একটি দিনও মোবাইল ছাড়া ভাবতে পারি না'
এই সময়ের কোনও কিশোর কিশোরীর কাছে যদি জানতে চাওয়া হয়, যে সময়ে মোবাইল ফোন ছিল না সে সময়টি সম্পর্কে তাদের ধারণা কি? নিশ্চিতভাবেই তারা অবাক হবেন।
আর যদি কোনও যুবক-যুবতীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, মোবাইল ফোন ছাড়া তাদের পক্ষে থাকা সম্ভব কি না? এক কথায় জবাব আসবে, 'না'।
অথচ দুই দশক আগেও এখনকার মতো বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে ছিল না কোনও মোবাইল ফোন।
রুকন ভূঁইয়া একজন তরুণ স্থপতি। বাংলাদেশের এখনকার আরও অনেক তরুণের মতোই একটি একটি স্মার্টফোন রয়েছে তার।
আর কে না জানে এখনকার সময়ের স্মার্ট মোবাইল ফোন শুধু কথা বলা আর বার্তা পাঠানোর যন্ত্র নয়, এর রয়েছে হরেক ব্যাবহার এবং এটিকে টেলিফোন না বলে কম্পিউটার বলাই ভাল।
মি. ভূঁইয়া বলছেন, তিনি তার মোবাইল ফোনটি দিয়ে আর দশটা সাধারণ কাজের পাশাপাশি ভবনের নকশা প্রণয়নের কাজও করেন।
তার শৈশব ও কৈশোর অবশ্য কেটেছে তারহীন এই যোগাযোগের মাধ্যমটি ছাড়া।
তিনি দুটো সময়েরই প্রতিনিধি।
'ওই সময়ে বন্ধুকে একটু ডাক দেয়া, জানালা খুলে কাউকে একটু নক করার মতো বিষয়গুলো এখন বদলে গেছে। এখন মোবাইল ফোনের মেসেঞ্জার খুলে আমরা বন্ধুকে নক করি'। বলছিলেন মি. ভূঁইয়া।
সবার হাতেই মোবাইল ফোন:
বাংলাদেশে এখন জনসংখ্যার অনুপাতে মোবাইল ফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা শতকরা ৭৮ ভাগেরও বেশী।
বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে গত মে মাসে দেশটিতে সক্রিয় মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে বারো কোটি।
দেশটিতে এখন জনসংখ্যার অনুপাতে মোবাইল ফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা শতকরা ৭৮ ভাগেরও বেশী।
ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলের রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন দুজন তরুণ তরুণী।
এদের একজন বলছিলেন, 'এখন দূরত্বটা আমরা কম অনুভব করি। মোবাইলে ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকলে আমি সবসময়েই সবার সাথে যুক্ত থাকছি। ফোন ছাড়া এখন একটি দিনও ভাবতে পারিনা'।
আরেক কিশোর বলছিলেন, 'বাবা-কাকাদের মুখে শুনি তাদের সময় মোবাইল ছিল না। তারা কিভাবে টিকে থাকতেন ভাবতেই পারি না'।
১৯৯৩ সালে যা ছিল প্রচণ্ড ব্যয়বহুল সীমিত সংখ্যক উচ্চবিত্তদের হাতে, আজ তা ছড়িয়ে গেছে বিত্তের সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত।
এমনকি গৃহকর্মী কিংবা রিকশাচালকদের মতো সমাজের সবচাইতে নিচের শ্রেণীর মানুষদেরকেও আজকাল হামেশাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায়।
গত দশ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান মোহাম্মদ তাওহীদ হোসেন, তিনি গত ছয় বছর ধরে মোবাইল ফোন ব্যাবহার করেন।
'বগুড়ায় থাকা পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা, টাকা পাঠানো সব কিছুই মোবাইল ফোনে করি আমি'। বলছিলেন তিনি।
কেউ কি আছেন মোবাইল ছাড়া?
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান-প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ অবশ্য কোনদিন মোবাইল টেলিফোন ব্যবহার করেননি।
গত দশ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান মোহাম্মদ তাওহীদ হোসেন, তিনি গত ছয় বছর ধরে মোবাইল ফোন ব্যাবহার করেন।
'৯০এর দশকে আমি তখন রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান। তখন সরকারের তরফ থেকে আমাকে একটি মোবাইল ফোন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে অতিরিক্ত ব্যয়বহুল হবার কারণে মন্ত্রণালয় সেই প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। এরপর থেকে আমার আর মোবাইল ফোন নেয়া হয়নি কোনদিন'।
অবশ্য মি. সৈয়দের মতো মানুষ এখন খুব কমই মিলবে।
অবশ্য গ্রামে গঞ্জে অনেকেই হয়তো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না।
কিন্তু শহরাঞ্চলে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গণযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. গীতি আরা নাসরীন বলছেন, 'সবার হাতে মোবাইল ফোন ছড়িয়ে পড়ায় এখন কেউই কোথাও পূর্ণ মনোযোগ দিচ্ছে না। নতুন ধরণের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে মানুষের মধ্যে'।
'ফোন আছে বলে আমরা সারাক্ষণ ফোন করছি। কিন্তু যখনই কাউকে ফোনে পাচ্ছি না তখন নতুন করে দু:শ্চিন্তা শুরু হচ্ছে'।
অবশ্য এককালে মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষার কঠিন কাজটি যে আজ যে জলের মতো সহজ হয়ে গেছে তার কৃতিত্ব নিশ্চিতভাবেই মোবাইল ফোনেরই প্রাপ্য।
বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা এনজিও সমন্বয় কমিটির সভায় সভাপতিত্বে করেণ জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, সিভিল সার্জন ডা. মো: আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হেমায়েত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খাইরুল হাসান, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শশাংক কুমার মন্ডল, জেলা এনজিও সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর প্রমুখ।
Slider
বিশ্ব
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
মেহেরপুর সদর উপজেলা
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
lid news
»
national
» একটি দিনও মোবাইল ছাড়া ভাবতে পারি না' এই সময়ের কোনও কিশোর কিশোরীর কাছে যদি জানতে চাওয়া হয়, যে সময়ে মোবাইল ফোন ছিল না সে সময়টি সম্পর্কে তাদের ধারণা কি? নিশ্চিতভাবেই তারা অবাক হবেন। আর যদি কোনও যুবক-যুবতীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, মোবাইল ফোন ছাড়া তাদের পক্ষে থাকা সম্ভব কি না? এক কথায় জবাব আসবে, 'না'। অথচ দুই দশক আগেও এখনকার মতো বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে ছিল না কোনও মোবাইল ফোন। রুকন ভূঁইয়া একজন তরুণ স্থপতি। বাংলাদেশের এখনকার আরও অনেক তরুণের মতোই একটি একটি স্মার্টফোন রয়েছে তার। আর কে না জানে এখনকার সময়ের স্মার্ট মোবাইল ফোন শুধু কথা বলা আর বার্তা পাঠানোর যন্ত্র নয়, এর রয়েছে হরেক ব্যাবহার এবং এটিকে টেলিফোন না বলে কম্পিউটার বলাই ভাল। মি. ভূঁইয়া বলছেন, তিনি তার মোবাইল ফোনটি দিয়ে আর দশটা সাধারণ কাজের পাশাপাশি ভবনের নকশা প্রণয়নের কাজও করেন। তার শৈশব ও কৈশোর অবশ্য কেটেছে তারহীন এই যোগাযোগের মাধ্যমটি ছাড়া। তিনি দুটো সময়েরই প্রতিনিধি। 'ওই সময়ে বন্ধুকে একটু ডাক দেয়া, জানালা খুলে কাউকে একটু নক করার মতো বিষয়গুলো এখন বদলে গেছে। এখন মোবাইল ফোনের মেসেঞ্জার খুলে আমরা বন্ধুকে নক করি'। বলছিলেন মি. ভূঁইয়া। সবার হাতেই মোবাইল ফোন: বাংলাদেশে এখন জনসংখ্যার অনুপাতে মোবাইল ফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা শতকরা ৭৮ ভাগেরও বেশী। বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে গত মে মাসে দেশটিতে সক্রিয় মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে বারো কোটি। দেশটিতে এখন জনসংখ্যার অনুপাতে মোবাইল ফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা শতকরা ৭৮ ভাগেরও বেশী। ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলের রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন দুজন তরুণ তরুণী। এদের একজন বলছিলেন, 'এখন দূরত্বটা আমরা কম অনুভব করি। মোবাইলে ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকলে আমি সবসময়েই সবার সাথে যুক্ত থাকছি। ফোন ছাড়া এখন একটি দিনও ভাবতে পারিনা'। আরেক কিশোর বলছিলেন, 'বাবা-কাকাদের মুখে শুনি তাদের সময় মোবাইল ছিল না। তারা কিভাবে টিকে থাকতেন ভাবতেই পারি না'। ১৯৯৩ সালে যা ছিল প্রচণ্ড ব্যয়বহুল সীমিত সংখ্যক উচ্চবিত্তদের হাতে, আজ তা ছড়িয়ে গেছে বিত্তের সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত। এমনকি গৃহকর্মী কিংবা রিকশাচালকদের মতো সমাজের সবচাইতে নিচের শ্রেণীর মানুষদেরকেও আজকাল হামেশাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায়। গত দশ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান মোহাম্মদ তাওহীদ হোসেন, তিনি গত ছয় বছর ধরে মোবাইল ফোন ব্যাবহার করেন। 'বগুড়ায় থাকা পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা, টাকা পাঠানো সব কিছুই মোবাইল ফোনে করি আমি'। বলছিলেন তিনি। কেউ কি আছেন মোবাইল ছাড়া? বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান-প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ অবশ্য কোনদিন মোবাইল টেলিফোন ব্যবহার করেননি। গত দশ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান মোহাম্মদ তাওহীদ হোসেন, তিনি গত ছয় বছর ধরে মোবাইল ফোন ব্যাবহার করেন। '৯০এর দশকে আমি তখন রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান। তখন সরকারের তরফ থেকে আমাকে একটি মোবাইল ফোন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে অতিরিক্ত ব্যয়বহুল হবার কারণে মন্ত্রণালয় সেই প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। এরপর থেকে আমার আর মোবাইল ফোন নেয়া হয়নি কোনদিন'। অবশ্য মি. সৈয়দের মতো মানুষ এখন খুব কমই মিলবে। অবশ্য গ্রামে গঞ্জে অনেকেই হয়তো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। কিন্তু শহরাঞ্চলে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গণযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. গীতি আরা নাসরীন বলছেন, 'সবার হাতে মোবাইল ফোন ছড়িয়ে পড়ায় এখন কেউই কোথাও পূর্ণ মনোযোগ দিচ্ছে না। নতুন ধরণের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে মানুষের মধ্যে'। 'ফোন আছে বলে আমরা সারাক্ষণ ফোন করছি। কিন্তু যখনই কাউকে ফোনে পাচ্ছি না তখন নতুন করে দু:শ্চিন্তা শুরু হচ্ছে'। অবশ্য এককালে মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষার কঠিন কাজটি যে আজ যে জলের মতো সহজ হয়ে গেছে তার কৃতিত্ব নিশ্চিতভাবেই মোবাইল ফোনেরই প্রাপ্য। বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা এনজিও সমন্বয় কমিটির সভায় সভাপতিত্বে করেণ জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, সিভিল সার্জন ডা. মো: আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হেমায়েত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খাইরুল হাসান, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শশাংক কুমার মন্ডল, জেলা এনজিও সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর প্রমুখ।
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: