বাংলাদেশের রিজার্ভের ১০ কোটি ডলার বা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। অপসারণ করা হয়েছে দুই ডেপুটি গভর্নরকে। দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে। গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি।
এছাড়া নতুন গভর্নর নিয়োগ, থানায় মামলা দায়ের, ঘটনা তদন্তে সিআইডির অন্তর্ভুক্তিসহ সম্ভাব্য অনেক কিছুই করা হয়েছে এ ক’দিনে। তদন্তে সরকারি সংস্থাকে সহযোগিতা দিচ্ছে এফবিআইসহ আন্তর্জাতিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও। বুধবার রাতে রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ ও আইসিটি কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী তানভীর হাসান জোহা নামের এক ব্যক্তিকে। এরই মাঝে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অভিমত, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতর থেকেই রিজার্ভ চুরিতে সরাসরি সহায়তা দেয়া হয়েছে।
তার এ অভিমতকে সমর্থন জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, টিআইবির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান। রেডিও তেহরানকে তিনি বলেন, রিজার্ভের অর্থ স্থানান্তরে ৬ জনের সাক্ষর ও টিপসই প্রয়োজন হয়। তাই ভেতরের কারও সহায়তা ছাড়া টাকা চুরি সম্ভব হতো না। তাছাড়া বাংলাদেশের ব্যাংকের সাবেক গভর্নর তার দায়িত্ব ভুলে গিয়ে অন্য কাজে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। তিনিও এ দায় এড়াতে পারেন না।
টাকা চুরির ঘটনাকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিবেচনার কথা বলেছেন লেখক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। রেডিও তেহরানকে তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা চুরি শুধু দেশের ব্যাংকিং খাত বা বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বলতার কারণে সম্ভব হয়েছে এটা বলা উচিৎ হবে না। বরং দেশে যে সার্বিক অব্যবস্থাপনা চলছে, তার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। আর তদন্ত চললেও শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে তা বলা মুশকিল। তবে কাজের স্বচ্ছতার অভাব আছে। এ কারণেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে এক মাসের বেশি সময় লেগেছে। তাছাড়া ধামাচাপা দেয়ার প্রবণতা তো আছেই বাংলাদেশে। এ ক্ষেত্রে কি হয় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন এ বিশ্লেষক।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ ফিলিপাইনে যাওয়ার পেছনে কারা জড়িত, সে বিষয়টি দ্রুতই বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশটির সিনেটর সার্জিও ওসমেনা। আর শিগগিরই প্রায় সোয়া দুই লাখ ডলার বাংলাদেশকে ফেরত দেয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিপাইনের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়কারী প্রতিষ্ঠান-ফিলরেম। বৃহস্পতিবার সিনেটের শুনানিতে অর্থ পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চেয়ে মুদ্রা বিনিময়ের লভ্যাংশ থেকে এ অর্থ ফেরত দেয়ার কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট সালুদ বাতিস্তা।#
১৮ মার্চ (রেডিও তেহরান) :
No comments: