Sponsor



Slider

দেশ - বিদেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস , যক্ষ্মা ,অ্যাজমা বা হাঁপানি কিভাবে বুঝবেন হয়েছে কিনা?






 ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস , যক্ষ্মা  ,

 ,অ্যাজমা বা হাঁপানি  কিভাবে বুঝবেন হয়েছে কিনা?







অ্যাজমা বা হাঁপানি ।

দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ এবং সংবেদনশীলতায় স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় যাকে বলে হাঁপানি বা অ্যাজমা । অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট এমন একটা রোগ যার নির্দিষ্ট কোন কারণ জানা না গেলেও চিহ্নিত করা হয়েছে প্রধানত ২ টি কারণকে বলে জানালেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা.শাহরিয়ার জামান দীপ ।

১) ‘এটোপি’ বা বংশগত (Genetic) ও ‘এলার্জি’ পরিবেশগত উপাদান এবং

২) শ্বাসনালীর অতি-সক্রিয়তা (Bronchial hyper-responsiveness)

পৃথিবীজুড়ে ৩০ কোটি লোক অ্যাজমায় আক্রান্ত, যা ২০২৫ সাল নাগাদ ৪০ কোটিতে পৌছবে । বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ । যার মধ্যে ৪০লাখই শিশু ।

৬৫% মানুষের আক্রান্ত হবার কারণ এলার্জি । যুবক বয়সে অ্যাজমা আক্রান্তের হার ১৫% । পেশাগত ভাবে ‘potent sensitizer’ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫-২০% এজমায় আক্রান্ত হয় ।

অ্যাজমা রোগের লক্ষণ চেনার উপায় ।

- শ্বাসকষ্ট, সাথে শুকনো কাশি ।

- শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বাঁশির মতো সাঁ সাঁ শব্দ ।

- হঠাৎ দমবন্ধ ভাব অনুভব করা ।

- ধুলোবালি বিশেষভাবে ঘরের ধুলো, ঠাণ্ডা কিংবা গরমের কারণে শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট ।

- ঋতু পরিবর্তনের সময় শ্বাসকষ্ট ।

- বিটাব্লকার বা অ্যাসরিন জাতীয় ওষুধ খেলে শ্বাসকষ্ট ।

চিকিৎসার জন্য দরকার প্রথমেই রোগ নির্ণয় । রক্ত পরীক্ষায় বিশেষত ইয়োসিনোফিল এবং সিরাম আইজিইয়ের মাত্রা বেশি থাকে আছে কিনা দেখা হয় অ্যাজমা নির্ণয়ে ।

এবং এলার্জির জন্য স্কিন প্রিক টেস্ট করা হয় । এ পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন এলারজেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এ পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে তা ধরা পরে । বুকের এক্স-রে করে দেখা হয় যে অন্য কোন কারণে রোগীর শ্বাসকষ্ট কি না তা জানতে । কিছু কিছু বিষয়ে সচেতনতা হাঁপানি থেকে দূরে রাখে ।

১. এলাজেন পরিহার : অ্যাজমার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো যে জিনিসে এলার্জি তা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলা । তাই এজমা রোগীদের প্রথমেই এলার্জি টেস্ট করে জানা দরকার তার কিসে কিসে এলার্জি হয় ।

২. ওষুধপত্র : নানা ধরনের হাঁপানির ওষুধ আছে । প্রয়োজন মতো ওষুধ ব্যবহার করে রোগী সুস্থ থাকতে পারেন । সাধারণত দুই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয় ।

ক) শ্বাসনালির সঙ্কোচন বন্ধ করতে ওষুধ ব্যবহার করা, যেমন ব্রঙ্কোডাইলেটর, নালবিউটামল, থিউফাইলিন, ব্যামবুটারল

খ) প্রদাহ নিরাময়ের ওষুধ, যেমন কার্টিকোস্টেরয়েড (বেকলোমেথাসন, ট্রাইএমসিনোলোন, ফ্লোটিকাসন) এগুলো ইনহেলার, রোটাহেলার, একুহেলার ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং লিউকোট্রাইন নিয়ন্ত্রক মন্টিলুকাস্ট , জেফিরলুকাস্ট ব্যবহার করা ।

৩. এলার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : এলার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন ও অ্যাজমা রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি । এ পদ্ধতি ব্যবহার কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায় । ফলে কর্টিকোস্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও রেহাই পাওয়া যায় । বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে । বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ ভ্যাকসিন পদ্ধতি চিকিৎসাকে এজমার অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করে । এটাই অ্যাজমা রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি । বর্তমানে বাংলাদেশেও এ পদ্ধতিতে চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হয় ।

প্রতিকারের উপায়ও বলে দিলেন ডা. দীপ ।

১. এলার্জি কারক বস্তু এড়িয়ে চলুন । যেমনঃ ধুলো, বালি, ঘরের ঝুল, ধোঁয়া ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন ।

২. ঘর বাড়িকে ধুলো বালি থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করা । এজন্য দৈনিক অন্তত একবার ঘরের মেঝে, আসবাপত্র, ভেজা কাপড় দিয়ে মুছতে হবে অথবা ভ্যাকিউম ক্লিনার ব্যবহার করা ।

৩. ঘরে কার্পেট রাখবেন না ।

৪. বালিশ, তোষক, ম্যাট্রেসে তুলা ব্যবহার না করে স্পঞ্জ ব্যবহার করা ।

৫. শীতকালে যথা সম্ভব গরম পানিতে গোসল করা ।

৬. ধূমপান করবেন না ।

৭. যেসব খাবারে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তা পরিহার করে চলুন ।

৮. ঠাণ্ডা খাবার, আইসক্রিম ইত্যাদি খাবেন না ।

৯. মানসিক চাপ, উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তাকে ইতিবাচক মনোভাবে মানিয়ে চলুন । কিংবা মানসিক চাপের কারণকে এড়িয়ে চলুন ।

১০. পেশাগত কারণে অ্যাজমা হলে চেষ্টা করতে হবে স্থান কিংবা পেশা পরিবর্তন ।

১১. পরিশ্রম কিংবা খেলাধুলার কারণে শ্বাসকষ্ট বাড়লে চেষ্টা করতে হবে পরিশ্রমের কাজ কম করতে ।

১২. সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করবেন । ইতিবাচক মন আপনাকে ভালো থাকতে সাহায্য করবে ।

১৩. রেণু পরিহারে সকাল কিংবা সন্ধ্যা বাগান এলাকায় কিংবা শস্য ক্ষেতের কাছে যাবেন না ।

১৪. রেণু এলাকা থেকে বাসায় ফিরে মাথার চুল ও কাপড় ধুয়ে ফেলুন ।

১৫. কুকুর বিড়াল বাগান থেকে রেণু বহন করতে পারে । এজন্য নিয়মিত কুকুর বিড়ালকে গোসল করানো প্রয়োজন ।

কিভাবে বুঝবেন ম্যালেরিয়া হয়েছে কিনা?



দুই প্রজাতির মশার মধ্যে স্ত্রী এনোফিলিস মশার কামড়ে দেহে প্রবেশ করে স্যালাইভা । তারপর প্রোটিস্ট নামক অনুজীবের মাধ্যমে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে পরজীবি,দেখা দেয় ম্যালেরিয়া । মে থেকে অক্টোবরে মানুষের ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা বেড়ে যায় প্রায় ১০গুন । সাধারণত ফলমূলের রস মশার খাবার হলেও গর্ভকালে পুষ্টির জন্য দরকার হয় রক্তের । এই ক্ষেত্রে এনোফিলিসের প্রথম পছন্দ মানবদেহ । মশার কামড়ে এই রোগটি হয় এবং জ্বর এর প্রধান লক্ষণ তাই ম্যালেরিয়া জ্বর নামেই প্রচলিত রোগটি ।

কিভাবে বুঝবেন ম্যালেরিয়া হয়েছে কিনা? ব্র্যাকের উর্ধতন কর্মসূচী ব্যবস্থাপক ডা.মোক্তাদির কবীর বললেন,শরীরে ক্লান্তির সাথে দুইদিনের বেশী কাপুনিসহ জ্বর কিংবা হজমের সমস্যা সাথে রক্ত শূণ্যতা, কিডনি সমস্যা, শ্বাস কষ্ট, জন্ডিস, খিঁচুনি, রক্তে গ্লুকোজ কমে যেতে পারে ম্যালেরিয়ার লক্ষণ হিসেবে ।

বাইট-ডা.কবীর।(১)

শুধুমাত্র জ্বর দেখে ২৫ভাগ ম্যালেরিয়া সনাক্ত হয় বাকি ৭৫ ভাগ লক্ষণের উপর নির্ভর করে বলে জানালেন,আইসিডিডিআরবি’র বিজ্ঞানী ডা.ওয়াসিফ আলী খান।

বাইট-ডা.ওয়াসিফ।(১)

ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুহারে এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশ পূরণ করেছে ২০১২ সালেই । কথা ছিল ২০১৫ তে যা পূরণ করার । জাতীয় ম্যলেরিয়া নিয়ন্ত্রন কর্মসুচীর পরিসংখ্যান বলছে, এখনো দেশের ১৩টি জেলার প্রায় ১কোটি লোক ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন । এই সময়টাতে গর্ভবতী মায়েদের অসচেতনতার কথা বললেন ডা.ওয়াসিফ ।

বাইট---ওয়াসিফ বাইট -২(২)

নিজেদের সচেতনতা সর্বপ্রথম দরকার যেকোন রোগ থেকে বাঁচতে । বাড়ির গাছের টব ও জলাধার গুলো শুকনো ও পানি শূন্য রাখা,বৃষ্টির পানি এবং স্বচ্ছ পানি কোথাও যেন না জমে থাকে,সেদিকে লক্ষ্য রাখাঁ ।

ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সব হাসপাতালেই । বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল এবং পাহাড়ী এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রাদূর্ভাব বেশী তাই থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক অথবা জেলা হাসপাতালগুলোতে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য যেতে পারেন । কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে । মশা নিধনে সবগুলোর সংস্থার সমন্বয়ের কথা বললেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রন কর্মসুচীর বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড.জহিরুল করীম।

বাইট—জহিরুল(২)

শহর কিংবা গ্রাম মশা মুক্ত নিশ্চিন্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে মানুষের ভূমিকাই মুখ্য । তাতে করে ঝুঁকি মুক্ত থাকবে আপনার আমার পরিবার মশাবাহিত রোগ থেকে ।

 


সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করুণ- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন

ডায়াবেটিস বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বে ৩৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। উন্নত দেশে সাধারণত বেশি বয়সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে ৩৫ থেকে৬৪বছরের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুসারে, গত বছর (২০১৫) বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ছিল ৭১ লাখ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও ৩৫ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে অনেকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ব্যর্থ হচ্ছেন। এই বাস্তবতায় ‘সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করুণ : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গত ৭ এপ্রিল বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে শিশুকাল থেকেই সুশৃঙাখল জীবন যাপন, নিয়মিত খেলাধুলা, পরিমিত ব্যায়াম, নিয়মিত হাঁটা এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, স্বাস্থ্যকর খাবার আর ফিজিক্যাল এক্টিভিটি করলে তুলনামূলক ডায়াবেটিস কম হতে দেখা যায়। তাই এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কারণ এর বিকল্প হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীকে কঠোর নিয়ম ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আর দরিদ্র মানুষের জন্য তা অসহনীয়। এজন্য সুষম খাবার ও ফিজিক্যাল এক্টিভিটি করা উচিত।

ডায়াবেটিস শুধু বড়দের নয় ছোটদেরও হয়। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা যেন বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও সচেতনতার আওতায় আনতে পারি।

উপযুক্ত বা সুষম খাবার, শারীরিক পরিশ্রম, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান বর্জন ও সুশৃঙ্খল জীবন যাপনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিসজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আসুন সচেতন হই, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করি।


শিশুর পঠন দক্ষতা বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ জরুরি।


বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়ায় স্কুলে যায় না এমন শিশুর সংখ্যা খুব কম। তবে শিশুর পঠন দক্ষতা যথাযথভাবে বাড়ছে না বলে এখনও দেশের প্রারম্ভিক ও প্রাথমিক শিক্ষার মান হতাশাজনকই রয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ‘রুম টু রিড’ এর শিশু শিক্ষার্থীদের বাংলা পঠন দক্ষতা নিয়ে এক রিপোর্টে দেখা গেছে, আমাদের দেশে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উঠে শিক্ষার্থীরা শব্দ বুঝে উচ্চারণ করে মিনিটে ৩৩টি শব্দের বেশি পড়তে পারে না। অথচ আন্তর্জাতিকভাবে শিক্ষার এই ধাপে শব্দ বুঝে মাতৃভাষা উচ্চারণ করে পড়তে পারার হার মিনিটে ৪৫ থেকে ৬০টি শব্দ।

প্রারম্ভিক শিক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বুঝে পড়ার দক্ষতা যা শিক্ষার গুণগত মান নির্দেশ করে। তাই সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের পঠন দক্ষতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় শিশু বিকাশ ও শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ কার্যক্রম সিসিমপুর ২০১৪ সাল থেকে নরসিংদীতে শিশুদের সামষ্টিক পঠন (কম্প্রিহেনসিভ রিডিং) দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনী পর্যন্ত ৮ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে বুঝে পড়তে সক্ষম করে তোলা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ‘সিসিমপুর’ এর কর্মসূচী পরিচালক শান্তিময় চাকমা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর নরসিংদীর রায়পুরা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পঠন দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছি। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উপকরণ ও পড়ানোর কৌশলের উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে যাতে শিশুরা স্বাস্থ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বার্তা সহজে বুঝতে পারে। যেমন শিশুদের হাত ধোয়ার গুরুত্ব বোঝাতে কখন ও কেন হাত ধুতে হবে সে বিষয়ে ছবিসহ তথ্য দিচ্ছি।

সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের পঠন দক্ষতাকে গুরুত্ব দেয়া হলেও শিক্ষক স্বল্পতা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের অভাব, উপকরণের অভাবসহ নানা কারণে জাতীয়ভাবে শিশুদের পড়ার দক্ষতা নিয়ে কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এতে শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে সংকট ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এজন্য পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও কার্যকর উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।


সচেতন হলেই যক্ষ্মা প্রতিরোধ সম্ভব।


সারা বিশ্বে যক্ষ্মা রোগের বিস্তার ও সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়। ‘ঐক্যবদ্ধ হলে সবে, যক্ষ্মামুক্ত দেশ হবে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে যক্ষ্মা নির্মূলের প্রত্যয় নিয়ে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে।

আইসিডিডিআরবি’র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও টিবি ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধান ডা: সায়েরা বানুর সঙ্গে কথা হলো বাংলাদেশের যক্ষ্মা পরিস্থিতি নিয়ে। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার মধ্যে দেড় লাখের বেশি রোগী এখনও সনাক্ত করতে পারছি না। অথবা জাতীয় যক্ষ্মা কার্যক্রমের অধীনে আমরা আনতে পারছি না। ধারণা করা হয়, প্রতি বছর এদেশে ৮০ হাজারের বেশি রোগী যক্ষ্মায় মারা যাচ্ছে।

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে ২০১৫ সালে দুই লাখ ৬ হাজার ৯১৯ জন যক্ষ্মারোগী সনাক্ত হয়েছে। শিশু যক্ষ্মারোগী সনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ১০৩ জন। এছাড়া ২০১৪ সালে এনটিপির মাধ্যমে কফে জীবাণুযুক্ত যক্ষ্মারোগীর চিকিৎসার সাফল্যের হার ছিল ৯৪ শতাংশ। এসবই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সম্মিলিতভাবে যক্ষ্মা নির্মূলে কাজ করার সাফল্য।

এ প্রসঙ্গে ডা: সায়েরা বানু বলেন, ২০০১ সাল থেকে সনাক্ত হওয়া যক্ষ্ম রোগীদের চিকিৎসার আওতায় আনতে পেরেছি এবং বিনা পয়সায় ভাল ঔষধ দিতে পারি। স্বাস্থ্যকর্মীদের সরাসরি সুপারভিশনে এই ঔষধ খাওয়ানো হয়। এবং এক্ষেত্রে আমাদের শতভাগ কভারেজ রয়েছে।

যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, একটি সমস্যা হচ্ছে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা (মাল্টি ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট টিবি-এমডিআর টিবি) যা প্রচলিত ওষুধে কাজ করে না এবং এটিও আমরা ৭০ শতাংশের বেশি সনাক্ত করতে পারছি না। ফলে যক্ষ্মার জীবাণু একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ছে।

জেলখানা, বস্তিসহ বিভিন্ন ঝুকিঁপূর্ণ জায়গায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী পৌছুঁতে পারছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কিছু হার্ড টু রিচ এরিয়া আছে যেখানে পৌছুতে পারলেও যেটা দরকার করতে পারছি না। আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ, প্রাইভেট সেক্টরের রোগীগুলো ঠিকমতো সনাক্ত হচ্ছে না। আবার সনাক্ত রোগীদেরও জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর আওতায় আনতে পারছি না।

বাংলাদেশে এখনও অর্ধেক যক্ষ্মা রোগী সনাক্ত করা যাচ্ছে না। আর যক্ষ্মা সংক্রামক রোগ হওয়ায় আমরা সবাই ঝুকিঁতে রয়েছি। তবে একটু সচেতন হলেই যক্ষা প্রতিরোধ সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, যক্ষার প্রধান লক্ষণ কাশি। তাই তিন সপ্তাহের বেশি সময় কারো কাশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অথবা স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিবি’র জন্য ডট সেন্টারে গিয়ে কফ পরীক্ষা করাতে হবে। আসুন সচেতন হই, যক্ষ্মা প্রতিরোধ করি।









«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply