মোটা হলে ৮ বছর আয়ু কমে, নিয়মিত ডায়েট করেও দিনদিনই মুটিয়ে যাচ্ছেন? চলাফেরায় অসুবিধা? বসলে উঠতে পারেন না, উঠলে বসতে পারেন না? ভুঁড়ি বের হওয়ায় বাইরে গেলেই মানুষের ঠাট্টা-মশকরা। কেউ পরামর্শ দেয় নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ডায়েট করেও দিনদিনই মুটিয়ে যাচ্ছেন? চলাফেরায় অসুবিধা? বসলে উঠতে পারেন না, উঠলে বসতে পারেন না? ভুঁড়ি বের হওয়ায় বাইরে গেলেই মানুষের ঠাট্টা-মশকরা। কেউ পরামর্শ দেয় নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কেউ বলে খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিন। কিন্তু নিয়মিত ব্যায়ামও যেন রুখতে পারছে না আপনার মোটাতাজা হওয়ার গতি।
মোটা হলে ৮ বছর আয়ু কমে,
নিয়মিত ডায়েট করেও দিনদিনই মুটিয়ে যাচ্ছেন? চলাফেরায় অসুবিধা? বসলে উঠতে পারেন না, উঠলে বসতে পারেন না? ভুঁড়ি বের হওয়ায় বাইরে গেলেই মানুষের ঠাট্টা-মশকরা। কেউ পরামর্শ দেয় নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
নিয়মিত ডায়েট করেও দিনদিনই মুটিয়ে যাচ্ছেন? চলাফেরায় অসুবিধা? বসলে উঠতে পারেন না, উঠলে বসতে পারেন না? ভুঁড়ি বের হওয়ায় বাইরে গেলেই মানুষের ঠাট্টা-মশকরা। কেউ পরামর্শ দেয় নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কেউ বলে খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিন। কিন্তু নিয়মিত ব্যায়ামও যেন রুখতে পারছে না আপনার মোটাতাজা হওয়ার গতি। চিন্তায় আপনার ঘুম হারাম। আপনার জন্য আছে আরও একটি দুঃসংবাদ।মোটা হলে ৮ বছর আয়ু কমে
আপনি যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মোটা বা ওজনদার মানুষ হন, কিংবা অতিকায় মোটা হন তাহলে গড় আয়ু কমে যেতে পারে ৮ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া আপনি বঞ্চিত হতে পারেন কমপক্ষে ১৯ বছরের সুস্থ জীবন থেকে। অন্তত তাই বলছে গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন। এতে বলা হয়েছে, মোটা মানুষের ১৯ বছর সুস্থ জীবন থেকে বঞ্চিত থাকার কারণ হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো নানা ব্যাধি। প্রতিবেদনে এতসব অসুবিধা থেকে রেহাই পেতে মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এএফপি, ডেইলি মেইল অনলাইন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যের ভিত্তিতে একটি গাণিতিক মডেলে চালানো এই গবেষণা মুটিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা রোগীদের যথাযথ পরামর্শ ও প্রেসক্রিপশন দিতে চিকিৎসকদের সহায়তাকরবে। এমনটাই আশা করছেন গবেষক দলের সদস্যরা। তাদের মতে, বিশেষ করে যারা তরুণ বয়সেই অস্বাভাবিকভাবে মুটিয়ে যান তাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ সবচেয়ে বেশি। গবেষকদের সদস্য কানাডার মন্ট্রিলের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইপিডেমিওলজির (মহামারিতত্ত্ব) অধ্যাপক স্টিভেন গ্রোভার বলেন, 'মানুষের গঠন আকৃতিটা পরিষ্কার। কোনো তরুণের ওজন যত বাড়বে, সেটা তার স্বাস্থ্যে ততটাই বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাদের সামনে অনেক বছর। সে সময়টায় মুটিয়ে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাবে তাদের নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হতে পারে।'
অধ্যাপক স্টিভেন গ্রোভারের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল তাদের গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ স্বাস্থ্য প্রকল্প ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন একজামিনেশন সার্ভে থেকে তথ্য নিয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় বিভিন্ন ওজনের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের অকালমৃত্যু ও অসুস্থতার ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হয়। এ কাজে কয়েক বছরে তারা পর্যবেক্ষণ করেছে কয়েক হাজার মানুষকে। এক্ষেত্রে তারা বেশি ওজনদার ও মোটা মানুষদের সঙ্গে স্বাভাবিক ওজনের মানুষদের গড় আয়ুও তুলনা করেছে। তারা হিসাব করে বের করেছে প্রত্যেক মানুষ গড়ে কত বছর পর্যন্ত সুস্থ থাকতে পারে। সুস্থ বলতে এখানে প্রধানত বোঝানো হয়েছে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকাকে। কারণ মূলত, স্থূলতা বা মুটিয়ে যাওয়ার সঙ্গে রয়েছে এ দুটি রোগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এ ক্ষেত্রে হিসাবে আনা হয়েছে শুধু ২০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী মানুষদের।
গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে লানচেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজি জার্নালে। পত্রিকাটি বলেছে, এই ফলাফল বেশ নাটকীয় ও চমকপ্রদ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশি ওজনদার মানুষের মধ্যে যাদের বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই) ২৫ থেকে ২৯.৯ তাদের গড় আয়ু কমে যেতে পারে শূন্য থেকে তিন বছর পর্যন্ত। যাদের বিএমআই ৩০ থেকে ৩৪.৯ তাদের গড় আয়ু কমতে পারে ০.৮ থেকে ৫.৯ বছর পর্যন্ত। অতিকায় মোটা মানুষ, যাদের বিএমআই ৩৫ বা তার চেয়ে বেশি তারা গড় আয়ু হারাতে পারেন ০.৯ থেকে ৮.৪ বছর পর্যন্ত। মোটা মানুষদের মধ্যে গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমে যাদের বয়স ২০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ আয়ু কমার ঝুঁকি মোটা তরুণদেরই সবচেয়ে বেশি।অন্যদিকে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের কারণে মোটা মানুষের সুস্থ জীবন কমে যায় ০.৫ থেকে ১৯.১ বছর পর্যন্ত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নারীদের। ২০ থেকে ৩৯ বছরের অতিকায় নারীরা থাকেন সুস্থ জীবন কমার বড় ঝুঁকিতে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম ঝুঁকি ৬০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী মোটা পুরুষদের। প্রকৃত পক্ষে তাদের মতো বয়সে সুস্থ না থাকাটাই স্বাভাবিক। যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৩ থেকে ২০১০ সালের জরিপের তথ্য কাজে লাগানো হয়েছে এ গবেষণায়। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটি জরিপ চালিয়েছে ৪ হাজার শ্বেতাঙ্গ মানুষের ওপর। যাদের ব্লাড সুগার ও স্বাস্থ্যগত খুঁটিনাটি তথ্য সবকিছুই ছিল জানা।তবে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিতে মোটা মানুষদের সাবধান করে বলা হয়েছে, এ সতর্কতাকে তাদের দেখতে হবে অতি রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে। কারণ গবেষণায় মাত্র হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস মুটিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এ দুটি রোগের ওপরই আলোকপাত করা হয়েছে। যদিও ক্রনিক স্থূলতা বা অতিকায় হওয়ার সঙ্গে ক্যান্সার, শ্বাসরোগ এবং লিভার ও কিডনি রোগেরও গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
প্রসঙ্গত বডি ম্যাস ইনডেক্স বা বিএমআই বলতে বোঝায় ব্যক্তির উচ্চতা অনুযায়ী ওজনকে। এর ভিত্তিতেই নির্ণয় করা হয় ওই ব্যক্তির ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কি-না। এক্ষেত্রে স্বাভাবিক বিএমআই ধরা হয় ১৮.৫ থেকে ২৪.৯৯ কে। এর ওপরে গেলেই তা জীবনের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী স্থূলতা। ২৫ থেকে ২৯.৯ বিএমআইকে বলা হয় ওভারওয়েট বা বেশি ওজনদার। আর ত্রিশের ওপরের বিএমআইকে বলা হয় ক্লিনিক্যাল স্থূলতা। তবে এসব হিসাব ওলটপালট হয়ে যেতে পারে খেলোয়াড়, নারী ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্ষেত্রে। যাদের বিএমআই ৩৫ প্লাস তাদের বলা হয় অসুস্থ স্থূল।
No comments: