বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সেই সঙ্গে নিজ দেশের অর্থনীতির করুণ দশার জন্য আক্ষেপ করেছেন তিনি। এখন বাংলাদেশের দিকে তাকালে লজ্জা লাগে বলেও মন্তব্য করেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার (২৪ এপ্রিল) অর্থনীতি বিষয়ক এক আলোচনায় শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশকে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ সম্বোধন করে বলেন, ‘একসময় যাদের পাকিস্তানের বোঝা মনে করা হতো, সেই দেশটি আজ শিল্পোন্নয়নে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
পাকিস্তানের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার সময় বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন,
আমরা যখন বেশ ছোট ছিলাম, তখন আমাদের বলা হতো যে এটি (বাংলাদেশ) আমাদের কাঁধের বোঝা। আজ আপনারা সবাই জানেন সেই বোঝা (অর্থনৈতিক উন্নয়নে) কোথায় পৌঁছে গেছে।
শাহবাজ আরও বলেন,
আমরা যখন তাদের (বাংলাদেশ) দিকে তাকাই, তখন লজ্জাবোধ করি।
কয়েকবছর ধরেই একটানা অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি মুদ্রার মান একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। আর এর সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক সংকট। এই জোড়া সংকটে বেহাল দশা পাকিস্তানের।
আরও পড়ুন: রাইসির সফর / ইরান-পাকিস্তান চুক্তির ফলে নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
বর্তমানে দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ৮০০ কোটি ডলার, যা দিয়ে মাত্র দুই মাসের চাহিদা মেটানোর মতো পণ্যসামগ্রী আমদানি করা সম্ভব। অর্থ সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ধরনা দিচ্ছে দেশটির সরকার।
অর্থনীতির উন্নতির উপায় খুঁজতে গত বুধবার পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচির সিন্ধু সিএম হাউজে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ।
ব্যবসায়ী নেতারা এ সময় অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলায় শেহবাজের সংকল্পের প্রশংসা করলেও, তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারের ফলে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
দেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে মনোনিবেশ করারও পরামর্শ দেয় করাচির ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। তারা পাক প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য আলোচনা শুরু করারও অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: রাইসির সফর / ইসরাইলের বিরুদ্ধে কি এক হচ্ছে ইরান ও পাকিস্তান?
শেহবাজ শরিফকে উদ্দেশ করে পাকিস্তানের আরিফ হাবিব গ্রুপের প্রধান আরিফ হাবিব বলেন,
আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর কয়েকটি দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেছেন, যেগুলো ভালো ফল দিয়েছে। আইএমএফ চুক্তিতে অগ্রগতি তাদের মধ্যে একটি।
এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘আমি আপনাকে আরও কয়েকটি হ্যান্ডশেক করার পরামর্শ দিই। তার মধ্যে একটি হলো- ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য, যা আমাদের অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে। দ্বিতীয়ত, আদিয়ালা জেলের একজন বাসিন্দার (পিটিআই নেতা ইমরান খান) সঙ্গে আপনারও মীমাংসায় আসা উচিত। আমি বিশ্বাস করি, আপনি এটি করতে পারবেন।’
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
