শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাক-আফগান উপজাতিদের মধ্যে সমঝোতা : পাকিস্তানের বাজৌর ও আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশের উপজাতি নেতারা উভয় সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। বৈঠকে উভয় দেশের উপজাতি নেতারা ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত হওয়ার পাশাপাশি এ ব্যাপারে একে অপরকে সহযোগিতা করতেও সম্মত হয়েছে।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাক-আফগান উপজাতিদের মধ্যে সমঝোতা
: পাকিস্তানের বাজৌর ও আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশের উপজাতি নেতারা উভয় সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। বৈঠকে উভয় দেশের উপজাতি নেতারা ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত হওয়ার পাশাপাশি এ ব্যাপারে একে অপরকে সহযোগিতা করতেও সম্মত হয়েছে।
অভিন্ন সীমান্তবর্তী মেহমান্দে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মৌলভি আব্দুল হাকিম, হাজি শাহ মাহমুদ, মৌলভি এনায়াতুল্লাহ, হাজি জান ওয়ালি ও গুল মোহাম্মদ মারভারের মত প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরাসহ ২২জন উপজাতি নেতা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, আফগানিস্তানের প্রবীণ নেতাদের নিয়ে গঠিত ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় পরিষদ লয়াজির্গার প্রতিনিধিরা বলেছেন, তারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করবেন এবং মেহমান্দ বৈঠকে দু’দেশের উপজাতি নেতাদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অনুমোদন দেয়া হবে। এরপর তারা ভারত ও আফগানিস্তানের স্থানীয় প্রভাবশালী ও প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে ফের বৈঠকে মিলিত হবেন।
মেহমান্দ অঞ্চলের উপজাতিরা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের উভয় সীমান্তের বাসিন্দা এবং তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের উপজাতি নেতাদের এ ধরণের বৈঠকের রীতি বহু পুরানো। যে কোনো সমস্যার উদ্ভব ঘটলে প্রাচীন ঐতিহ্য অনুযায়ী তারা বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে থাকে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকাগুলোতে গোলাগুলির ঘটনা বেড়েছে। এর ফলে শুধু যে উভয় সীমান্তের উপজাতিদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে তাই নয় একই সঙ্গে কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যকার সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কারণ দু’দেশের সরকারই গোলাগুলির জন্য একে অপরকে অভিযুক্ত করছে। এদিকে সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় দু’দেশেরই বেসামরিক মানুষজন বিশেষ করে নারী ও শিশু নিহতের ঘটনা ঘটায় উভয় অঞ্চলের উপজাতি নেতারা শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সহিংসতা বন্ধের জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছেন।
ওই অঞ্চলের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সীমানা এখনো চিহ্নিত হয়নি। আফগানিস্তানকে ভাগ করা এবং সব সময় উত্তেজনা জিইয়ে রাখার জন্য সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তি ওই গণ্ডগোল বাধিয়ে রেখেছে। পাকিস্তান দীর্ঘ সীমান্ত এলাকায় পরিখা খনন করলেও আফগান সরকার এর তীব্র বিরোধিতা করেছে। এ অবস্থায় উত্তেজনা নিরসনে দুই দেশের উপজাতি নেতাদের সহযোগিতা ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অঞ্চলে বিরাজমান বহু সমস্যা উপজাতি নেতারা এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার আলোচনার মাধ্যমে সহজেই সুরাহা করতে পারে। এর অর্থ হচ্ছে ইসলামাবাদ ও কাবুল কর্তৃপক্ষ বাইরের কারো সহযোগিতা ছাড়াই কেবল মাত্র নিজেদের উদ্যোগে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।#৯ ডিসেম্বর (রেডিও তেহরান)
No comments: