জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেস তারানকো বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের উপায় বের করার জন্য কাজ শুরু করেছেন তারানকো। বৈঠক করেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে। এছাড়া তিনি সরকার ও বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে লিয়াজোঁ করছেন। গোটা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন জাতিসংঘের এই সহকারী মহাসচিব। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেখানে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠক করবেন।
গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তারানকো ঢাকায় এসে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু সংকটের সমাধান করতে পারেননি। ওই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তির পর থেকে দেশের পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে যা এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে। চলমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ খুবই উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসা যায় তা নিয়ে কাজ করতেই মাঠে নেমেছেন তারানকো। জাতিসংঘ দেশের বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
জানা গেছে, তারানকো বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। অপরদিকে নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন একই দিনে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে জন কেরির আসন্ন বৈঠক নিয়ে আলোচনা হয়। এই আলোচনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ঠাঁই পায়। বিশেষ করে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সরকারের চূড়ান্ত অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানা গেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফানে দুজারিক ১২ ফেব্রুয়ারি তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে জবাব দেন। মুখপাত্র বলেন, ‘সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেস তারানকো তার নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিশা বিসওয়ালের সঙ্গে বৈঠকে মিস্টার ফার্নান্দেস তারানকো অপরাপর ইস্যুর পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রতি জোর দিয়েছেন।’
জাতিসংঘ মহাসচিব কবে নাগাদ অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে বাংলাদেশে পাঠাতে পারেন- এ প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘আমার মনে হয়, গতকাল আমি যা বলেছিলাম, তার একাংশ আপনি মিস করে গেছেন। মহাসচিব পিস বিল্ডিং অফিসের প্রধান অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী দলের নেতাদের মধ্যে লিয়াজোঁ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। এই কাজটাই তিনি (তারানকো) করছেন। মহাসচিব ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের প্রতি বদ্ধপরিকর। আমরা প্রাণহানির নিন্দা জানানো অব্যাহত রাখছি এবং মূল বার্তা হল, চলমান সংকটের সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান।’
নিশা বিসওয়াল ও তারানকোর আলোচনার ফলাফল কি জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ‘না, এটা হল জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়মিত যোগাযোগের অংশ। এটা একটা চলমান সংলাপ। এটা আপনার সঙ্গে শেয়ার করার কিছু নয়।’
ব্রিফিংকালে ওই সাংবাদিক আবারও প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়া বর্তমানে অবরুদ্ধ আছেন। তাকে শুকনো খাদ্য সরবরাহে বাধা দেয়ায় সেখানে অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মুখপাত্র বলেন, ‘অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতিতে মহাসচিব উদ্বিগ্ন। তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। এটাই সহকারী মহাসচিব মিস্টার তারানকো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।’
গত বছরের পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফর করার সময় অস্কার ফার্নান্দেস তারানকো ছিলেন জাতিসংঘের রাজনীতি সংক্রান্ত সহকারী মহাসচিব। বর্তমানে তিনি এই বিশ্ব সংস্থার পিস বিল্ডিং সংক্রান্ত সহকারী মহাসচিব। তবে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে তারানকোকে তার বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলেন। ওই সংকট এখনও শেষ না হওয়ায় তারানকোর ওপরই বাংলাদেশের বিষয়ে দায়িত্ব রয়ে গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফানে দুজারিক বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে নিয়মিত ব্রিফিংকালে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে স্থিতিশীলতার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব ব্যক্তিগতভাবে বদ্ধপরিকর। তিনি অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁ করার জন্য দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন।’
বিএনপি বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের মধ্যস্থতা চায়। এ লক্ষ্যে শত নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে চিঠি লিখেছেন। সম্প্রতি বিএনপি নেতা ড. মঈন খানের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চায় বিএনপি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জাতিসংঘসহ বহির্বিশ্বের কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না বলে বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম যুগান্তরকে বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সহিংসতাসহ হঠকারী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানিয়ে রাখব ঠিকই; কিন্তু তাদের কোনো হস্তক্ষেপ চাই না। কারণ বর্তমান সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম।’
এই পরিস্থিতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট অ্যাক্সট্রিমিজম সম্মেলনে যোগদানের লক্ষ্যে তার এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফর। তবে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে মাহমুদ আলীর একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। হোয়াইট হাউসের কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট সম্মেলনে যোগদানের লক্ষ্যে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের বৈঠকে মাহমুদ আলীর আসন্ন সফর সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আসন্ন বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন না বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পর্যায়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন দূর করতে তিনি ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। আগামী ১৬ ফেব্র“য়ারি তিনি রওনা হবেন এবং ২০ ফেব্র“য়ারি ঢাকায় ফিরবেন বলে কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। কেরির সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ঢাকায় পৌঁছে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও বৈঠক করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী ১৯ ফেব্র“য়ারি ঢাকায় পৌঁছে ২১ ফেব্র“য়ারির আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফিরে যাওয়ার কথা মমতার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হোয়াইট হাউস কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট সম্মেলনে যোগদানের সুযোগে জন কেরির সঙ্গে বৈঠকে মূলত বর্তমান পরিস্থিতি প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাহমুদ আলীকে দ্বিপক্ষীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার জন্য কেরির আমন্ত্রণ আগেই ছিল।
জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের হতাশা প্রকাশ, সম্প্রতি এলজিইডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে নিশা দেশাই বিসওয়ালকে তাচ্ছিল্য করা এবং ড. ইউনূস ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকারের যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা ঘোচাতে চেষ্টা করবেন মাহমুদ আলী। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে আস্থায় আনতে ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দূরত্ব সৃষ্টিকারী হিসেবে আলোচিত এক আইনজীবীকে সম্প্রতি নাইকো মামলার আইনজীবীর দায়িত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
Slider
বিশ্ব
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
মেহেরপুর সদর উপজেলা
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
lid news
»
national
» জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেস তারানকো বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের উপায় বের করার জন্য কাজ শুরু করেছেন তারানকো। বৈঠক করেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে। এছাড়া তিনি সরকার ও বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে লিয়াজোঁ করছেন। গোটা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন জাতিসংঘের এই সহকারী মহাসচিব। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেখানে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠক করবেন। গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তারানকো ঢাকায় এসে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু সংকটের সমাধান করতে পারেননি। ওই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তির পর থেকে দেশের পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে যা এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে। চলমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ খুবই উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসা যায় তা নিয়ে কাজ করতেই মাঠে নেমেছেন তারানকো। জাতিসংঘ দেশের বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। জানা গেছে, তারানকো বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে বাংলাদেশের পরিস্থিতির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। অপরদিকে নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন একই দিনে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে জন কেরির আসন্ন বৈঠক নিয়ে আলোচনা হয়। এই আলোচনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ঠাঁই পায়। বিশেষ করে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সরকারের চূড়ান্ত অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানা গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফানে দুজারিক ১২ ফেব্রুয়ারি তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে জবাব দেন। মুখপাত্র বলেন, ‘সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেস তারানকো তার নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিশা বিসওয়ালের সঙ্গে বৈঠকে মিস্টার ফার্নান্দেস তারানকো অপরাপর ইস্যুর পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রতি জোর দিয়েছেন।’ জাতিসংঘ মহাসচিব কবে নাগাদ অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে বাংলাদেশে পাঠাতে পারেন- এ প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘আমার মনে হয়, গতকাল আমি যা বলেছিলাম, তার একাংশ আপনি মিস করে গেছেন। মহাসচিব পিস বিল্ডিং অফিসের প্রধান অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী দলের নেতাদের মধ্যে লিয়াজোঁ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। এই কাজটাই তিনি (তারানকো) করছেন। মহাসচিব ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের প্রতি বদ্ধপরিকর। আমরা প্রাণহানির নিন্দা জানানো অব্যাহত রাখছি এবং মূল বার্তা হল, চলমান সংকটের সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান।’ নিশা বিসওয়াল ও তারানকোর আলোচনার ফলাফল কি জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ‘না, এটা হল জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়মিত যোগাযোগের অংশ। এটা একটা চলমান সংলাপ। এটা আপনার সঙ্গে শেয়ার করার কিছু নয়।’ ব্রিফিংকালে ওই সাংবাদিক আবারও প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়া বর্তমানে অবরুদ্ধ আছেন। তাকে শুকনো খাদ্য সরবরাহে বাধা দেয়ায় সেখানে অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মুখপাত্র বলেন, ‘অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতিতে মহাসচিব উদ্বিগ্ন। তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। এটাই সহকারী মহাসচিব মিস্টার তারানকো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।’ গত বছরের পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফর করার সময় অস্কার ফার্নান্দেস তারানকো ছিলেন জাতিসংঘের রাজনীতি সংক্রান্ত সহকারী মহাসচিব। বর্তমানে তিনি এই বিশ্ব সংস্থার পিস বিল্ডিং সংক্রান্ত সহকারী মহাসচিব। তবে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে তারানকোকে তার বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলেন। ওই সংকট এখনও শেষ না হওয়ায় তারানকোর ওপরই বাংলাদেশের বিষয়ে দায়িত্ব রয়ে গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফানে দুজারিক বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে নিয়মিত ব্রিফিংকালে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে স্থিতিশীলতার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব ব্যক্তিগতভাবে বদ্ধপরিকর। তিনি অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁ করার জন্য দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন।’ বিএনপি বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের মধ্যস্থতা চায়। এ লক্ষ্যে শত নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে চিঠি লিখেছেন। সম্প্রতি বিএনপি নেতা ড. মঈন খানের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চায় বিএনপি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জাতিসংঘসহ বহির্বিশ্বের কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না বলে বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম যুগান্তরকে বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সহিংসতাসহ হঠকারী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানিয়ে রাখব ঠিকই; কিন্তু তাদের কোনো হস্তক্ষেপ চাই না। কারণ বর্তমান সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম।’ এই পরিস্থিতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট অ্যাক্সট্রিমিজম সম্মেলনে যোগদানের লক্ষ্যে তার এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফর। তবে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে মাহমুদ আলীর একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। হোয়াইট হাউসের কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট সম্মেলনে যোগদানের লক্ষ্যে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। নিশা দেশাই বিসওয়ালের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের বৈঠকে মাহমুদ আলীর আসন্ন সফর সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আসন্ন বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন না বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পর্যায়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন দূর করতে তিনি ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। আগামী ১৬ ফেব্র“য়ারি তিনি রওনা হবেন এবং ২০ ফেব্র“য়ারি ঢাকায় ফিরবেন বলে কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। কেরির সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ঢাকায় পৌঁছে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও বৈঠক করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী ১৯ ফেব্র“য়ারি ঢাকায় পৌঁছে ২১ ফেব্র“য়ারির আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফিরে যাওয়ার কথা মমতার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হোয়াইট হাউস কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট সম্মেলনে যোগদানের সুযোগে জন কেরির সঙ্গে বৈঠকে মূলত বর্তমান পরিস্থিতি প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাহমুদ আলীকে দ্বিপক্ষীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার জন্য কেরির আমন্ত্রণ আগেই ছিল। জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের হতাশা প্রকাশ, সম্প্রতি এলজিইডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে নিশা দেশাই বিসওয়ালকে তাচ্ছিল্য করা এবং ড. ইউনূস ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকারের যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা ঘোচাতে চেষ্টা করবেন মাহমুদ আলী। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে আস্থায় আনতে ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দূরত্ব সৃষ্টিকারী হিসেবে আলোচিত এক আইনজীবীকে সম্প্রতি নাইকো মামলার আইনজীবীর দায়িত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: