প্রয়োজনে গুলি করার ঘোষণা বিজিবি'র, বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ
মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ
: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বলেছেন, বিরোধী জোট তাদের 'নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড' বন্ধ না করলে সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। দু’দিন আগে সরকারের শরিক দলের একজন নেতা মাইনুদ্দিন খান বাদল বলেছেন, পুলিশ এখন থেকে প্রয়োজনে বুকে গুলি করবে। আর আজ দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ স্পষ্ট করে বলেছেন, পেট্রোল বোমা হাতে কাউকে পাওয়া গেলে প্রয়োজনে তাকে গুলি করা হবে। কারণ বিজিবি মহাপরিচালক মনে করেন, একজন মানুষকে গুলি করলে যদি পাঁচজনের জীবন বাঁচে তাহলে সেটা করাই যুক্তিযুক্ত।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিজিবি হেডকোয়ার্টার্সে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন বিজিবি মহাপরিচালক। তিনি বলেন, কোথাও যদি হামলা কিংবা নাশকতার শিকার হয় তাহলে আত্মরক্ষার্থে বিজিবি সদস্যগণ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করবে। এছাড়া আর অন্য কোনো পথ নেই। তিনি আরো বলেন, যদিও এ দায়িত্ব পালন করা তাদের পক্ষে কষ্টকর। তারপরও দেশ ও জনগণের স্বার্থে তারা এ দায়িত্ব পালন করবে।
রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
অন্যদিকে, বিজিবি মহাপরিচালকের বক্তব্যকে তীব্র সমালোচনা করে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক জনাব সাদেক খান রেডিও তেহরানকে বলেন, একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর প্রধানের পক্ষ থেকে এরকম প্রকাশ্যে গুলি করার বক্তব্য দেশকে ভয়ানক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে। তিনি মনে করিয়ে দেন,বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর 'নক্শাল দেখা মাত্র গুলি করা'র নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়ে কীভাবে '৭৫ সালের পরিণতি ঘটেছিল।
অনুরূপ মনোভাব ব্যক্ত করে বিশিষ্ট নিবন্ধকার জনাব ফরহাদ মজহার বিজেবি প্রধানকে অনুরোধ করেছেন তিনি যেন সরকারেরর কাছ থেকে জেনে নেন, সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার আওতায় তার এরকম হুকুম দেবার অধিকার আছে কী না। তা না হলে বুঝতে হবে দেশের জন্য তিনি নতুন কিছু বিপদের আলামত সৃষ্টি করছেন।
ফরহাদ মজহার উল্লেখ করেন, বিজিবি’র দায়িত্ব দেশের সীমান্ত রক্ষা করা; সীমান্তে ভারতীয় গুলির হাত থেকে বাংলাদেশী নাগরিকদের জানমাল রক্ষা করা। বিজেবি যেন নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য বাড়তি বিপদ সৃষ্টি না করে।
উল্লেখ্য, দেশব্যাপী চলমান অবরোধের মাঝে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ ২২ জেলায় ৫৯ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এসব জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। দেশের বিরাজমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় বিভিন্ন জেলায় এ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
যেসব জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে: নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রাজবাড়ি, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, জয়পুরহাট, বগুড়া, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, খুলনা ও সাতক্ষীরা। #১৫ জানুয়ারি (রেডিও তেহরান)
No comments: