাত, পা ও মুখে।
- শুষ্ক ত্বকে দুধের সর লাগাতে পারেন। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
- জলপাইয়ের তেল একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার।
- পাকা কলা বা পাকা পেঁপে মুখে কিছুক্ষণ রেখে হালকা ম্যাসাজ করতে পারেন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে। তারপর ধুয়ে ফেলুন।
- আপেল কোরার সঙ্গে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
- মেকআপ তোলার জন্য তুলার বল ভিজিয়ে তাতে নারকেল তেল ও জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
- শসার রস ও মধু মিশিয়েও ময়েশ্চারাইজার হিসেবে লাগাতে পারেন।
- টমেটোর রস একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।

ব্যবহারবিধি
সকালে ও রাতে দুবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। গোসলের পর ত্বকে ভিজে ভিজে ভাব থাকতে থাকতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। কারণ, ভিজে ত্বকে লাগালে ত্বকের অতিরিক্ত আর্দ্রতা বজায় থাকে। বাইরে বেরোনোর আগে ময়েশ্চারাইজার দিন, তারপর সানস্ক্রিন। ঘুমানোর আগে হাত, পা ও মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে খানিকক্ষণ ম্যাসাজ করুন। চোখের তলায় হালকা করে লাগান। ঠোঁটে চ্যাপস্টিক, লিপবাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। লিপস্টিক হিসেবে বেছে নিন ভিটামিন �ই� ও ময়েশ্চারাইজারযুক্ত লিপস্টিক।





নখে আঁকাআঁকি


চীনের মেয়েরা নখে নতুনত্ব আনতে নেইলপলিশ ব্যবহার করত, যা তৈরি হতো গাম, মোম ও গোলাপের পাপড়ি দিয়ে। কিন্তু পরে নখ রাঙাতে এসেছে বিচিত্র পদ্ধতি ও ডিজাইন। এখন নেইলপেইন্ট খুব জনপ্রিয়। ঘরে বা পারলারে নেইলপেইন্ট করতে পারেন।
ঘরে বসে নেইলপেইন্ট করতে প্রথমেই রং নির্বাচন করুন। কটন বল, রিমুভার, টাওয়েল, নিউজপেপার ও ক্লিয়ার নেইলপলিশ স্টোন, স্টিকার আগেই গুছিয়ে রাখুন হাতের কাছে। পেইন্ট করার সময় মনে রাখতে হবে, যেখানে বসে কাজটি করছেন, সেখানে যেন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস থাকে।
পেইন্টের শুরুতে ক্লিয়ার নেইলপলিশ লাগিয়ে নিন। নিয়ম হচ্ছে পেইন্ট বা পলিশ প্রথমে মাঝ বরাবর লম্বা করে তারপর বাঁয়ে ও ডানে লাগাতে হয়। ক্লিয়ার পলিশ শুকিয়ে গেলে পছন্দসই পেইন্ট লাগান এবং শুকান। এরপর পেইন্টের ওপর দ্বিতীয়বারের মতো ক্লিয়ার নেইলপলিশ লাগান। এভাবে আপনার পছন্দমতো নেইলপেইন্ট করতে পারেন।

স্টোন, স্টিকার ও গি্লটার
নেইলপলিশ ছাড়াও নখে স্টোন, স্টিকার ও গি্লটার লাগানো যায়। এগুলো লাগাতে টুইজার, নেইলজেল বা নেইলগাম প্রয়োজন। নেইল আর্ট দোকান থেকে ও সংগ্রহ করতে পারেন। স্টোনের পরিবর্তে ছোট ফ্ল্যাট বোতামও ব্যবহার করতে পারেন। স্টোন দুইভাবে লাগাতে হয়। প্রথমত, স্টোন বা স্টিকার গাম দিয়ে নখে লাগিয়ে শুকিয়ে নিন। এরপর তার ওপর নেইলপলিশ লাগান। নয়তো আগে নেইলপলিশ লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে তার ওপর গাম দিয়ে স্টিকার, স্টোন ও গি্লটার লাগান। এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের গি্লটারযুক্ত নেইলপলিশ পাওয়া যায়। সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।
আরেক পদ্ধতিতে গি্লটার লাগানো যায়। যেমন_নখে নেইলপলিশ লাগিয়ে তার ওপর ডাস্ট গি্লটার ছড়িয়ে দিন। শুকালে আবার ক্লিয়ার নেইলপলিশ লাগান।

নখের গয়না
নখের অনুষঙ্গ এখন বিভিন্ন ধরনের জুয়েলারি। ব্যবহার করতে নখ একটু বড় রাখতে হবে। বিশেষ ইনস্ট্রুমেন্ট দিয়ে নখ ছিদ্র করে নেইলপলিশ লাগান। পলিশ শুকিয়ে গেলে নখের ছিদ্রে গোল্ডেন, সিলভার বা যেকোনো মেটালের ছোট রিং লাগান। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, তাই নিজে চেষ্টা না করে ভালো কোনো পারলারে করান। নখে পেইন্ট করার জন্য নেইল আর্ট সপে নেইলপেইন্টের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের ব্লক ও পেন পাওয়া যায়, যার সাহায্যে আপনি আপনার নখ সুন্দরভাবে সাজাতে পারেন।





তবুও সুন্দর


সন্তানের জন্ম দিয়েছি, শরীরের যত্ন নেওয়ার সময় কোথায়? রূপচর্চা? আমার কি আর সেই দিন আছে��� না। এটা ভাবলে চলবে না। শরীরের যত্ন নিতে হবে, থাকতে হবে সুস্থ ও সুন্দর।

নারীর জীবনে মাতৃত্ব একটি গর্বিত, দৃপ্ত ও আনন্দময় অবস্থা। এ অবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে জানতে হয়। এ সময়ের এবং পরবর্তীকালীন প্রতিটি শারীরিক-মানসিক পরিবর্তন, জোয়ার-ভাটাকে গ্রহণ করতে শিখতে হয় আনন্দের সঙ্গে, সহনশীলতার সঙ্গে।
গর্ভাবস্থার রয়েছে এক অন্য রকমের সৌন্দর্য ও দীপ্তি। কে বলেছে গর্ভাবস্থা মানেই বেঢপ শরীর, উঁচু পেট, মোটা পা, ফোলা নাক, আর ভারী ওজনের চেহারা?

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চমকে ওঠা বা বিষণ্ন হওয়ার কিছু নেই। কেননা, এই পরিবর্তন, এই আকার-আকৃতি আর এই চেহারাই আপনাকে মাতৃত্বের অনাবিল স্বাদ এনে দেবে। তাই লোকের কথায় কান দেবেন না। �বাব্বাহ্‌, পাঁচ মাসেই তুমি যে মোটা হয়েছ, আর কোনো দিন ্লিম হতে পারবে না।� অথবা �বাচ্চার মা হয়েছ যখন, তখন ফিগার মেইনটেইন করার আশা বাদ দাও, এ রকম ভারীই থাকতে হয় মায়েদের।� এসব কথা যে বাসি আর পুরোনো হয়ে গেছে, তা মাধুরী দীক্ষিত, কাজল বা ব্রিটনিকে দেখেই বুঝতে পারছেন। মা হওয়ার পর মেয়েদের আর সৌন্দর্য, ফিগার বা চেহারার গুরুত্ব নিয়ে ভাবার দরকার নেই-এ ধারণাও আজ সেকেলে হয়ে গেছে। বরং ভাবুন, এই মা হওয়ার ঘটনাটি আপনার জীবনকে আরও সুন্দর, পরিপূর্ণ এবং উজ্জ্বল করে তুলছে। আপনার নারীত্বের দ্যুতি ও সৌন্দর্যকে তা বাড়িয়ে তুলছে অনেক গুণ।

পূর্বাবস্থায় ফিরে আসুন ধীরে ধীরে
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের নয় মাসে স্বাভাবিকভাবে প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন বৃদ্ধি পান-বললেন বারডেম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ রোনা লায়লা। কারও কারও ক্ষেত্রে পারিবারিক, হরমোনাল বা পানির আধিক্যের জন্য এই ওজন আরও বেশি হতে পারে। অনেক নারীই ভাবেন সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বোধকরি আগের ওজনে ফিরে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু ভাবুন, এই ওজন আপনি অর্জন করেছেন দীর্ঘ নয় মাসে। নয় দিনে কি তা কমানো সম্ভব? কাজেই ধৈর্য ধরতে হবে। প্রসব-পরবর্তী শারীরিক অবস্থার প্রত্যাবর্তন-প্রক্রিয়া চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইনভোলিউশন।
এ সময় নারীর ফুলে-ফেঁপে ওঠা জরায়ু ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসে। তলপেটের ঢিলে হয়ে পড়া ত্বক, পেশি, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো ধীরে ধীরে আগের মতো হতে থাকে। প্রসবের পর প্রথম তিন মাসে ঘটে এই ইনভোলিউশন। কিন্তু স্কীত পেট, শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও ওজন পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে আসতে আসলে আরও সময় লেগে যায়। কারও কারও হয়তো পুরোপুরি আসেও না। বিশেষ করে যাঁরা নবজাতককে নিয়ে অতিরিক্ত ব্যস্ততায় নিজের প্রতি সচেতন হওয়ার সময় পান না বা আগ্রহবোধ করেন না। তো কী ধরনের হওয়া উচিত এই নিজের প্রতি সচেতনতা? চিকিৎসক রোনা লায়লার অভিমত-
এক� প্রসব-পরবর্তী সময়ে যেহেতু মা শিশুকে স্তন্যপান করাবেন, সেহেতু তাঁর খুব বেশি খাদ্য নিয়ন্ত্রণ (ডায়েট কন্ট্রোল) করা উচিত নয়। কেননা, এ সময় একজন নারীর স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ ক্যালরি বেশি পুষ্টি প্রয়োজন। তবে চেষ্টা করুন এই অতিরিক্ত ক্যালরি যেন মূলত আসে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজযুক্ত খাদ্য থেকে। উল্টো দিকে চর্বি ও শর্করাজাতীয় খাদ্য খাবেন পরিমিত। সে কারণেই ভাত-রুটি, আলু-মাংসের পরিমাণ কমিয়ে প্রতিদিনের খাবারে প্রচুর পরিমাণে মাছ, বিশেষ করে কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, শাকসবজি, সালাদ, ফলমূল, ফলের রস রাখবেন।
দুই� ব্রেস্ট ফিডিং বা স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে মা প্রতিদিন প্রচুর ক্যালরি খরচ করেন। সত্যিকার অর্থে ব্রেস্ট ফিডিং-ই হচ্ছে মায়ের ওজন কমানোর সবচেয়ে প্রথম ও ভালো পদ্ধতি। স্তনের আকার নষ্ট হয়ে যাবে বলে বা ঝামেলা এড়ানোর জন্য যে নারী ব্রেস্ট ফিডিং করতে চান না, তাঁর চেয়ে বোকা এবং দুর্ভাগা আর কেউ নেই। কেননা, ব্রেস্ট ফিডিং শুধু শিশুর জন্যই যে দরকারি তা নয়, মায়ের হরমোনাল ও মানসিক-শারীরিক পরিবর্তনের জন্যও এটি সহায়ক।
তিন� নরমাল ডেলিভারি হলে অন্তত দেড় মাস এবং সিজারিয়ান হলে অন্তত তিন থেকে ছয় মাস কোনো প্রকার ভারী ব্যায়াম না করাই উচিত। কিন্তু প্রতিদিন হাঁটা এবং হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করাটাকে ইদানীং চিকিৎসকেরা উৎসাহই দিয়ে থাকেন। এই হাঁটাহাঁটি শুরু করা যায় একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েই। আর ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ অন্তত ছয় সপ্তাহ পরে। তলপেটের চামড়া, পেশি ও অঙ্গগুলোকে পুনরায় টাইট করার জন্য পেলভিক এক্সারসাইজও শুরু করতে হবে একেবারে প্রথম থেকে।
চার� ছয় মাস পর থেকে কেউ চাইলে জিমে গিয়ে পেটের ভারী এক্সারসাইজ, অ্যারোবিকস বা ইনস্ট্রুমেন্টাল এক্সারসাইজ করতে পারেন। জিমগুলোয় পেট কমানোর আলাদা ব্যায়াম করার ব্যবস্থা আছে অথবা তা শিখে নিয়ে করতে পারেন ঘরে বসেই।
পাঁচ� প্রসব-পরবর্তী সময়ে পেট কমানোর জন্য বাজারে যেসব বেল্ট পাওয়া যায়, আদতে এর কোনো কার্যকারিতা নেই।
ছয়� সবচেয়ে বড় কথা, আগের অবস্থায় ফিরে যেতে ধৈর্য ধরুন। অকারণে ডায়েট করে শিশুকে প্রয়োজনীয় ক্যালরি থেকে বঞ্চিত করবেন না; নিজেরও হাড়ক্ষয়, ভিটামিনের অভাব, রক্তশূন্যতা সৃষ্টি করবেন না। পর্যাপ্ত ও সুষম খাবার খান এবং প্রাথমিক অবস্থায় কেবল হাঁটুন।

যত্ন নিন শরীর ও সৌন্দর্যের
হরমোনগত পরিবর্তনের কারণেই গর্ভাবস্থায় ঘটে আরও কিছু পরিবর্তন। যেমন-ত্বক, গাল ও ঘাড়ে কালো দাগ পড়ে, যাকে বলে ক্লোঅ্যাজমা। পেট প্রসারিত হওয়ায় ত্বকের ইলাস্টিসিটি নষ্ট হয়ে ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক পড়ে, কারও কারও অত্যধিক ও অবাঞ্ছিত লোম গজায়, কারও প্রসবের পর প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রসব-পরবর্তী সময়ে এসব সমস্যা এমনিতেই মিলিয়ে যায়-বললেন পারসোনার কর্ণধার কানিজ আলমাস খান। তাই বলে নিজের যত্ন নেবেন না, তা কি হয়? ত্বক, চুল ও অন্যান্য যত্নে কানিজ আলমাস খানের পরামর্শ হচ্ছে-
এক� প্রসব ও এর পরবর্তী সময় প্রচুর পানি পান করবেন এবং তাজা ফল ও সবজি খাওয়ার অভ্যাস করবেন। এতে ত্বক ও চুল ভালো থাকবে।
দুই� সূর্যালোকে গেলে ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।
তিন� প্রচুর বিশ্রাম নেবেন। নবজাতকের জন্য সব সময় তা সম্ভব না হলেও ঘুমের সময় বের করে নেবেন নিজের মতো করে।
চার� গর্ভাবস্থায় পেটের আকার প্রসারিত হওয়ার সময় ভালো ময়েশ্চারাইজার নিয়মিত ব্যবহার করলে পেটে বেশি স্ট্রেচমার্ক পড়ে না। এ ছাড়া প্রসবের পর ব্যবহার করা যায় অ্যান্টি-স্ট্রেচমার্ক ক্রিম।
পাঁচ� প্রসবের ছয় মাস পর শরীরে অবাঞ্ছিত চুল এমনিতেই কমে যায়। তবু কেউ চাইলে সন্তান জন্মের পর ওয়েক্সিং, থ্রেডিং বা টুইজিং করাতে পারেন।
ছয়� শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের আধিক্যের কারণে গর্ভাবস্থায় নারীর চুল ঘন ও বড় হয়ে ওঠে। আবার প্রসবের পর হরমোনের প্রভাব কমে যাওয়ায় চুল পড়তে শুরু করে। এটিও একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ জন্য চুলের স্বাভাবিক যত্ন নেবেন। সুষম খাবার খাবেন। ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, বায়োটিন, আইনোসিটল, জিংক এবং কো-এনজাইম কিউ-১০ চুলের উপকারী বন্ধু। এ সময় হেয়ার ড্রায়ার, কার্লিং আয়রন, হট রোলার ব্যবহার না করাই ভালো। গর্ভকালীন ও স্তন্যপানকালে কালার, স্ট্রেইটনিং, রিবন্ডিং করাবেন না। চুল পরিষ্কার রাখুন, বড় দাঁত বা ব্রাশওয়ালা চিরুনি ব্যবহার করুন। মাসে দু-একবার প্রোটিন হেয়ার ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন।
সাত� ফিগার ঠিক করার জন্য দেড় থেকে তিন মাস পর ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ শুরু করুন। তিন-চার সপ্তাহ পর থেকেই নিয়মিত হাঁটতে শুরু করে দিন। প্রয়োজন মনে করলে ছয় মাস পর জিমে যেতে পারেন। তবে ওজন কমাতে এবং ্লিম হতে সময় নিন, ধৈর্য ধরুন। নিজের ও শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এমন কিছু করবেন না।

মাতৃত্বকে উপভোগ করুন
শিগগিরই মা হতে যাচ্ছেন যে নারী অথবা সম্প্রতি মা হয়েছেন যে নারী-এ লেখাটি তাঁদের জন্য। একবার আয়নার সামনে দাঁড়ান, নিজেকে পূর্ণ চোখ মেলে দেখুন। দেখুন, ত্বকের কালো দাগ, লোম, ডার্ক সার্কেল ভারী পা বা বেঢপ পেট নয়-দেখুন, এসব মিলিয়ে মাতৃত্বের এক অভাবনীয় সৌন্দর্য, যা আপনি নিজের মধ্যে আর কখনো দেখেননি। উপভোগ করুন এ সৌন্দর্য। আপনার স্বামী, আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব-সবাইকে এই সৌন্দর্য সম্পর্কে সচেতন ও অবহিত করুন। সুস্থ থাকুন, হাসি-খুশি থাকুন। প্রাণবন্ত ও উচ্ছ্বসিত থাকুন। পৃথিবী মুগ্ধ হবে আপনাকে দেখে। বিশ্ব সুন্দর হয়ে উঠবে আপনার সৌন্দর্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। সমস্ত জগৎ আলোকিত হয়ে হেসে উঠবে আপনাকে ও আপনার কোলে শিশুকে হাসতে দেখে।



রিবন্ডিং চুলের যত্ন


রিবন্ড করা চুল যত্নের অভাবে ভেঙে যায়, রুক্ষ হয় ও পড়ে যায়। এ জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত যত্নের। কেমন যত্ন করবেন,

শ্যাম্পু করার আগে
রাতে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল চুলে ম্যাসাজ করে দিন। এরপর মোটা দাড়ের চিরুনি দিয়ে কিছুক্ষণ চুল আঁচড়ে নিন। গোসলের আগে গরম পানিতে তোয়ালে চুবিয়ে আধা ঘণ্টা চুল পেঁচিয়ে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করুন। এতে রক্ত সাঞ্চালন বাড়বে। চুলের রুক্ষভাব কমবে।

শ্যাম্পু করা
সপ্তাহে অন্তত তিনবার শ্যাম্পু করুন। কারণ এ ধরনের চুল খোলা রাখায় দ্রুত ময়লা হয়। তবে বেশি শ্যাম্পু করায় চুল রুক্ষ হলে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার দিন।

উপযোগী প্যাক
ডিম একটা, ক্যাস্টর অয়েল এক চামচ, লেবুর রস এক চামচ, মধু এক চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে লাগান। এরপর শাওয়ার ক্যাপ বা তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন।

সমস্যা ও সমাধান
হচুল নিস্তেজ হয়ে পড়লে শ্যাম্পু করার পর দুই লিটার পানিতে কয়েক ফোঁটা ভিনেগার মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এতে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়বে। হচুল ভেঙে গেলে সপ্তাহে একবার হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। হখুশকির সমস্যা বাড়লে মাথার স্ক্যাল্পে লেবু বা পেঁয়াজের রস লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। হচুল রুক্ষ হলে গোসলের পর এক মগ পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। চুল মসৃণ হবে। হচুল সিল্কি করতে চার কাপ পানিতে চা-পাতা ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে ছেঁকে সেই পানিতে চুল ধুয়ে নিন।


নখের যত্ন ও সাজ


নেইলপলিশ ছিল মেয়েদের দখলে, এখন ছেলেরাও ব্যবহার করছে। নখ সাজাতে এবং এর যত্ন নিতে বিভিন্ন পদ্ধতি, ডিজাইন ও রং ব্যবহৃত হচ্ছে। ঘরে বসেও হাত ও নখের যত্ন নিতে পারেন। যত্ন নিতে প্রয়োজন নেইলবার্নিশ, তুলা, হ্যান্ডক্রিম, নেইলফাইল, কিউটিকল অয়েল, সল্ট, নেইলব্রাশ, নেইলকাটার ও বাফার।

এক-দেড় ঘণ্টা সময় নিয়ে ম্যানিকিউর করুন।

* প্রথমে নেইলকাটার দিয়ে নখের অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলুন। নেইলফাইলে নখ ঘষে পছন্দমতো আকারে নিয়ে আসুন, নখ সহজে ভাঙবে না।
* পাত্রে উষ্ণ পানিতে শ্যাম্পু, লবণ ও লেবু মিশিয়ে হাত ভিজিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।
* ব্রাশ দিয়ে হাত ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
* হাত পাঁচ মিনিট স্ক্রাব ম্যাসাজ করুন।
* এবার বাফার দিয়ে নখের ওপর লেগে থাকা ময়লা ঘষে পরিষ্কার করুন।
* লোশন দিয়ে আঙুল পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করুন।

ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর হচ্ছে নখের আসল রংকে হাইলাইট করা। নখের মাথায় সাদা বা যেকোনো রং লাগান। তবে ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরের ন্যাচারাল লুক ছাপিয়ে একাধিক রঙের মিশ্রণ এখন জনপ্রিয়। অ্যাক্রিলিক নেইল নখের ফ্যাশনে নতুন সংযোজন অ্যাক্রিলিক নেইল। এর সাহায্যে নখ বড় করা যায়। অ্যাক্রিলিক গাম দিয়ে আসল নখের ওপর এমনভাবে সেট করা হয়, মনে হবে আসল নখ। ফেইক নেইল নখ রাখতে সমস্যা হলে বা নখ ছোট হলে ফেইক নেইল লাগান। ফেইক নেইল সাধারণত সাদা ও যেকোনো আকারের হয়। প্রথমে আঙুলের সঙ্গে মিলিয়ে নখের মাপ নিয়ে কেটে ফাইল করুন। এবার নেইল গাম দিয়ে নখের ওপর লাগান। চাইলে নেইলপলিশও লাগাতে পারেন। নখের আকৃতি নখ সব সময় মিডিয়াম লেন্থে রাখুন, নেইলপলিশ লাগাতে সুবিধা হবে। নখের লেন্থ যা-ই হোক না কেন, তা যেন আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানায়। এখন স্কয়ার শেপের নেইল জনপ্রিয়।

নেইলপেইন্ট নেইলপেইন্ট খুব জনপ্রিয়। ঘরে বা পারলারে নেইল পেইন্ট করা যায়। নেইল পেইন্ট করতে প্রথমে রং নির্বাচন করুন। কটন বল, রিমুভার, তোয়ালে, খবরের কাগজ ও ক্লিয়ার নেইলপলিশ স্টোন ও স্টিকার গুছিয়ে হাতের কাছে রাখুন। পেইন্টের শুরুতে ক্লিয়ার নেইলপলিশ লাগান। পেইন্ট বা পলিশ প্রথমে মাঝ বরাবর লম্বা করে তারপর বাঁয়ে ও ডানে লাগান। ক্লিয়ার পলিশ শুকিয়ে গেলে পছন্দসই পেইন্ট লাগান এবং শুকিয়ে নিন। পেইন্টের ওপর দ্বিতীয়বার ক্লিয়ার নেইলপলিশ লাগান। স্টোন, স্টিকার ও গি্লটার নেইলপলিশ ছাড়াও নখে স্টোন, স্টিকার ও গি্লটার লাগানো যায়। এগুলো নখে লাগাতে টুইজার, নেইলজেল বা নেইলগাম প্রয়োজন। স্টোনের পরিবর্তে ছোট ফ্ল্যাট বোতামও ব্যবহার করতে পারেন। স্টোন দুইভাবে লাগানো যায়। প্রথমত স্টোন বা স্টিকার গাম দিয়ে নখে লাগিয়ে শুকান। তার ওপর নেইলপলিশ লাগান। আগেও নেইলপলিশ লাগিয়ে নিতে পারেন। শুকিয়ে গেলে তার ওপর গাম দিয়ে স্টিকার, স্টোন ও গি্লটার লাগান। বাজারে বিভিন্ন ধরনের গি্লটারযুক্ত নেইলপলিশ পাওয়া যায়, তাও ব্যবহার করতে পারেন। আরেক পদ্ধতিতে গি্লটার লাগানো যায়।

প্রথমে নখে নেইলপলিশ লাগিয়ে তার ওপর ডাস্ট গি্লটার ছড়িয়ে দিন। শুকালে আবার নেইলপলিশ লাগান। নেইল-অ্যাঙ্সেরিজ গয়নার দোকানে নখের বিভিন্ন অনুষঙ্গ পাওয়া যায়। তবে নখ বড় রাখতে হয়। তারপর বিশেষ ইনস্ট্রুমেন্ট দিয়ে নখ ছিদ্র করুন। নেইলপলিশ লাগান। পলিশ শুকিয়ে গেলে নখের ছিদ্রে সোনালি, রুপালি বা যেকোনো মেটালের ছোট রিং পরুন। ঝুঁকিপূর্ণ তাই নিজে চেষ্টা না করে সেলুনে করান। নখে পেইন্ট করার জন্য নেইল আর্ট সপে নেইলপেইন্টের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের ব্লক ও কলম পাওয়া যায়। এগুলোর সাহায্যেও নখ সাজাতে পারেন।






ঝকঝকে সাদা দাঁতের জন্য


দাঁত থাকতে নাকি দাঁতের মর্যাদা দিতে হয়। কথাটা যে মোটেও মিথ্যে নয়—এটা সবাই জানেন। তার পরও আমাদের আলসেমি-অবহেলায় দাঁতের বারোটা বেজে গেলে আমরা ছুটে যাই চিকিৎসকের কাছে। একটু সতর্ক হলেই কিন্তু দাঁত সম্পর্কিত যেকোনো ঝামেলাই এড়ানো সম্ভব। আর ঝকঝকে সাদা দাঁত কে না চায়? দাঁত সাদা রাখার তেমনি কিছু তরিকা জেনে নিন
 যাদের রেড ওয়াইন, চা, কোমল পানীয় সিগারেটের অভ্যাস আছে তাদের দাঁত ঝকঝকে সাদা হবে এমনটা আশা না করাই ভালো। এ উপাদানগুলো আলগোছে এক ধরনের দাগ ফেলে দেয় দাঁতে। তাই যেসব খাবারে দাঁতে দাগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে তা খাওয়ার পরেই চট জলদি দাঁত ব্রাশ করে ফেলতে হবে। নতুবা এই হালকা দাগই একসময় স্থায়ী হিসেবে বসে যাবে দাঁতে।

 একটানা অনেক দিন ধরে একই টুথব্রাশ ব্যবহার করা একদমই উচিত না। বহু ব্যবহূত টুথব্রাশ মুখে ব্যাকটেরিয়া ডেকে আনে আর দাঁতও ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না। তাই প্রতি দুই মাস অন্তর টুথব্রাশ পাল্টে ফেলা উচিত।

 দাঁত সাদা করতে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন। ভ্রু কুঁচকে না থেকে আস্তেধীরে শুনুন, সপ্তাহে অন্তত একবার বেকিং সোডা টুথপেস্টের মতো ব্যবহার করে দাঁত মেজে ফেলুন, দাঁত সাদা হবে আরও। তবে সোডা গিলে ফেলাটা কিন্তু ঠিক হবে না।

 টুথপেস্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায় লবণ। এটিও দাঁত পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। আর এভাবে দাঁত ব্রাশের পর অবশ্যই মুখের লবণটুকু ফেলে দিতে হবে।
যাদের উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা আছে তাদের লবণ দিয়ে দাঁত ব্রাশ না করাই ভালো।

 প্রতিদিন সকালে দাঁত ব্রাশের আগে আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁত ঝকঝকে হবে। সেই সঙ্গে দাঁত ও মাড়ির ব্যাকটেরিয়াও দূর হবে। ভিনেগার দাঁতের লালচে দাগ দূর করে দাঁতের সৌন্দর্য বাড়াতে পারে।

 আপেলকে বলা হয় প্রাকৃতিক টুথব্রাশ। খাওয়াদাওয়ার পরে একান্তই যদি দাঁত ব্রাশ করার সুযোগ না থাকে। একটি আপেল কিন্তু দাঁত ব্রাশের কাজ করে দিতে পারে। এ ছাড়া আছে গাজর। পপকর্নও দাঁত পরিষ্কার করতে পারে। এই খাবারগুলো তাই ভূরিভোজের পরের দিকেই রাখুন।



শীতকালেও তরতাজা সজীব ঠোঁট


গোলাপের পাঁপড়ির মতো ঠোঁট। কমলার রোয়ার মতো ঠোঁট -কত যে উপমা! ঠোঁটকে আরো রহস্যময় করতে কত যে প্রসাধনের ব্যবহার! চেহারাকে আবেদনময় করতে ঠোঁটকে প্রতিনিয়ত নতুন রূপে উপস্থাপন করার প্রয়াস! ঠোঁট আমাদের সৌন্দর্য্যরে অন্যতম একটি অংশ। ঠোঁট মিউকাস মেমেব্রেন দ্বারা আবৃত। ঠোঁটে কোন তৈল গ্রন্থি থাকে না। এখন শীতকাল। সারাবছর ঠোঁটের যত্ন নিয়ে তেমন একটা না ভাবলেও এখন ঠোঁট নিজেই এখন উপযাচক হয়ে আমাদের ভাবাচ্ছে। ঠোঁটের ত্বক ভীষণ স্পর্শকাতর এবং নরম। ঠান্ডা, গরম, সূর্যরশ্মি , দূষণ সবকিছুই ঠোঁটের জন্য ক্ষতিকর। শীতকালে ঠোঁটের যন্ত্রনায় ভোগেননি এমন মানুষ পাওয়া যাবেনা। কারণ হলো শীতের বৈরি আবহাওয়ায় ঠোঁটের ত্বক তার স্বাভাবিকত্ব হারিয়ে ফেলে। হয়ে পড়ে লাবন্যহীন ও নিষ্প্রাণ। শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণেই ঠোঁট চিরচিরে হয়ে ফেটে যায়। চামড়া উঠতে থাকে। শীতের যন্ত্রনাদায়ক এই অনুভূতি থেকে রেহাই পেতে অবশ্যই ঠোঁটের যত্ন নিতে হবে।

বদঅভ্যাস দুরে রাখুন: মানুষের কিছু কিছু বদঅভ্যাস ঠোঁটকে পীড়া দিয়ে থাকে। শীতকালে ত্বক যারপর নাই পানিশূণ্য হয়ে পড়ে। কথা বলতে গেলে অথবা হাসতে গেলেই টের পাওয়া যায় ঠোঁটের শোচনীয় অবস্থা। তখন শুষ্ক ঠোঁট নিয়ে কি করবেন না করবেন ভেবে পান না। চলতে ফিরতে নানান কাজে আপনারা যখন বাড়ির বাইরে থাকেন তখন আপনাদের বেশিরভাগই ঠোঁট যত্নের প্রয়োজনীয় উপাদান সঙ্গে রাখেন না। এ অবস্থায় অনেকেই আছেন ঠোঁটের শুষ্কতা কমাতে জিব দিয়ে ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে নেন। সমস্যার শুর“টা হয় এখান থেকেই। কিছুক্ষনের মধ্যেই ঠোঁট আরো শুষ্ক হয়ে ওঠে। তবে ঠোঁটের চামড়া দাঁত দিয়ে অথবা হাত দিয়ে টেনে তোলা উচিত না। ঠোঁটের চামড়া অত্যন্ত নরম। বারবার চামড়া টেনে তোলার ফলে ঠোঁটে দীর্ঘ¯’ায়ী ক্ষত হয়ে যায়। ছোপ ছোপ দাগ পড়ে। আবার নারী পুর“ষ নির্বিশেষে অনেকেই আছেন ধুমপায়ী। ধূমপানের ফলেও ঠোঁট শুষ্ক হয় এবং ফেটে যায়। এছাড়া গরম চা কফি পান করেন তাদের ক্ষেত্রের এই সাবধানতা জর“রী। অতিরিক্ত গরম চা কফি পান ঠোঁটের সুস্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো না। বদঅভ্যাস গুলোকে খুব সচেতনভাবে মোকাবেলা করতে হবে। কারণ আমরা নিজের অজান্তিতেই এসব করে থাকি।

ঠোঁটের যত্ন: ঠোঁটকে সুন্দর ও মসৃণ রাখতে শীত আসার আগে থেকেই আমাদের যত্ন নিতে হবে। দিনে কমপক্ষে ৩-৪ বার ইমোলিয়েন্ট, পেট্রোলিয়াম জেলি, প্লিসারিন, চ্যাপস্টিক অথবা তৈলাক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জর“রী। মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা সারাবছর লিপগ্লস বা লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকেন। ঠোঁটে ব্যবহারের উপাদান ভাল মানের না হলে ঠোঁটে অ্যালার্জি এমনকি ঠোঁট কালোও হয়ে যেতে পারে। শীতকালে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করবেন না। ওয়েলবেসড্ লিপস্টিক ব্যবহার আপনাকে ভাল অনুভব দেবে। ঠোঁট ফাটা এবং ঠোঁটের কালো ভাব দুর করতে আমরা নিম্নোক্ত কিছু টিপস্ কাজে লাগাতে পারি।

১.কাটবাদাম বাটা এবং দুধের সর একত্রে লাগালে ঠোঁট হয়ে উঠবে নরম সুন্দর।
২. ঠোঁটের ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে মাখন খুবই ভাল। ঠোঁটকে নরম রাখতে মাখনের জুড়ি নেই।
৩.গোলাপের পাঁপড়ি ও গ্লিসারিন মিশিয়ে লাগালে ঠোঁটের কালো ভাব চলে যায়।
৪.রাতে শোবার আগে বিট অথবা লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁটের কালো ভাব দুর হয়।
৫.রাতে শুতে যাওয়ার আগে নারিকেল তেল,চন্দন বাটা ও গোলাপ জল একত্রে ঠোঁটে লাগাতে পারেন।
৬.সাবান অথবা ফেসওয়াস আপনার ঠোঁটের ত্বকের জন্য সঠিক কিনা সেটা বুঝে নিন।
৭. ভিটামিন বি’ সমৃদ্ধ শাক সবজি, ফলমূল এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে।
৮.প্রতিবার টুথব্রাশের সময় পেষ্ট ঠোঁটে লেগে যায়। টুথপেস্টটি আপনার ঠোঁটের জন্য উপযোগী কিনা সেটা যাচাই কর“ন। সাধারণত সাদা রঙের টুথপেস্ট ঠোঁটের জন্য ভাল হয়।
৯.গ্লিসারিন ,অলিভ ওয়েল, মধু, গোলাপজল একত্রে লাগালে ঠোঁটের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
১০.মুলতানি মাটি, মধু ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে লাগালে ঠোঁটের কালচে ভাব দুর হয়।
১১.চালের গুড়া পানিতে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। আস্তে আস্তে ঘষে ঠোঁটের মরা চামড়া তুলে ফেলুন।
১২. বাইরে যাওয়ার সময় ঠোঁটে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না।
১৩.লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপজেল লাগিয়ে কিছুক্ষন পর টিস্যু দিয়ে মুছে নিন। তারপরে ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ লিপস্টিক ব্যবহার কর“ন।
১৪.শসা ও পাতিলেবুর রস একত্রে নিয়মিত লাগালে ঠোঁটের কালচে ভাব দুর হয়।
১৫.ময়দা,লেবুর রস ও দুধ মিশিয়ে ১০ মিনিট ঠোঁটে লাগিয়ে আঙ্গুল দিয়ে অস্তে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুদিন এই টিপস্ অ্যাপ্লাই করলে মরা চামড়ার হাত থেকে রেহাই পাবেন।

নিয়মিত ঠোঁটের চর্চা এই শীতেও ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার কবল থেকে আপনাকে নিরাপদে রাখবে। সৌন্দর্য চর্চা একান্তই নিজের কাছে সুন্দর একটি অনুভব, পাশাপাশি সবাই মনে মনে চান প্রিয়জনের কাছে মুগ্ধতা আদায় করতে। নিত্যদিনের ব্যস্ত সময় থেকে মাত্র কয়েক মিনিট সময়তো চাইলে আপনি বের করতেই পারেন। এমন তো কিছু না! অবসরের কত সময় তো আমরা টিভি দেখেই কাটিয়ে দেই। একটু সচেতনতা, নিজের প্রতি একটু ভালবাসা প্রিয়জনের কাছে আপনাকে অনিন্দ্য সুন্দর করে তুলতে পারে। সুন্দর থাকুন সবসময়।









«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply